নিজস্ব সংবাদদাতা: এক্কেবারে অখ্যাত এক গন্ডগ্রাম তামিলনাড়ুর থুলাসেন্ড্রাপুরম আর পুরো নাম বলতে গেলে বলতে হবে পাইঙ্গানাড়ু থুলাসেন্দ্রিপুরাম( Painganadu Thulasendrapuram)। জেলার নাম থিরুভারুর (Thiruvarur)। সেই গ্রামের রাস্তার মোড় থেকে অলিতে গলিতে ছেয়ে গেছে প্রমান সাইজের কাটআউট। অথচ কোনও ভোট নেই এখন! একেবারেই বাংলার গ্রামের ধাঁচে খড়ের চাল দেওয়া বাড়ি গুলির নিকানো উঠোনে রঙ বেরঙের আল্পনা বা রঙ্গোলি আঁকার ধুম ছুটেছে। গ্রামের মন্দির প্রাঙ্গনে বসেছে রোশনচৌকি, নহবত। ফটছে বাজি,পটকা, উড়ছে হাওয়াই কিংবা ফানুস। অথচ দেওয়ালি আরও কয়েকটা দিন দেরি। কারন একটাই এখান থেকে ১৪ হাজার কিলোমিটার দুরে আমেরিকার সানফ্রান্সিকো শহরের বাসিন্দা এই গ্রামেরই মেয়ে কমলা হারিস আমেরিকার ভাইস প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হয়েছেন! গ্রামের মোড়ে মোড়ে তাই তাঁরই কাট আউট। উঠোনের রঙ বেরঙের আলপনার সাথে তাই লেখা বানাক্কাম আমেরিকা বা ধন্যবাদ আমেরিকা।
যদিও ঠিক কমলা নয় মার্কিন মসনদে ভাইস প্রেসিডেন্ট হিসেবে নির্বাচিত হওয়া ভারতীয় বংশোদ্ভুত কমলা হ্যারিসের পূর্বপুরুষ থাকতেন এই গ্রামেই। তাই কমলার বিজয়ে যেন দীপাবলি শুরু হয়েছে গ্রামজুড়ে। রঙ্গোলি দিয়ে গ্রামেরই বাড়ির দাওয়ায় লেখা হয়েছে, আমাদের গ্রামের গর্ব কমলার আমেরিকা বিজয়ে আমরা গর্বিত। এই গ্রাম থেকেই কয়েক দশক আগে মার্কিন মুলুকে পাড়ি দেন কমলার দাদু। কোলাম নামক এক লোকশিল্পে কমলাকে শুভেচ্ছা জানাচ্ছেন গ্রামীণ মানুষ। রাস্তার ধারেও তৈরি হয়েছে কমলার কাটআউট। গ্রামের মন্দিরে কমলার মঙ্গলকামনায় পুজোও হয়েছে।
সানফ্রান্সিসকোর প্রথম মহিলা ও অশেতাঙ্গ ডিস্ট্রিক্ট অ্যাটর্নি তিনি। প্রথম দক্ষিণ এশিয় আমেরিকান সেনেটারও তিনি। কিন্তু শনিবারের ভোটের ফলে এসব পরিচয়ই ম্লান হয়ে যাচ্ছে। মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্ট তিনি। তাঁকে নিয়েই চর্চা পথেঘাটে। সানফ্রান্সিসকোর প্রথম মহিলা ও অশেতাঙ্গ ডিস্ট্রিক্ট অ্যাটর্নি তিনি। প্রথম দক্ষিণ এশিয় আমেরিকান সেনেটারও তিনি। কিন্তু শনিবারের ভোটের ফলে এসব পরিচয়ই ম্লান হয়ে যাচ্ছে। মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্ট তিনি। তাঁকে নিয়েই চর্চা পথেঘাটে। তাই তাঁরই স্মৃতিতে কাতর তাঁর পূর্বপুরুষের গ্রাম।
গ্রামের প্রধান অরুলমোঝি সুধাকর জানিয়েছেন, ‘ যে মন্দিরে আমরা কমলার জয়ের জন্য প্রার্থনা করেছিলাম এবং যেখানে এখন তাঁর মঙ্গলের জন্য প্রার্থনা করছি সেটি কমলার মামা দাদু পি ভি গোপালনের তৈরি করা। পি ভি গোপালন একজন আইসিএস আধিকারিক যিনি চাকুরি সূত্রে ১৯৩০ সালে সপরিবারে গ্রাম ছেড়ে ছিলেন। এরপর কমলার জন্ম হয় ক্যালিফোর্নিয়াতে। কিন্তু আমাদের সঙ্গে তাঁদের অটুট বন্ধন ছিল হৃদয়ের। আর সেই কারণে আমরা উৎসবে মেতেছি। আমরা বিশ্বাস করি কমলা একদিন তাঁর মামাবাড়ি দেখতে আসবে।” কমলা জেতার পরই রাতারাতি বিখ্যাত হয়েছে এই গ্রাম। স্থানীয়, জাতীয় এমনকি আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমও ঝাঁপিয়ে পড়েছে গ্রামে।