নিজস্ব সংবাদদাতা: কয়েকদিন আগেই শিলিগুড়ি শহরে সভা করতে এসে রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী তথা বর্তমান বিজেপি নেতা শুভেন্দু অধিকারী বলেছিলেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী ভোটে জেতার জন্য পাইলট কার দিয়ে পাহাড়ে আনিয়েছেন রাষ্ট্রদ্রোহী বিমল গুরুংকে। সেই দাবিই বোধহয় সত্যি হয়ে উঠতে চলেছে।বিধানসভা নির্বাচনের মুখে রাজ্যের ‘মোস্ট ওয়ান্টেড’ বিমল গুরুংয়ের বিরুদ্ধে ৭০টি মামলা প্রত্যাহার করতে চলেছে রাজ্য সরকার। নবান্ন সূত্রের খবর, রাজ্যের আইন দফতরের পক্ষ থেকে একটি নির্দেশিকা পাঠানো হয়েছে দার্জিলিং জেলা পুলিশকে।
উল্লেখ্য, বিমলের বিরুদ্ধে ভানুভবন, কালিম্পং, কার্শিয়াং সহ বিভিন্ন জায়গায় সরকারি সম্পত্তি ভাঙচুর ও হামলার ঘটনায় একাধিক মামলা ঝুলছে। নবান্ন সূত্রে শনিবার জানা গিয়েছে, বিমল গুরুংয়ের বিরুদ্ধে যে সমস্ত মামলা রয়েছে, তার মধ্যে ইউএপিএ এবং ৩০২ ধারায় খুনের মামলা বাদে বাকি ৭০টি মামলা প্রত্যাহারের প্রক্রিয়া শুরু হতে চলেছে। এদিকে আইন দফতর থেকে দার্জিলিং জেলা পুলিশের কাছে এই নির্দেশিকা পৌঁছনোর পর, সেখানকার পুলিশ আধিকারিকদের মধ্যে তৎপরতাও শুরু হয়ে গিয়েছে। আদালতের মাধ্যমেই চলবে মামলা প্রত্যাহারের কাজ।
লোকসভা ভোটে উত্তরবঙ্গ তৃণমূলের থেকে কিছুটা মুখ ফিরিয়েছিল। বিপুল ভোট পায় বিজেপি। বিধানসভা ভোটে সেই সমীকরণে ফারাক গড়ে দিতে পারেন কোনও পাহাড়ের জননেতাই, সে কথা বিলক্ষণ জানে সকলে। তাই বিমলের আবির্ভাব ও তৃণমূলকে সমর্থনের অঙ্গীকার নতুন করে ঘাসফুল শিবিরের আত্মবিশ্বাস বাড়িয়েছে।
বিরোধীদের প্রশ্ন, বিমলের এই পদক্ষেপের পুরস্কার হিসাবেই কী তাঁর বিরুদ্ধে সমস্ত মামলা তুলে নেওয়ার কথা ভাবছে রাজ্য? এ কী ‘আনুগত্য’ হওয়ার উপহার? প্রশ্ন ওয়াকিবহাল মহলের। যদিও এনিয়ে এখনও সরকারিভাবে নবান্ন থেকে কিছু জানানো হয়নি। তবে বিষয়টা নিয়ে প্রবল দ্বন্দ্বে শাসক শিবিরেও। বিমলের অনুপস্থিতিতে মমতা ব্যানার্জী প্রশ্রয় দিয়েছিলেন বিনয় তামাং, অনীক থাপাদের। শাসকের প্রশ্রয়ে বিমল ফের পাহাড়ে ফেরায় কোনঠাসা ওই দুই নেতা নতুন করে বেঁকে বসেছেন। নিজেদের মত করে ঘুঁটি সাজাচ্ছে তারা। ফলে পাহাড়ে তৃনমূল কংগ্রেস কতটা ভালো ফল করতে পারবে সেই নিয়ে সন্দেহ থেকেই যাচ্ছে।