নিজস্ব সংবাদদাতা: মঙ্গলবারই থানায় থানায় নোটিশ দেওয়া হয়েছে, হাত ধুয়ে থানায় আসুন। থানার প্রবেশ মুখেই বসানো হয়েছে বেসিন, রাখা হয়েছে সাবান। গেটে দাঁড়িয়ে সতর্ক প্রহরী, থানায় ঢোকার সময় প্রতিটি মানুষকেই হাত ধুইয়ে তবে থানায় ঢোকায় ছাড়। বুধবার খোদ পশ্চিম মেদিনীপুরের পুলিশ সুপারকে দেখা গেল অফিস ছেড়ে বাইরে দাঁড়িয়ে সাংবাদিক সম্মেলন করতে, যা কার্যত নজির বিহীন।
উল্লেখ্য , মাওবাদী উৎপাতের সময়ে কখনও কখনও দারুন ব্যস্ততার সময়ে হঠাৎ অপারেশনে যাওয়ার সময়ে পুলিশ সুপারদের দু একবার অফিসের বাইরে দাঁড়িয়ে প্রেস ব্রিফিং করতে হয়েছে ঠিকই কিন্তু অফিসের বাইরে পুরোদস্তুর সংবাদিক সম্মেলন! না, মনেই করতে পারছেননা গত তিন দশক ধরে সংবাদপত্রের সঙ্গে যুক্ত সাংবাদিকরা। সৌজন্যে সেই কোভিড-১৯ ওরফে করোনা ভাইরাস।
বুধবার করোনা সংক্রমন ঠেকাতে সতর্কতা মূলক ব্যবস্থা হিসেবে জেলা পুলিশ কী কী ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে তা জানাতে নিজের কার্যালয় কক্ষের বাইরে সাংবাদিক সম্মেলন করলেন পশ্চিম মেদিনীপুরের পুলিশ সুপার দীনেশ কুমার। কেন তিনি কার্যালয়ের বাইরে সাংবাদিক সম্মেলন করলেন তা নিয়ে প্রশ্ন করা হলে হালকা চালে তিনি প্রথমে বলেন যে আজকে পরিবেশ ভালো তাই বাইরে সাংবাদিক সম্মেলন করলেন । পরে পুলিশ সুপার নিজেই জানিয়ে দেন যে সতর্কতা মূলক ব্যবস্থা হিসেবে এদিন তাকে তার চেম্বারের বাইরে সাংবাদিক সম্মেলন করতে হচ্ছে।
পুলিশ সূত্রে খবর, সাংবাদিকরা করোনা সংক্রান্ত খবর ও অন্য খবরের জন্য হাসপাতাল থেকে জনবহুল স্থানে ছুটে বেড়াচ্ছেন। ফলে কখন কে সংক্রমনের আওতায় চলে আসছে তা বোঝা তার নিজের পক্ষেও সম্ভব নয়। বোঝার পর তিনি নিজেই অনেক জায়গায় সংক্রমন ছড়িয়ে দিতে পারেন। পুলিশ সুপারের অফিসের অভ্যন্তরে চেয়ার, টেবিল ইত্যাদি সংক্রমন না হয়ে পড়ে তাই এই ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।
পুলিশ সুপার এদিন আরও একবার জানিয়ে দেন, পশ্চিম মেদিনীপুর জেলাতে এখনও পর্যন্ত কারোর শরীরে করোনা ভাইরাস নমুনা মেলেনি। তিনি বলেন যে জেলার প্রশাসন ও স্বাস্থ্য দপ্তরের সঙ্গে যোগাযোগ রেখে কাজ করছেন পুলিশ আধিকারিকরা । জেলার সীমান্তবর্তী এলাকায় যেমন স্ক্রিনিং করা হচ্ছে তেমনই কোন রকমের জমায়েত কোথাও হচ্ছে কী না তাও দেখা হচ্ছে । এখন পুলিশ যে কমিউনিটি প্রোগ্রাম ও জনসংযোগ মূলক কাজ করে তাও বন্ধ রাখা হয়েছে ।
বিভিন্ন সোশাল মিডিয়া তে করোনা নিয়ে বিভিন্ন রকমের গুজব ছড়ানো হচ্ছে বলেও অভিযোগ । পুলিশ জানায় যে এই সব সোশাল মিডিয়ার ওপর নজরদারি রাখা হচ্ছে ও কেউ যদি গুজব ছড়ায় তাহলে তার বিরুদ্ধে সঙ্গে সঙ্গে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে । আরও একটি গুরুত্বপুর্ন বার্তায় দিনেশ কুমার বলেন, এখন উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা চলছে । পরীক্ষার্থীরা যখন পরীক্ষা দিচ্ছে সেই সময়ে বাইরে এক জায়গাতে থাকছেন ও বসছেন তাদের অভিভাবকরা । পুলিশের পরামর্শ, তারা একটু দূরত্ব বজায় রেখে বসুন ও মাস্ক ব্যবহার করুন ।