নিজস্ব সংবাদদাতা: মমতা ব্যানার্জীকে তিনিই প্রথম সম্বোধন করেছিলেন ‘বাংলার জনগণমন অধিনায়িকা’ হিসাবে। যে পেটেন্ট এখন অনেক ভুঁইফোড় নেতা মায় অভিষেক বন্দোপাধ্যায় অবধি নিয়ে ফেলেছেন। সেই মূখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জীকেই তিনি জানিয়ে দিলেন, ‘ আপনার নেতৃত্ব ছাড়া আর কারও নেতৃত্বেই কাজ করতে পারবনা। ২রা মার্চ নেতাজী ইণ্ডোরের পি.কের ইভেন্ট ম্যানেজমেন্টে অনুষ্ঠিত দলীয় সভা কার্যত বয়কটই করেছিলেন নন্দীগ্রামের বিধায়ক শুভেন্দু অধিকারী। শুধুই তিনি নয়, সেই বৈঠকে হাজির ছিলেননা শুভেন্দু পিতা শিশির, ভাই দিব্যেন্দু সহ শুভেন্দু শিবিরের এক গুচ্ছ প্রথম সারির নেতা। যদিও পরের দিনই নির্ধারিত কর্মসুচীতে মালদায় গেছিলেন শুভেন্দু। আর সেই সভাতেই তিনি নাকি একান্তে মূখ্যমন্ত্রীকে এমনটাই জানিয়ে দিয়েছেন বলে দলীয় সূত্রে খবর মিলেছে।
দলীয় সূত্রে আরও খবর এই যে, তাঁকে কেন্দ্র করে দলের মধ্যে পরিকল্পিত গুজব ছড়ানো হচ্ছে। বলা হচ্ছে তিনি ও তাঁর অনুগামীরা নাকি বিজেপিতে যাচ্ছেন। দলের ভেতরের একটি শক্তিশালী অংশ সংবাদমাধ্যমকে ব্যবহার করে এই সব রটাচ্ছে। অভিমানী শুভেন্দু অধিকারী তাই মমতা ব্যানার্জীকে এও বলেছেন যে, ”আপনি বললেই দল ছেড়ে দেব।’’
৪ঠা মার্চ মালদার ছোট সূজাপুরে বুথভিত্তিক কর্মিসভায় পর্যবেক্ষক হিসাবে হাজির ছিলেন শুভেন্দু। সূত্রের খবর, ওই বৈঠকের পর একান্ত সাক্ষাৎ হয়েছে নেত্রী মমতার সঙ্গে। মালদায় দলনেত্রীকে একান্তে তিনি বলেছেন, “আপনি আমার নেত্রী। আপনি যে নির্দেশ দেবেন তা অক্ষরে অক্ষরে পালন করব। আপনি যদি দল ছাড়তে বলেন, তাহলে দলও ছেড়ে দেব। আপনার নেতৃত্বে আমি রাজনীতি করছি এবং করব। কিন্তু অন্য কারও কথায় রাজনীতি করতে পারব না।’’
শুভেন্দু অধিকারীর ঘনিষ্ট এক নেতা জানিয়েছেন, ” দাদা যেন ভীষ্মর মতই শরশয্যায় পড়ে রয়েছেন, আর যে যা পারছে তীর মেরেই যাচ্ছে! দিল্লিতে অভিষেক বন্দোপাধ্যায়ের নেতৃত্ব প্রতিষ্ঠা করতে হবে অতএব দাদাকে সাংসদ ছেড়ে বিধায়ক হতে হবে। দাদা রাজ্য যুবর নেতা তো তৃণমূল যুবা বলে অন্য সংগঠন গড়তে হবে যাতে অভিষেক আলাদা নেতা হতে পারে, আর এখন সামনের বিধানসভায় যাতে শুভেন্দু অধিকারীই মুখ না হয়ে উঠতে পারে তাই পি.কে কে এনে নতুন চাল চালা হচ্ছে। শুভেন্দু অধিকারী কর্পোরেট রাজনীতি করেননি আর তাই পি.কে প্রমোশনাল আইডেনটিটি তাঁর দরকার নেই।”
দলীয় সূত্রে জানা গেছে শুভেন্দুর ওই অভিমান ভরা বক্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় মমতা ব্যানার্জী কোনও কিছু বলেননি প্রাথমিক ভাবে। তিনি শুধু চুপ করে শুনে গেছেন। ঘনিষ্ট মহলে শুভেন্দু বুঝিয়েও দিয়েছেন, তিনি যেমন পি.কের ‘দিদিকে বল’ গ্রাহ্য করেননি, তেমন ‘বাংলার গর্ব মমতা’ কেও গ্রাহ্য করবেননা। অনুগামীদের কাছে শুভেন্দুর স্পষ্ট বক্তব্য, পশ্চিম বাংলা বাসীকে কী পি.কের কাছ থেকে জানতে হবে যে, মমতা ব্যানার্জী বাংলার গর্ব। পি.কে বরং বাংলার কাছে জানুন মমতা ব্যানার্জী বাঙালির আরও কত গভীরে রয়েছেন।