ওয়েব ডেস্ক: করোনা সংক্রমণের পর থেকেই এই মারণ ভাইরাসের হাত থেকে বাঁচতে সতর্কতামূলক ব্যবস্থা হিসেবে বাধ্যতামূলক করা হয়েছে মাস্ক, গ্লাভস ও স্যানিটাইজার৷ ফলে বাজারে এই দুইয়ের-ই চাহিদা বেড়েছে। ফলে বাজারে চড়া দামে বিক্রি হচ্ছে মাস্ক ও স্যানিটাইজার। বর্তমানে একটি ডিসপোজেবল সার্জিকাল মাস্কের দাম ৩০-৪০ টাকা। এন-৯৫ মাস্কের দাম ৫০০-৭০০ টাকা, যা মধ্যবিত্তের নাগালের বাইরে। এর কিছুদিনের মধ্যেই বাজারে আসে অল্প মূল্যের নানারকম রঙবেরঙের মাস্ক যেগুলি দেখতে সুন্দর হলেও করোনা আটকাতে মোটেই কার্যকরী নয়৷ এবার রাজ্যবাসীর সুবিধার্থে অভিনব সিদ্ধান্ত নিল রাজ্য স্বাস্থ্য দফতর। রাজ্য সরকারের তরফে ডিসপোসেবল থ্রি প্লাই সার্জিক্যাল মাস্ক ও টু প্লাই পপলিন মাস্ক বিক্রির সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। রাজ্যের সমস্ত ন্যায্যমূল্যের ওষুধের দোকানেই এই মাস্ক পাওয়া যাবে।
স্বাস্থ্য দফতরের নির্দেশিকা অনুসারে, ডিসপোসেবল থ্রি প্লাই সার্জিক্যাল মাস্ক পাওয়া যাবে মাত্র ৪ টাকায়। পাশাপাশি একাধিকবার ব্যবহার করার মতো টু প্লাই পপলিন মাস্কের দাম পড়বে মাত্র ১৭ টাকা। পাওয়া যাবে হট টেপ এবং কল টেপ ফুল পিপিই। দাম ৪৬০ টাকা এবং ৪৩০ টাকা। তবে এই মূহুর্তে মাস্ক বিক্রি করা হলেও স্বাস্থ্যকর্মী ছাড়া সাধারণ মানুষকে পিপিই বিক্রি করা যাবে না। আপাতত সেগুলি শুধুমাত্র চিকিৎসকরাই কিনতে পারবেন।
বেশ কিছুদিন যাবত রাজ্যের চিকিৎসক সংগঠনের তরফে ন্যায্যমূল্য ওষুধের দোকান থেকে মাস্ক ও পিপিই দেওয়ার দাবি তোলা হয়েছিল। সেই কারণেই রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরের তরফে এবার ডাক্তারদের পিপিই কেনার ব্যবস্থা করা হয়েছে। প্রত্যেক ডাক্তার তাঁদের প্যাডে রেজিস্ট্রেশন নম্বর উল্লেখ করে একসঙ্গে সর্বোচ্চ ১০টি পিপিই এবং ২৫টি করে দু’ধরনের মাস্ক কিনতে পারবেন।
লকডাউন উঠে যাওয়ার পর থেকেই রাস্তায় বেড়চ্ছেন বহু মানুষ। ফলে সার্জিকাল মাস্ক ডিসপোজেবল হওয়ায় তা ফেলে দিতে হচ্ছে। এতে বেশি খরচা হওয়ার আশঙ্কায় বাজার চলতি রঙবেরঙের মাস্কই বেশী ব্যবহার করছে সাধারণ মানুষ। এদিকে সরকারি হাসপাতালেও মাস্কের বিপুল চাহিদা অনুযায়ী জোগান নেই। ফলে এই পরিস্থিতিতে যদি ন্যায্যমূল্যের ওষুধের দোকানে মাস্ক এত সস্তায় পাওয়া যায় সাধারণ মানুষের অনেক সুবিধা হবে বলেই দাবি স্বাস্থ্য দফতরের কর্তাদের।
অন্যদিকে, দীর্ঘ ৫ মাস ধরে করোনা সংক্রমণের আশঙ্কায় জবুথবু গোটা বিশ্ব। দিন দিন ক্রমশ বাড়ছে সংক্রমণ। বিশেষজ্ঞদের মতে, যতদিন না এই মারণ ব্যাধির প্রতিষেধক বের হচ্ছে, ততদিন একমাত্র সামাজিক দূরত্ব ও মাস্কই হবে মারণ ব্যাধি রোধের মূল অস্ত্র। ফলে রাস্তায় বেরোলে মাস্ক মুখে থাকাটা অন্তত জরুরী। এই পরিস্থিতিতে রাজ্য সরকারের তরফে মাত্র ৪ টাকায় মাস্ক দেওয়ার সিদ্ধান্তে স্বাভাবিকভাবেই প্রশংসায় পঞ্চমুখ রাজ্যবাসী।