অশ্লেষা চৌধুরী: শাড়িতেই নারী-প্রায় দিনই এই কথাটা সকলেই শুনে থাকবেন। অবশ্য এটা যে শুধু কথার কথা নয়, সেটিও অস্বীকার করার দায় নেই। শাড়ি পড়লে নারীর সৌন্দর্য যেন আরও খুলে যায়। বিভিন্ন রকমের নজরকাড়া শাড়ি এখন বাজার জুড়ে। আর যারা শাড়ি পড়তে ভালোবাসেন, তাঁদের আলমারি তো অনেক রকম শাড়িতে পূর্ণ থাকেই। তবে সেই সকল শাড়ি যদি যত্নে না রাখা হয়, তাহলে খুব তাড়াতাড়ি সেগুলো নষ্ট হয়ে যেতে পারে। তাই শাড়ির যত্নে কিছু কিছু বিষয়ে বিশেষ খেয়াল রাখতে হয়, আসুন জেনে নিই, শাড়ির যত্নের খুঁটিনাটি।
আমাদের প্রত্যেকের আলমারিতে নিত্য ব্যবহারের শাড়ি যেমন থাকে, তেমন জামদানি-মসলিনের মতো শাড়িগুলোও থাকে। এক এক ধরনের শাড়ির যত্ন এক এক রকম। জেনে নিন দীর্ঘদিন শাড়ি ভালো রাখতে চাইলে কোন শাড়ির যত্ন কীভাবে নেবেন-
তাঁত, কটন ও লিনেনের শাড়ি প্রথমবার ধোয়ার আগে খনিজ লবণ মিশ্রিত জলে ১০ মিনিট ভিজিয়ে রাখুন। এতে রঙ দীর্ঘস্থায়ী হবে।
লিনেন, জর্জেট বা শিফনের শাড়ি সফট ডিটারজেন্টে শ্যাম্পু মিশিয়ে হাতে ধোবেন। ওয়াশিং মেশিনে ডেলিকেট মোডেও কাচতে পারেন। তবে নিংড়ে জল ঝরাবেন না। রোদে না দিয়ে ছায়ায় শুকোতে দিন এই ধরনের শাড়ি।
জামদানি শাড়ি ড্রাই ওয়াশ করান। অনেকদিন ব্যবহারে যদি শাড়ি নরম হয়ে যায় তাহলে পলিশ করিয়ে নিন।
সিল্কের শাড়ির ঔজ্জ্বল্য ফেরাতে পাঁচ লিটার জলে পাঁচ চামচ সাদা ভিনেগার মিশিয়ে নিন। এই দ্রবণে পাঁচ মিনিট শাড়ি ভিজিয়ে রাখুন। তারপর জল দিয়ে হালকা হাতে ধুয়ে জল ঝরিয়ে নিন। তোয়ালেতে শাড়িটা চেপে জল শুষে ছায়ায় মেলে দিন।
সুতির শাড়ি হালকা মাড় দিয়ে ইস্ত্রি করলে ভালো থাকবে।
এছাড়াও যা যা করতে পারেন-
জামদানি শাড়ি একই ভাঁজে দীর্ঘদিন রাখবেন না। এতে ভাঁজের অংশ ফেটে যেতে পারে। কাপড় পেঁচানোর রোলারে পেঁচিয়ে রাখুন জামদানি শাড়ি। মাঝে মাঝে রোদে দেবেন, শাড়ি ভালো থাকবে।
টাঙ্গাইলের সুতির শাড়ি আয়তাকারে ছোট ছোট ভাঁজ করে রাখতে পারেন। মাঝেমধ্যে উপরের শাড়ি নিচে এবং নিচের শাড়ি উপরে— এভাবে উল্টেপাল্টে দেবেন।
নেট, সিল্ক আর জরির কাজের শাড়ি আলমারিতে ঠেসে রাখবেন না অথবা হ্যাঙারে ঝোলাবেন না। তাতে জরির কাজ, এমব্রয়ডারি নষ্ট হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে। প্লাস্টিকের ব্যাগে শাড়ি রাখলেও সূক্ষ্ম কাজগুলো কালচে হয়ে যাবে। আলমারিতে নরম কাপড়ের ঢেকে রাখুন এ ধরনের শাড়ি। বেনারসি, তসর, কাঞ্জিভরম ধরনের সিল্ক শাড়িও এভাবেই রাখবেন।
সুতি ও লিনেন শাড়ি হালকা ভাঁজ করে কাঠের হ্যাঙারে ঝুলিয়ে রাখুন।
হ্যাঙারে দুটো শাড়ি একসাথে রাখবেন না।
শাড়ির উপর নরম সুতির কাপড় রেখে মাঝারি তাপে ইস্ত্রি করুন এবং অবশ্যই উল্টো দিক থেকে।
শাড়ির উপর সরাসরি সুগন্ধি স্প্রে করবেন না।
ছত্রাক থেকে বাঁচতে আলমারিতে সিলিকা জেলের প্যাকেট রাখুন।
আর মনে রাখবেন শিফন ও জর্জেট শাড়িতে সেফটিপিন আটকাবেন না এবং শাড়ি ধোয়ার সময় সবসময় ঠান্ডা জল ব্যবহার করবেন।
মেনে চলুন এই কিছু সাধারণ নিয়ম, যত্নে থাকুক আপনার প্রিয় শাড়ি।