Homeএখন খবর"বসন্তের কোকিল নই, শুধু ভোট চাইতে আসিনা, মূখ্যমন্ত্রী আমাকে তাড়াননি, আমিও ছাড়িনি"...

“বসন্তের কোকিল নই, শুধু ভোট চাইতে আসিনা, মূখ্যমন্ত্রী আমাকে তাড়াননি, আমিও ছাড়িনি” স্নায়ুর লড়াই জিইয়ে রাখলেন শুভেন্দু

নিজস্ব সংবাদদাতা: ২৪ঘন্টা আগে সুব্রত বক্সীর গলায় ভাইরাল হওয়া শুভেন্দু অধিকারীর প্রতি সেই উক্তি ‘আমরা ওকে তাড়িয়ে শহিদ হতে দেবনা।” ২৪ ঘন্টা পরে রামনগরের সভায় দাঁড়িয়ে শুভেন্দু অধিকারী বললেন, “মূখ্যমন্ত্রী আমাকে এখনও মন্ত্রী রেখেছেন, উনি তাড়াননি আর আমিও ছাড়িনি। আমি এখনও ওই দলের প্রাথমিক সদস্যপদে আছি। সক্রিয় সদস্য আছি আর তাই দলের মধ্যে থেকে, মন্ত্রী সভার ভেতরে থেকে দলের বিরুদ্ধে কথা বলা যায়না।”

এদিন ইন্দিরা গান্ধীর ছবিতে মালা দেওয়া প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ” সাংবাদিকরা ভাবছেন আমি ইন্দিরা গান্ধীর গলায় মালা দিলাম, দল পরিবর্তন করব। রাজনীতিতে মতান্তর আছে, বিভেদ আছে, বিভেদ থেকে বিচ্ছেদও আছে কিন্তু যতক্ষন একটা দলে আছি ততক্ষণ এই সব মঞ্চ থেকে দলের বিরুদ্ধে কথা বলা যায়না।”

শুভেন্দু তাঁর বচনভঙ্গিতে স্পষ্ট করে দিয়েছেন যে, বিচ্ছেদ থাকলেও যতক্ষন না বিচ্ছেদ হচ্ছে কিংবা মন্ত্রীসভায় তিনি থাকছেন ততক্ষণ তিনি যেমন চলছেন তেমনই চলবেন, সরাসরি বিরোধিতায় তিনি যাবেননা। যখন তিনি দল ছাড়েন অথবা দল তাঁকে তাড়াবে ততক্ষণ প্রত্যক্ষ বাক্যবান তিনি প্রয়োগ করবেননা। অন্যভাবে দেখতে গেলে তিনি চাইছেন প্রক্রিয়াটা তৃণমূলের দিক থেকেই শুরু হোক ঠিক যেমন উল্টোটা চাইছে তৃনমূল, ছাড়লে শুভেন্দুই দল ছাড়ুক। তাঁকে তাড়িয়ে শহিদ হতে দেবেনা রাজ্য নেতৃত্ব।

অথচ খোঁচা দিতেও ছাড়েননি শুভেন্দু। সমবায়ে তিনি যে নতুন নয় এটা বোঝাতে গিয়ে রাজনীতির প্রসঙ্গই এনেছেন তিনি। বলেছেন, “বসন্তের কোকিল নই আমি। শুধু ভোট চাই, ভোট দাও করতে অসিনা! করোনায় আছি, লকডাউনেও আছি আবার আমফানেও আছি।” প্রশ্ন উঠতে পারে একথা কাকে বলছেন তিনি? ২৪ ঘন্টা আগে ভাইরাল হওয়া সেই অডিও যেখানে সুব্রত বক্সীর গলা বলছিল, ‘ নন্দীগ্রামের আমফান হবে আর এলাকায় সবার প্রথম কে যাবে? সাধারণ মানুষ? আর তুমি (শুভেন্দু অধিকারী) মন্ত্রী হয়ে, গাড়ি নিয়ে ঘুরে বেড়াবে?” এরই জবাব কী দিলেন শুভেন্দু?তাঁর রাজনৈতিক কেরিয়ার কী ধ্বংসের চেষ্টা করা হয়েছিল বলে শুভেন্দু মনে করেন? না হলে তিনি কেন বললেন, ‘বেশ ছিলাম ঘরের ছেলে, উড়িয়ে নিয়ে ফেলা হল নন্দীগ্রামে। ভেবেছিলাম উড়েই যাব কিন্তু ততদিনে আমি নন্দীগ্রাম করে ভারি হয়ে গেছি।’ সাংসদ থেকে বিধায়ক পদে আনার ক্ষেদ কী এভাবেই ব্যক্ত করলেন শুভেন্দু!

রাজনৈতিক সমীক্ষকদের মতে, যদি কেউ এই ভেবে আশ্বস্ত হন যে আজকের সভার এই বক্তব্য শুভেন্দুর তৃণমূলেই থেকে যাওয়ার ইঙ্গিত তিনি হয়ত ভুল ভাবছেন কারন ‘যতক্ষন দলে আছি ‘, ‘রাজনীতিতে বিচ্ছেদ আছে’, কিংবা ‘ওরাও তাড়াননি,আমিও ছাড়িনি” ইত্যাদি শব্দবন্ধ তৃণমূলে শুভেন্দু থেকেও না থাকারই ইঙ্গিত। আসলে শুভেন্দু অধিকারী স্নায়ু চাপের খেলাটাকে আরও প্রলম্বিত করলেন। এখন দেখার এই চাপ দুই পক্ষের কোন পক্ষ কতক্ষন ধরে রাখতে পারে।

শুভেন্দু বলেছেন, ‘ দলে থেকে দলের বিরুদ্ধে বলবনা কারন নীতি আদর্শ আমি চলি।’ অর্থাৎ খুব পরিষ্কার যে দলে থাকার মত সম্ভবনা ক্রমশ ক্ষীণ হয়ে আসছে। এখন খালি হয়ত এটাই দেখার যে তিনি দল ছেড়ে, মন্ত্রীসভা ছেড়ে আগে বেরুবেন নাকি তৃণমূল তাঁকে আগে বহিস্কার করবে। তবে ঘটনা যাই হোকনা কেন তাঁর ‘আগামী দিনে’ জনতা যাতে তাঁর সঙ্গে থাকে তাই নিজেকে আরও একবার গামছা পরা,পান্তাভাত খাওয়া মানুষ হিসাবে পরিচয় দিয়ে গেছেন তিনি।

RELATED ARTICLES

Most Popular