চরণ ধরিতে দিও গো আমায় , দাদার কীর্তির সেই মুহুর্ত |
নিজস্ব সংবাদদাতা: শোক স্তব্ধ টলিউড, চলে গেলেন বাঙালির জনপ্রিয় অভিনেতা তাপস পাল। ১৯৮০ সালে কিংবদন্তী চলচ্চিত্র পরিচালক তরুন মজুমদারের হাত ধরে ‘দাদার কীর্তি’ সিনেমার মধ্য দিয়ে আত্মপ্রকাশ করেছিলেন তাপস পাল। জুহুরী জহর চেনে, যেমনটা চিনে ছিলেন তরুন মজুমদার। তাই দাদার কীর্তির পর আর ফিরে তাকাতে হয়নি তাঁকে। এরপর একে একে ‘ ভালবাসা, ভালবাসা’, ‘পথ ভোলা’ মায়া মমতা’, ‘সুরের ভুবনে’ ‘সমাপ্তি’ , ‘চোখের আলো’ ,’অন্তরঙ্গ’ সাহেব’ প্রভৃতি বিখ্যাত বাংলা সিনেমায় তিনি মন কেড়ে নিলেন দর্শকের। বোকা বোকা চেহারার সহজ সরল নায়ক হয়ে রয়ে গেলেন বাঙালির বুকে। দাদার কীর্তির পর তাপস পালের জীবনে দ্বিতীয় উলম্ফ্ন ৭বছর পর অঞ্জন চৌধুরীর ‘গুরু দক্ষিনা।’ কালী বন্দোপাধ্যায়ের সঙ্গে তাঁর যুগল বন্দি রীতিমতো কাঁদিয়েছিল বাংলার দর্শককে। দাদার কীর্তি প্রকাশের একবছরের মাথায় পেলেন ১৯৮১ সালে ফিল্ম ফেয়ার অ্যাওয়ার্ড। এবার সিনেমার নাম ‘সাহেব।’ পরিচালক অনিল গাঙ্গুলী। এখানে এক সহজ সরল চরিত্র, নিজের ফুটবল কেরিয়ার বিসর্জন দিয়ে যে তাঁর বোনের বিয়ের জন্য বিপর্যস্ত বাবার হাতে টাকা তুলে দিয়েছিল কিডনি বিক্রি করে। সেদিন বাংলার ঘরে ঘরে একটা ‘সাহেব’ চেয়েছিল বাংলা চলচ্চিত্রের দর্শকরা। টলিউডের মত বলিউডের কিছু ছবিতেও কাজ করছেন তাপস পাল। ‘অবোধ’ ছবিতে মাধুরী দীক্ষিতের বিপরীতে অভিনয় করেছেন তিনি।< মঙ্গলবার ভোরে মাত্র ৬১বছর বয়সে জীবনাবসান হয় এই তারকার ।মুম্বইয়ের একটি বেসরকারি হাসপাতালে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি। ভুগছিলেন স্নায়ু জনিত সমস্যায়।
(adsbygoogle = window.adsbygoogle || []).push({});
তাঁর জীবনের দ্বিতীয় ইনিংস শুরু হয়েছিল ২০০৯ য়ে। দক্ষিনী রাজনীতির কায়দায় তৃনমূল সুপ্রীমো মমতা ব্যানার্জী জনপ্রিয় তারকাদের রাজনীতির অঙ্গনে নিয়ে আশার কৌশল নিলেন। ওই বছর দেশের লোকসভা তথা সাধারণ নির্বাচনে তৃণমূল কংগ্রেস থেকে টিকিট নিয়ে নির্বাচিত হয়ে কৃষ্ণনগর থেকে সাংসদ হন তিনি। তবে ২০১৬ সালের শেষের দিকে রোজ ভ্যালি নামে একটি চীট ফান্ডের সাথে যুক্ত থাকার অভিযোগে পুলিশ তাকে গ্রেফতার করে।
(adsbygoogle = window.adsbygoogle || []).push({});
দীর্ঘদিন ভুবনেশ্বরের জেলবন্দী অবস্থায় কাটালেন। শুধুই শারীরিক লাঞ্ছনা নয় মানসিক কলঙ্কও ছুঁয়ে গেল তাঁকে। যেমনটাই ছুঁয়ে গেছিল একটি আল পটকা মন্তব্য। রাজনীতি নির্বিশেষে এসব ঘটনায় বাঙালি নিশ্চিত ভাবেই আহত হয়েছে। প্রিয় নায়ককে কে-ই বা এভাবে দেখতে চায়! যদিও মঙ্গলবার সবই অতীত হয়ে গেল। স্ত্রী নন্দিনী আর একমাত্র কন্যাকে রেখে প্রয়াত হলেন তিনি।
শেষ লড়াই শুরু হয়েছিল ১ফেব্রুয়ারি, মুম্বাইয়ের বান্দ্রার একটি বেসরকারি হাসপাতালে। ৬ফেব্রুয়ারি ভেন্টিলেশনে চলে যান তিনি। আর ১৮ই ফেব্রুয়ারি সব শেষ। অজস্র ‘কীর্তি’ রেখে চলে গেলেন ‘ দাদার কীর্তির’ নায়ক।