নিজস্ব সংবাদদাতা: বয়স পেরুতে গেল চাকরির কিন্তু চাকরি কই?ভাতের খালার প্রতীক হিসেবে একটা সস্তা স্টিলের থালা কেনাই যেত কিন্তু ওই থালা কিনে বিক্ষোভ দেখানোটাও আজ তাঁদের কাছে বিলাসিতা। তাই থার্মোকলের থালা নিয়েই বিক্ষোভে সামিল হলেন টেট উত্তীর্ণ প্রাথমিক বিদ্যালয়ের কর্মপ্রাথীরা। এই অভিনব বিক্ষোভের স্বাক্ষী রইলেন মেদিনীপুর বাসী। বৃহস্পতিবার ফের কয়েকশ শিক্ষিত বেকার যুবক যুবতীর বিক্ষোভে কাঁপল পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা শাসকের দপ্তর। নিয়োগের দাবীতে তুমুল বিক্ষোভ।
কেউ বলছেন, “দিদি তুমি মায়ের মতো,” কেউ বলছেন, “পিসি। তবে কেনো শুধু আমাদের প্রতি বঞ্চনা। ঘটি বাটি, জমি বিক্রি করে চাকুরির আশায় ডি এড করেছি কয়েক লক্ষ টাকা খরচ করে।” নিষ্ফল হতাশা, ক্রোধ অব্যক্ত যন্ত্রনা আছড়ে পড়ল মেধা পরীক্ষায় উত্তীর্ণ করেও গত চার বছর ধরে নিয়োগপত্র না পাওয়া প্রার্থীদের প্রতিবাদে। কেন তাঁদের বঞ্চনা করার হচ্ছে তার প্রতিকার চেয়ে পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা শাসক দপ্তরের মূল গেট দখল করে বিক্ষোভে সামিল হলেন এমন পদ প্রার্থীরা। সংখ্যাটা বারোশ মতো এমনও দাবী বিক্ষোভকারীদের।
২০১৬ সালের প্রাইমারি টেট পরীক্ষায় উত্তীর্ণ এবং ডিএলএড প্রশিক্ষণপ্রাপ্তরা অবিলম্বে নিয়োগের দাবি জানিয়ে এমন কর্মসূচীতে পথে নামলেন। “প্রাথমিক টেট উত্তীর্ণ প্রশিক্ষিত ঐক্য মঞ্চ” এর পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা শাখার পক্ষ থেকে বৃহস্পতিবার মেদিনীপুর শহর জুড়ে একটি বিশাল মিছিল করা হয়। এই মিছিল স্লোগান দিতে দিতে শহর প্রদক্ষিণ করে। “দুঃখ কষ্টে কাটছে দিন, আমাদের চাকরি দিন” কিংবা “দিদি তুমি মায়ের মতো, আমরা আছি বারো শতো” এরকমই স্লোগান মুহুর্মুহু আছড়ে পড়তে থাকে। মিছিল শেষে তারা জেলাশাসকের দপ্তরে সামনে, জমায়েত হয় এবং তাদের কয়েকজন প্রতিনিধি জেলা শাসকের কাছে স্মারকলিপি জমা দেয়।
এঁদের দাবি ২০১৬ সালে প্রাথমিকের টেট পরীক্ষা হয়েছিল। বলা হয়েছিলো সমস্ত শূন্যপদে প্রশিক্ষণ প্রাপ্তদের এমনদের নিয়োগ করা হবে ৪০,০০০ শূন্যপদ থাকলেও তার সবটাই নিয়োগ করা হয়নি। কতজনকে নিয়োগ করা হয়েছে তার হিসাবও অন্ধকারে। প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত এমনরা যারা উত্তীর্ণ হয়েছিলেন তারা নিজেরাই যোগাযোগ করে সেই সংখ্যা বারোশ মতো এখনো নিয়োগ পত্র পায়নি।
এমন টেট উত্তীর্ণ এবং ডিএলএড ট্রেনিং প্রাপ্তরা নিয়োগের দাবি তুলে রাজপথে নামলেন। বললেন, য়ে অজুহাত না দিয়ে সরকার অবিলম্বে তাদের নিয়োগ করুক। বিক্ষোভকারীরাই জানালেন, “আমাদের দুরবস্থা আজ কী পরিমাণ তা বোঝাতেই আমরা থার্মোকলের থালা নিয়ে রাস্তায় নেমেছি। আমাদের স্বপ্ন ভেঙে খান খান হয়ে যাচ্ছে। আমরা হাত জড়ো করছি, আমাদের বাঁচান।”