নিজস্ব সংবাদদাতা: হবারই ছিল, হয়ে গেল, একটু সময় নিল এই যা! বৃহস্পতিবার, ২৬নভেম্বর এইচআরবিসির(HRBC)র চেয়ারম্যান পদ থেকে ইস্তফা দিয়েছিলেন মন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারী। দ্য খড়গপুর পোষ্ট বলেছিল, ২৭তারিখের মধ্যে সমস্ত পদ থেকেই অব্যাহতি নিতে পারেন তিনি। সেই ২৭ তারিখই দুটি দপ্তরের মন্ত্রিত্ব সহ সমস্ত পদ থেকে ইস্তফা দিলেন শুভেন্দু অধিকারী। ২৭ তারিখ সকালেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পাশাপাশি রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়কে পদত্যাগপত্র পাঠিয়ে দিয়েছেন শুভেন্দু৷
শুভেন্দু সকালেই পদত্যাগপত্র পাঠিয়েছেন কালীঘাটে, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বাড়িতে। কারন স্যানিটাইজেশনের জন্য শুক্রবার নবান্ন বন্ধ, তাই মুখ্যমন্ত্রীর কালীঘাটের বাড়িতে পদত্যাগপত্র পাঠিয়েছেন শুভেন্দু৷
রাজ্য পরিবহণ, সেচ এবং জলসম্পদ দফতরের মন্ত্রী ছিলেন শুভেন্দু৷ পাশাপাশি সেই একই চিঠি পদত্যাগ পত্র ই-মেলের মাধ্যমে রাজ্যপালের কাছে পাঠিয়ে দিয়েছেন শুভেন্দু৷ পদত্যাগপত্রে শুভেন্দু লিখেছেন, দীর্ঘদিন ধরে রাজ্যের এই দু’টি দফতরে মন্ত্রী হিসেবে কাজ করতে পেরে এবং মানুষের সেবা করতে পেরে তিনি খুশি৷ তার আগেই নিজের সরকারি নিরাপত্তা ছেড়ে দেওয়ার জন্যও শুভেন্দু চিঠি দেন বলে জানা গিয়েছে৷ দ্য খড়গপুর পোষ্টও বলেছিল শুভেন্দু রাজ্য সরকারের নিরাপত্তা ছাড়ছে ধরে নিয়েই বিজেপি তাঁর জন্য কেন্দ্রীয় পুলিশের একটি বিশেষ নিরাপত্তাবাহিনী তৈরি করছে যদি অবশ্য তিনি বিজেপিতে যান।
কয়েকদিন আগে রামনগরের সভায় শুভেন্দু বলেছিলেন, আমি এখনও মন্ত্রী আছি। মমতা ব্যানার্জী তাড়িয়ে দেননি আর আমিও ছাড়িনি। অনেকেই হৈহৈ করে বলেছিলেন, সব মিটে গেল! তৃনমূলেই থেকে যাচ্ছেন শুভেন্দু। একমাত্র দ্য খড়গপুর পোষ্ট বলেছিল, স্নায়ুর লড়াই লড়ছেন শুভেন্দু, প্রলম্বিত করছেন দলত্যাগ। দ্য খড়গপুর পোষ্ট সেদিন বলেছিল, দলে আছেন, মন্ত্রীত্বে আছেন বলেই তিনি মুখ খুলছেননা কারন তিনি স্পষ্ট করেই বলেছিলেন, ‘পদে থেকে এসব বলা যায়না, আমি নীতি আদর্শে বিশ্বাস করি।” কৌশলী শুভেন্দু আসলে যা বলেছিলেন তা হল, বলব তবে পদত্যাগ করার পর।
শুভেন্দু অধিকারীর পদত্যাগ প্রসঙ্গে কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী বলেছেন, “শুভেন্দুর পদত্যাগ তৃণমূলের অন্তর্জলি যাত্রা শুরু হয়ে গেল।” বলেছেন, “যে তৃণমূল এতদিন বিরোধী দল ভাঙানোর খেলায় মেতে ছিল সেই তৃণমূলের ভাঙন শুরু হল শুভেন্দুকে দিয়ে। এবার টুকরো টুকরো হয়ে যাবে।” তৃণমূলের অন্তর্জলি যাত্রা কিনা এখনো বলার সময় হয়ত আসেনি তবে ভাঙনের শুরু বলা যেতেই পারে। এবার শুভেন্দুর পথে হাঁটতে চলেছেন একাধিক নেতা, বিধায়ক, সাংসদ এবং মন্ত্রী।
দ্য খড়গপুর পোষ্ট বলেছিল লড়াইটা দুই যুবরাজের, শুভেন্দু অধিকারী বনাম অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় এত উদার নন যে মূখ্যমন্ত্রীত্বের দাবিদার তিনি ছেড়ে দেবেন আর শুভেন্দুও উপমূখ্যমন্ত্রী হয়ে থাকবেননা। তাই সমঝোতার কোনও ফর্মূলাই কাজ করবেনা। আর সে কারণেই শুভেন্দুর দলত্যাগ প্রশ্নে দ্য খড়গপুর পোষ্ট দ্বিধাহীন ছিল।
তবে রাজ্যের মন্ত্রী হিসেবে পদত্যাগ করলেও এখনই তিনি বিধায়ক পদ ছাড়ছেন না বলে খবর৷ পাশাপাশি তৃণমূলের সঙ্গে দলীয় স্তরেও তিনি সব সম্পর্ক সরকারি ভাবে ছাড়লেন কি না, তা এখনও স্পষ্ট নয়৷ তবে তৃণমূলের সঙ্গে শুভেন্দুর বিচ্ছেদ এখন সময়ের অপেক্ষা বলেই মনে করা হচ্ছে৷ তৃণমূলের তরফে শুভেন্দুর সঙ্গে আলোচনা চালাচ্ছিলেন সৌগত রায়। তিনি বলেছেন, ‘শুভেন্দুর সঙ্গে আবারও কথা বলব৷’ তবে আর কোনও কথার প্রয়োজন আছে কী?