নিজস্ব সংবাদদাতা: এক তরুণ শিক্ষকের অস্বাভাবিক মৃত্যুকে ঘিরে চাঞ্চল্য ছড়ালো পশ্চিম মেদিনীপুরের দাঁতন থানার অন্তর্গত জেনকাপুর গ্রামে। গোটা ঘটনার পেছনে স্ত্রীর অবৈধ প্রণয়ই রয়েছে বলে অভিযোগ গ্রামবাসীদের। ক্ষুব্ধ গ্রামবাসীরা ওই শিক্ষকের স্ত্রী এবং গ্রামেরই এক যুবককে ধরে পুলিশের হাতে তুলে দেন। যদিও বিষয়টি নিয়ে কোনও লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়নি।
পুলিশ জানিয়েছে মৃত শিক্ষকের নাম সূর্যকান্ত বিশ্বাস। তাঁর প্রকৃত বাড়ি উত্তর ২৪ পরগনা জেলার বনগাঁ থানা এলাকায়। শিক্ষকের এক ভাই বাঁকুড়া জেলার ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেট বলে জানা গেছে। সূর্যকান্ত বিশ্বাস এসএসসি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে জেনকাপুর উচ্চমাধ্যমিক বিদ্যালয়ের বাংলা শিক্ষক হিসেবে কাজ করে আসছেন বিগত বেশ কয়েকবছর ধরে। ৩৪বছর বয়সী ওই শিক্ষক স্ত্রী এবং সাত বছরের শিশুকন্যাকে নিয়ে জেনকাপুরে একটি বাড়ি ভাড়া নিয়ে থাকতেন।
রবিবার রাতের খাবার খেয়ে ওই শিক্ষক ঘুমিয়ে ছিলেন স্ত্রী এবং কন্যার সাথেই। পরে কখন উঠে গিয়ে পাশের ঘরে গলায় গামছা দিয়ে সিলিং থেকে ঝুলে গিয়ে আত্মহত্যা করেন তাঁরা জানতে পারেননি এমনটাই দাবি স্ত্রীর। সকালে উঠে এই ঘটনা লক্ষ্য করেই শিক্ষকের স্ত্রী চিৎকার করে লোকজন ডাকেন। প্রতিবেশীরা ছুটে আসেন। তাঁকে নামিয়ে আনেন কিন্তু স্থানীয় চিকিৎসক মৃত বলে ঘোষণা করেন। এরপরই পুলিশ মৃতদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য দেহ খড়গপুর মহকুমা হাসপাতালে পাঠায়।
এরপরই ক্ষুব্ধ গ্রামবাসীরা ওই শিক্ষকের স্ত্রী ও গ্রামের এক যুবককে আটক করেন। তাঁদের দাবি ওই যুবকের সঙ্গে শিক্ষকের স্ত্রীর বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্ক ছিল এবং যুবকটি প্রায়ই শিক্ষকের বাড়িতে যেত। এই নিয়ে দীর্ঘদিন ধরেই গ্রামবাসীদের মধ্যে কানাঘুষো চলত যা একসময় শিক্ষকও জানতে পারেন। আর তারপরই মানসিক অবসাদ এবং সামাজিক লজ্জায় শিক্ষক আত্মহত্যা করেছেন।
গ্রামবাসীদের এক অংশের আবার দাবি খুন করা হয়েছে ওই শিক্ষককে। যদিও প্রাথমিকভাবে পুলিশের অনুমান ঘটনাটি আত্মহত্যার। জনতার রোষ থেকে বাঁচাতে দুজনকেই থানায় নিয়ে যায় পুলিশ। পুলিশ জানিয়েছে আপতত অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা রুজু করা হয়েছে। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট হাতে আসার পরই পরবর্তী পদক্ষেপ গ্রহন করা হবে। সোমবার দেহ ময়নাতদন্তের জন্য খড়গপুর মহকুমা হাসপাতালে পৌঁছালে শিক্ষকের পরিবারের লোকেরা সেখানে পৌঁছান। পুলিশি প্রক্রিয়া সম্পন্ন হওয়ার পর দেহ বনগাঁ নিয়ে যাওয়া হবে বলেই জানা গিয়েছে।