Homeএখন খবরখড়গপুরের আক্রান্ত আরপিএফ জওয়ানকে নিয়ে দুশ্চিন্তায় রেল,জবাব দেয়নি প্রশাসন

খড়গপুরের আক্রান্ত আরপিএফ জওয়ানকে নিয়ে দুশ্চিন্তায় রেল,জবাব দেয়নি প্রশাসন

নিজস্ব সংবাদদাতা: করোনা আক্রান্ত তবু জোটেনি কোভিড হাসপাতাল! রাখা হয়েছে সাদা মাটা হাসপাতালের আইসোলেশন ওয়ার্ডই। এখনও সেই আরপিএফ জওয়ানের তেমন কোনও বড় সমস্যা হয়নি কিন্তু যদি অবস্থার অবনতি হয় তবে কী হবে? জানা নেই রেলের। রেলের তরফে খড়গপুর মহকুমা ও পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা প্রশাসন, জেলা স্বাস্থ্য বিভাগকে চারটি চিঠি দেওয়া হয়েছে ওই জওয়ানকে কোথায় রাখা হবে জানতে চেয়ে কিন্তু জবাব মেলেনি একটারও, স্বাভাবিক ভাবেই উদ্বেগে রেল। প্রশ্নটা অবশ্য শুধুই উদ্বেগের নয়, আক্রান্ত জওয়ানের দিক থেকে দেখলে প্রশ্নটা মৌলিক অধিকার লঙ্ঘনেরও। একজন কোভিড-১৯ পজিটিভ রোগী কোভিড হাসপাতালের সুযোগ পাবেন না?

খড়গপুর রেল ডিভিশনের মোট ১১ জওয়ান আক্রান্ত যার মধ্যে ১ জন সুস্থ। ২ জন ভিন রাজ্যের কোভিড হাসপাতালে, ১ জন হাওড়া কোভিড হাসপাতালে। এই চারজন খড়গপুর ডিভিশনের অন্যান্য জায়গায় পোস্টিং ছিল। সরাসরি খড়গপুরে পোস্টিং ৬ আক্রান্ত জওয়ানকে রাজ্য সরিয়ে নিয়ে যায় পূর্ব মেদিনীপুরের কোভিড হাসপাতালে। এ অবধি ঠিকঠাক চলছিল কিন্তু গোল বাধল কোয়ারেন্টাইনে থাকা জওয়ানদের একজন নতুন করে আক্রান্ত হওয়ার পর। রাজ্য বলছে নতুন করে রেলের কাউকে তারা কোভিড হাসপাতালে নেবেনা। রাজ্যের যুক্তি রেলের নিজস্ব পরিকাঠামো রয়েছে, হাসপাতাল রয়েছে। অন্যদিকে ক্রমশ রাজ্যের নিজস্ব চাপ বাড়ছে কারন আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে।

অন্যদিকে রেল বলছে তার হাসপাতাল আছে কিন্তু সেটা তো কোভিড হাসপাতাল নয়। রাজ্য রেল কে কোভিড হাসপাতালের প্রস্তুতি নেওয়ার কথাও বলেনি, সে অনুমতিও রেলের নেই। খড়গপুর রেল হাসপাতালের আইসিইউ নেই, ভেন্টিলেশন নেই। এখন যদি ওই জওয়ানের অবস্থার অবনতি হয় তবে কী হবে? রেলের খড়গপুর ডিভিশনাল ম্যানেজার মনোরঞ্জন প্রধান বলছেন, ”আমরা জেলা ও মহকুমা প্রশাসনের চারজন শীর্ষ আধিকারিককে চিঠি দিয়েছি বিষয়টি জানতে চেয়ে। স্বাস্থ্য ব্যবস্থা রাজ্যের বিষয়। তাঁদেরকেই তো জানাতে হবে আমরা কি করব? কিন্ত জবাব মেলেনি।”

রেল চিঠি দিয়েছে এমনটা সত্যি বলেই জানা গেছে উক্ত প্রশাসন গুলির তরফে কিন্তু বিষয়টি নিয়ে কেউ মুখ খুলতে চাননি। শুধু জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক গিরিশ চন্দ্র বেরা জানিয়েছেন, ”চিঠি পেয়েছি তা রাজ্যে পাঠিয়েও দিয়েছি। এটা সরাসরি রাজ্য স্তরের বিষয়। সেখান থেকে যেমন নির্দেশ আসবে তেমনই করা হবে।”
যদিও সমস্যাটা ঠিক কোন জায়গাতে এ ব্যাপারে কেউ কিছু বলতে চাইছেনা। অবশ্য অনুমান করতে খুব একটা কষ্ট হয়না কারন রেলের একাধিক জওয়ান কোভিড আক্রান্ত হওয়ার পেছনে রেল প্রশাসনের অপরিনামদর্শীতাকে দায়ী করে ক্ষোভে ফেটে পড়েছিল রাজ্য যার মনোভাবের প্রকাশ ঘটেছিল খড়গপুর বিধায়ক প্রদীপ সরকারের গলায়। প্রদীপ বলেছিলেন, রেলের জন্য বিপদের মুখে খড়গপুর শহর।

এমনকি নতুন করে এই জওয়ান আক্রান্ত হওয়ার পর রেল হাসপাতাল চত্বরের রাস্তাগুলি ব্যারিকেড করা শুরু করে পুলিশ। যা রেলের তীব্র আপত্তিতে প্রত্যাহার করে নেওয়া হয়। ফলে রেল ও রাজ্যের ঠান্ডা লড়াই টের পাওয়া যাচ্ছিল কিন্ত তার মাশুল কি একজন আক্রান্ত দেবেন?
এরপরই দ্বিতীয় যে প্রশ্নটা উঠে যাচ্ছে তা হল, খড়গপুর শহর ও সংলগ্ন এলাকায় প্রচুর পরিমানে রেল কর্মী বসবাস করেন। তাদের কেউ যদি আক্রান্ত হয় তার কি হবে? রাজ্য সরকার তাদের দায় এভাবেই ঝেড়ে ফেলবে? রেলে চাকরি করে বলে তাদের প্রতি রাজ্যের কোনও দায়বদ্ধতা থাকবেনা! তাহলে কি রেলকর্মীরা শুধু ভোটের সময়ই রাজ্যের নাগরিক?

RELATED ARTICLES

Most Popular