সুবর্ণরৈখিক লোকভাষার বাগধারা উপেন পাত্র
সুবর্ণরৈখিক লোকভাষায় বিশেষ কিছু বাচন শৈলী বা বাগধারা আছে,যেগুলি কথায় কথায়, উপমার মতো, ব্যবহার করা হয়।যথা–
১ অঁটার লুগা সাপ হওয়া। (বিশ্বাসঘাতকতা)
অঁটা=কোমর,লুগা=কাপড়।
২ আঁড়িয়া উঠা হওয়া। (উন্মত্ত হওয়া)
আঁড়িয়া=ষাঁড়
৩ ওল বিঁঝা ছা।(অনেক ছেলেপুলে)
৪ কুকুর কাঁধে শিকার।(পরনির্ভর)
৫ গুরু গুসেঁই (ব্যঙ্গ অর্থে গণ্যমান্য)
গুসেঁই=গোস্বামী
৬ গেঁড়ু তাড়ি দিয়া (সমূলে বিনাশ)
গেঁড়ু=কন্দ,তাড়ি দিয়া=তুলে ফেলা
৭ ঘর ডুবি সাত তাল পাণি (চরম সংকট)
৮ ঘরে ছা ছাড়ি দি আসা।(খুব ব্যস্ত ভাব)
৯ দহকে ঠেলা।(বিপদে ফেলা)
১০ দেবতাকে দু’গোড় (বেপরোয়া ভাব)
গোড়=পা
১১ নখ বাজনা (কলহে মজা নেওয়া)
১২ নেগুড় তুলি দেখা (যাচাই করা)
নেগুড়=লেজ
১৩ পাদ্রী বুঝনা (উল্টো পাল্টা বোঝানো)
১৪ পাইনে নাহয় পার্বনে (অনিয়মিত)
১৫ বনি বাসায় ঢ্যামনা পশা (হৈ হট্টগোল)
বনি=শালিক পাখি
১৬ বকার বুজলি বহা (আকাট মুর্খ)
বকা=বোকা,বুজলি=বোঝা
১৭ বরমষি পুষা (গলগ্রহ)
১৮ বীরকাঁড় সাজা (মরিয়া হওয়া)
১৯ বাঁগি কাটা (এড়িয়ে যাওয়া)
২০ ভাংথাপ (পরামর্শ)
২১ মাছিকে মর নাই (নির্বিরোধী)
২২ মাছা মিছা (অনিশ্চয়তা)
২৩ রণের বেলা গূণ ছিঁড়া (প্রয়োজনের সময় অকেজো হওয়া)
২৪ হিজল গাছে নাহা বাঁধা (নির্ভয় হওয়া)
নাহা=নৌকা
২৫ ছাই মাড়ামাড়ি নাই (তিক্ত সম্পর্ক)
২৬ মদের কলসী গলায় গাঁঠনা (নির্লজ্জ হওয়া)
গাঁঠনা=বাঁধা