নিজস্ব সংবাদদাতা: পূর্ব এবং পশ্চিম মেদিনীপুরের এক গুচ্ছ পুজো উদ্বোধন করার কথা ছিল তাঁর কিন্তু আদালত বাদ সেধেছে এবার। করোনা পরিস্থিতির কারনে মন্ডপে গিয়ে উদ্বোধন করায় আইনি জটিলতা দুর্গাপুজোর উদ্বোধন করলেন না মন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারী। অথচ দিন কয়েক আগে শুভেন্দু ঘোষণা করেছিলেন, বুধবার, পঞ্চমীর দিন পশ্চিম মেদিনীপুরের কয়েকটি পুজো মণ্ডপে প্রদীপ জ্বালাবেন। পুজো উদ্বোধন করার কথা ছিল তাঁর। আয়োজনও সারা হয়ে গিয়েছিল উদ্যোক্তাদের। কিন্তু আদালতের রায়ে সেই কর্মসূচি বাতিল করলেন তিনি। তাঁর এক অনুগামী জানালেন, ‘দাদা কখনও সরকারি বিধি বা আদালতের নির্দেশ ভাঙেন না। তাই দাদা আসতে পারলেন না এবার।’
উল্লেখ্য আদালতের রায়ে মন্ডপের সামনে নো-এন্ট্রি বোর্ড লাগানো, মন্ডপে দর্শনার্থীদের প্রবেশ নিষিদ্ধ, মন্ডপের ভেতরে উদ্যোক্তাদের সংখ্যা নির্দিষ্ট করে দেওয়া সহ আদালতের নির্দেশে ক্ষোভ প্রকাশ করেছে তৃনমুল দল কিন্তু বুধবার পরিবেশ মন্ত্রী জানিয়ে দিয়েছেন,” আদালতের রায় মানতে হবে। জীবনের চেয়ে উৎসব বড় নয়। উৎসব আবার আসবে কিন্তু জীবন গেলে নয়। পুজো বাড়িতে থেকে করা যায়।”
এদিকে দাদা আসতে পারছেন না জেনেই রাতারাতি শহরগুলিতে দাদার অনুগামীরা তাঁর ছবি ও শুভেচ্ছা জানিয়ে ফ্লেক্সে ভরিয়ে দেওয়া হয় বিকাল থেকে রাতের মধ্যে। খড়গপুর শহরের গোলবাজার, ঝুলি সহ শহরের বিভিন্ন জায়গায় ফ্লেক্স ঝোলানো হয়েছে। মেদিনীপুরের কর্নেল গোলা, এমন কি সবংয়েও ফ্লেক্সে ফ্লেক্সে ছয়লাপ। ‘আমরা দাদার অনুগামী’ তরফে ফ্লেক্সে ছেয়ে দেওয়া হয়েছে। সবং বাজার ছাড়াও বিভিন্ন গ্রামীন পুজো এমন কি রাস্তার মোড়ে মোড়ে শুভেন্দু অধিকারীর ছবি সহ ফ্লেক্সে মাস্ক, স্যানিটাইজার ব্যবহার এবং আদালতের স্বাস্থ্য বিধি মানার আবেদন জানানো হয়েছে।
খড়গপুরে ‘আমরা দাদার অনুগামী’র পক্ষে জয় ও মুনমুন বনিক জানিয়েছেন, “খড়গপুর শহরে দাদার অসংখ্য অনুগামী রয়েছেন। আমরা অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছিলাম দাদা আসবেন বলে কিন্তু পরে শুনলাম আদালতের নির্দেশ মেনে উনি আসছেন না। মন টা আমাদের খারাপ হয়েগেছিল। এরপরই ঠিক করলাম দাদার শুভেচ্ছা খড়গপুরবাসীর কাছে পৌঁছে দেন। তাই বৃহস্পতিবার রাত থেকেই আমরা ফ্লেক্স লাগাতে শুরু করি। শুক্রবার শহরের সর্বত্রই দাদার ফ্লেক্স লাগানো হবে।” জয় আর মুনমুনের সাথে হাত লাগিয়েছেন অনুরাগ সাহা, রাজেশ ভট্টাচার্যরা।
খড়গপুর শহর তৃণমূলের একাংশ জানিয়েছেন তাঁরাও এই দাদার অনুগামীদের সঙ্গে রয়েছেন। তাঁদের বক্তব্য, ” শুভেন্দু অধিকারী ছাড়া দিলীপ ঘোষের জেতা আসন খড়গপুর সদর কারও ক্ষমতা ছিলনা ছিনিয়ে আনার। তাঁর পরিকল্পনাতেই খড়গপুর বিধায়ক আসনটি আজ দলের ঝুলিতে। তাঁকে ভুলে গেলে এই আসন চলে যেতে সময় লাগবেনা।” একই দাবি করেছেন সবং তৃণমূলের একাংশ। তাঁরা বলেছেন, ‘অনেকেই জানেন উপনির্বাচনে ভোট লুট করে সবংয়ে তৃণমূলকে হারানোর পথ প্রশস্থ হয়েছিল পুলিশের একটা অংশের সহযোগিতায়। যার মাথা ছিলেন তৎকালীন পুলিশ সুপার। সেদিন সঠিক সময়ে শুভেন্দুদা হাল না ধরলে যাঁরা আজ ক্ষমতার দম্ভ দেখাচ্ছেন তাঁরা খড়কুটোর মত উবে যেতেন।” সবংয়ে দাদার অনুগামীদের পক্ষ থেকে দুঃস্থদের হাতে পুজোর বস্ত্র তুলে দেন পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা পরিষদের খাদ্য কর্মাধ্যক্ষ অমূল্য মাইতি।