অশ্লেষা চৌধুরী: মুখ্যমন্ত্রী মাস্টারমশাইদের নালায় ফেলে দিয়েছেন। সকাল সকাল মমতাকে উদ্দেশ্য করে কটাক্ষ ছুঁড়ে দিলেন বঙ্গ বিজেপি সভাপতি দিলীপ ঘোষ। তিনি বলেন, কত সমস্যায় পড়লে মানুষ দুর্গন্ধযুক্ত নালায় নামে। গোটা রাজ্যেই শিক্ষকদের এই দুরবস্থা।
শুধু এদিনেই নয়, মঙ্গলবার একই বিষয় নিয়ে রাজ্য সরকারকে তোপ দাগেন দিলীপ ঘোষ। তিন বলেন, বাংলায় শিক্ষকদের দুর্দশা, মাসের পর মাস ধর্না দিচ্ছেন, দিদিমণি প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন, রাখতে পারেননি, বিশ্বাসভঙ্গের জন্য এধরনের কাজ হচ্ছে।
আসলে দীর্ঘ দিন ধরে অনুনয়-বিননয় করেও কোনও সুরাহা না মেলায় অবশেষ মঙ্গলবার দাবী আদায়ের জন্য কিছুটা ভিন্ন পথ বেছে নেন কয়েকজন শিক্ষামিত্র এবং বেসরকারি মাদ্রাসার শিক্ষক। এদিন সকালে তাঁরা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বাড়ীর পিছনের দিকে আদিগঙ্গায় নেমে পড়ে বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন। তাঁদের দাবী, মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করতে না দিলে কোনওমতেই আদিগঙ্গা থেকে উঠবেন না।
এদিন সকালে আচমকাই এক মহিলা সহ পাঁচ শিক্ষামিত্র এবং মাদ্রাসা শিক্ষক মুখ্যমন্ত্রীর বাড়ীর পিছনের দিকে আদিগঙ্গায় নেমে পড়েন। মহিলা শিক্ষামিত্র দাবী করেন, দীর্ঘদিন তাঁদের বকেয়া ভাতা দেওয়া হয়নি। বাড়ানো হয়নি ভাতা। অপরদিকে এক বেসরকারি মাদ্রাসার শিক্ষক জানান, ২০১১ সালে ক্ষমতায় আসার পর মুখ্যমন্ত্রী আশ্বাস দিয়েছিলেন যে সংখ্যালঘুদের মধ্যে শিক্ষার প্রসারে রাজ্যের ১০,০০০ মাদ্রাসাকে অনুমোদন দেওয়া হবে। কিন্তু প্রকৃতপক্ষে খুব কম সংখ্যক মাদ্রাসা অনুমোদন পেয়েছে। তা নিয়ে ২০১৩ সাল থেকে সরব হয়েছেন অনুমোদনহীন মাদ্রাসার শিক্ষক এবং শিক্ষাকর্মীরা। অনশনও হয়েছে। তবে প্রতিশ্রুতি ছাড়া কিছুই মেলেনি। এমনকী মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গেও দেখা করার চেষ্টা করা হলেও কোনওবারই সেই অনুমতি দেয়নি পুলিশ। তাই বাধ্য হয়ে এই পথ বেছে নিয়েছেন বলে দাবী করেছেন ওই শিক্ষক। সঙ্গে তিনি বলেন, ‘হয় মরব, নাহলে দিদির (মমতা) সঙ্গে কথা বলব।’
এদিকে ভিভিআইপি জোনে পাঁচজন শিক্ষক-শিক্ষিকার এমন মেজাজ দেখে কার্যত হতবাক হয়ে যান পুলিশকর্মীরা। কিছুক্ষণের মধ্যেই ঘটনাস্থলে পৌঁছন পুলিশ কমিশনার। পুলিশ ও বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীর সদস্যরা জল থেকে তোলেন পাঁচ শিক্ষক-শিক্ষিকাকে। আবার মুখ্যমন্ত্রীর বাড়ীর মতো কড়া নিরাপত্তা বলয়ের মধ্যে কীভাবে পুলিশের চোখ এড়িয়ে ওই পাঁচজন চলে এলেন, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে।
অপরদিকে, আসন্ন নির্বাচনে, সরকারকে মাত দিতে শিক্ষকদের এই দাবীকেই হাতিয়ার করেই রাজ্যসরকারকে নিশানা করেন বঙ্গ বিজেপি সভাপতি।