নিজস্ব সংবাদদাতা: “নন্দীগ্রামে আমি দাঁড়ালে সরাসরি আর না দাঁড়ালে যিনি দাঁড়াবেন তাঁকে দিয়েই মমতা ব্যানার্জীকে হারাবো। আপনারা নিশ্চিত থাকুন।” খড়গপুর গ্রামীণ থানার চকগোবিন্দ গ্রামে বক্তব্য রাখতে গিয়ে বিজেপি কর্মী সমর্থকের এভাবেই উদীপ্ত করলেন বিজেপি নেতা শুভেন্দু অধিকারী।
বুধবার বিকালে এই নির্বাচনী সভায় নিজের দলীয় কর্মীদের আশ্বাস দিয়ে রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী বলেন, “নন্দীগ্রামে দল আমাকে প্রার্থী করুক বা অন্য কাউকে প্রার্থী করুক, নন্দীগ্রামে আমি পদ্ম ফোটাবোই।’ সভায় উপস্থিত বিজেপির ঘাটাল সাংগঠনিক জেলার সভাপতি অন্তরা ভট্টাচার্য সহ উপস্থিত নেতা-কর্মীদের করতালিতে ফেটে পড়তে দেখা যায় শুভেন্দুর প্রত্যয়ী এই বক্তব্যে।
উল্লেখ্য আসন্ন বিধানসভা উপলক্ষ্যে কোনও দলেরই প্রার্থী তালিকা ঘোষিত না হলেও ১৮ই জানুয়ারি নন্দীগ্রামের তেখালির জনসভা থেকে নিজেকে নন্দীগ্রামের প্রার্থী হিসেবে ঘোষণা করে চমক দিয়েছেন। আর তারপরই শুভেন্দু ঘোষণা করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রীকে নন্দীগ্রামে অর্ধলক্ষ ভোটে হারানোর। বুধবার নিজের সেই প্রতিজ্ঞা আরও একবার মনে করিয়ে দিলেন যেন। উল্লেখ্য নন্দীগ্রাম থেকে বিজেপির পক্ষে কে প্রার্থী হবেন তা এখনও নিশ্চিত হয়নি ঠিকই তবে একটি সূত্র জানা গেছে খোদ অমিত শাহ চেয়েছেন, নন্দীগ্রামের মাটিতে মমতা ব্যানার্জীর বিরুদ্ধে দাঁড়ান শুভেন্দু অধিকারী নিজে।
খোদ মুখ্যমন্ত্রীর বিরুদ্ধে প্রার্থী হওয়াটা নিশ্চিত ভাবেই কঠিন। আবার জায়গাটা যেহেতু নন্দীগ্রাম তাই লড়াই জেতাটা কঠিন হলেও অসম্ভব নয় মনে করেই সেই চ্যালেঞ্জ নিতে তৈরিও অধিকারী। তাঁর নিজের জিতে এসে মন্ত্রী হওয়া এই আসন থেকে। সেই সুবিধা হয়ত তিনি পাবেন কিন্তু এটাও ঘটনা যে মুখ্যমন্ত্রীকে জেতাতে পুরো দলই ঝাঁপিয়ে পড়বে।
গত ১০বছরে নন্দীগ্রামে যথেষ্টই মাটি হারিয়েছে শাসক আর সেই জায়গায় নিজের আসন মজবুত করেছে গেরুয়া শিবির। এটা যেমন শুভেন্দুর আ্যভভান্টেজ তেমনই এই মাটি হারানোর পেছনে দায়ী শুভেন্দু অধিকারীই এবং তিনি এখন আমাদের দলে নেই এই প্রচার করাটাও তৃনমূলের পক্ষে সুবিধাজনক অবস্থাননে রয়েছে। নন্দীগ্রামে আমফানের ক্ষতিপূরণ জনিত কেচ্ছা তৃনমূল কতটা শুভেন্দুর ঘাড়ে আর শুভেন্দু কতটা তৃনমূলের ঘাড়ে ঠেলতে পারেন সেটাও দেখার। সব মিলিয়ে লড়াই এখানে দু’পক্ষের জন্যই যতটা প্রেস্টিজের ততটাই কঠিন।
বুধবার খড়গপুর গ্রামীনের যে অংশে এই সভা হয়েছে সেটি পিংলা বিধানসভার অধীন যার বিধায়ক কাম মন্ত্রী হলেন সৌমেন মহাপাত্র। পূর্ব মেদিনীপুর থেকে শিশির অধিকারীকে সরানোর পর পূর্ব মেদিনীপুর জেলার দায়িত্বে এখন মহাপাত্র। স্বাভাবিক ভাবেই এবার পশ্চিমের পিংলার পরিবর্তে পূর্ব জেলা থেকে দাঁড়াবেন তিনি এমনটাই স্থির হয়েছে। বুধবারের সভায় তাঁকেও কটাক্ষ করে শুভেন্দু বলেছেন, ‘ সৌমেন বাবু কোথাও দ্বিতীয়বার ভোটে দাঁড়াননা। ২০০১ সালে নন্দনপুরে ভোটে দাঁড়িয়েছিলেন। ২০০৬ সালে হাওয়া খারাপ। উনি বললেন, আমি আর রাজনীতি করবো না। অধ্যাপন করবো। এরপর ২০১১ সালে আমার কাঁধে ভর করে তমলুকে জিতে গেলেন। ২০১৬ সালে চলে এলেন পিংলায়। এবার পিংলায় হারবে জেনে অন্যত্র চলে গেলেন।”