নিজস্ব সংবাদদাতা: একদিকে কেন্দ্র সরকার বলছে করোনার তৃতীয় ঢেউয়ের বিরুদ্ধে আপোষহীন লড়াই লড়তে হবে। অন্যদিকে উত্তরপ্রদেশ সরকার ধর্মীয় যাত্রার অনুমতি দিয়ে সংক্রমনের দরজা হাট করে খুলে দিচ্ছে। দুটোই সরকার অথচ দুটো আলাদা নীতি শুধু তাই নয়, একই দল পরিচালিত দুই সরকারের দুই নীতি নিয়ে এবার স্বতঃপ্রণোদিত মামলা করল স্বয়ং সর্বোচ্চ আদালত। উল্লেখ্য কুম্ভ মেলা নিয়ে ব্যাপক সমালোচনার মুখে এবছরের কানোয়ার যাত্রা বাতিল করেছে উত্তরাখণ্ড সরকার। অথচ উত্তরপ্রদেশ সরকার কানোয়ার যাত্রা স্থগিত তো রাখেইনি উল্টে কোভিড বিধি মেনে কানোয়ার যাত্রার অনুমতি দিয়েছে যোগী প্রশাসন। আর এরপরই বুধবার সুপ্রিম কোর্ট নোটিস পাঠাল উত্তরপ্রদেশ সরকারকে। নোটিস পাঠানো হয়েছে কেন্দ্র ও উত্তরাখণ্ড সরকারকেও। আগামী শুক্রবার এই মামলার পরবর্তী শুনানি অনুষ্ঠিত হবে।
বুধবার প্রথম মামলাটি উঠেছে আরএফ নরিম্যান ও বিআর গাভাইয়ের ডিভিশন বেঞ্চে। সেই মামলা প্রসঙ্গে শীর্ষ আদালতের বক্তব্য হল, দেশের প্রধানমন্ত্রী ও চিকিৎসক-বিশেষজ্ঞরা বারবার বড় জমায়েত থেকে দূরে থাকা ও সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার আরজি জানাচ্ছেন। ঠিক তখনই এমন এক ধর্মীয় আচার-অনুষ্ঠানকে সম্মতি দিচ্ছে যোগী সরকার। এই ধরনের সিদ্ধান্ত সাধারণ নাগরিকদের বিভ্রান্তিতে ফেলে দেবে।
শীর্ষ আদালতের আরএফ নরিম্যান ও বিআর গাভাইয়ের বেঞ্চ জানিয়েছে, ‘‘এব্যাপারে সংশ্লিষ্ট সরকারের মতামত জানতে চাই আমরা। ভারতের নাগরিকরা এতে বিভ্রান্ত হবেন। তাঁরা বুঝতেই পারছেন না কী হচ্ছে। এমন একটা সময়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হচ্ছে যখন তৃতীয় ঢেউয়ের আশঙ্কা প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী জানিয়ে দিয়েছেন, এই পরিস্থিতিতে কোনও রকম আপস করা চলবে না।’’
উল্লেখ্য আগামী ২৫ জুলাই শুরু কানোয়ার যাত্রা। দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে লাখো ভক্তরা বাঁকে করে জল নিয়ে উত্তরাখণ্ডের কানোয়ারে যান জল ঢালার জন্য। প্রতি বছর শ্রাবণ মাসে হরিদ্বার, গোমুখ, গঙ্গোত্রী থেকে গঙ্গাজল নেওয়াই কানোয়ার যাত্রার উদ্দেশ্য। এরপর সেই জল ভগবান শিবের মাথায় ঢালা হয়। তার আগেই আগামী শুক্রবারই এই প্রসঙ্গে উত্তরপ্রদেশ, উত্তরাখণ্ড ও কেন্দ্রীয় সরকারের বক্তব্য শুনতে চায় শীর্ষ আদালত। গত মঙ্গলবার দেরাদুনে এক বৈঠকের পরে উত্তরাখণ্ডের নতুন মুখ্যমন্ত্রী পুষ্কর সিং ধামি সিদ্ধান্ত নিয়েছেন এবারের কানোয়ার যাত্রা বাতিল করার। পুরো বিষয়টি নিয়ে এখন ফাঁপরে উত্তরপ্রদেশ সরকার। পরিস্থিতি সামাল দিতে জরুরি বৈঠকে বসেছে উত্তরপ্রদেশ সরকার।