নিউজ ডেস্ক: আপাতত হচ্ছে না মাধ্যমিক পরীক্ষা। ১ জুন থেকে পরীক্ষা নেওয়া অসম্ভব। করোনা পরিস্থিতিতে এমনটাই মনে করছে মধ্য শিক্ষা পর্ষদ। এবিষয়ে পর্ষদের সঙ্গে আলোচনা করেছে রাজ্য সরকার। সূচি অনুযায়ী ১ জুন থেকে ১০ জুন পর্যন্ত মাধ্যমিক পরীক্ষা, তারপর উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষা হওয়ার কথা। এই পরিস্থিতিতে সদ্য প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় রবিবার জানিয়েছিলেন, নির্দিষ্ট সূচি অনুযায়ী মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষা নেওয়া আদৌ সম্ভব হবে কিনা, তা নিয়ে সংশয় রয়েছে। তবে মধ্যশিক্ষা পর্ষদ এবং উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা সংসদ তাদের মতো করে পরীক্ষা নেওয়ার প্রস্তুতি শুরু করে দিয়েছে। কিন্তু করোনার বাড়বাড়ন্তের মাঝে মধ্য শিক্ষা পর্ষদ এদিন স্পষ্ট জানিয়েছে, ১ জুন থেকে হচ্ছে না মাধ্যমিক।
বর্তমানেও ক্রমাগত বাড়ছে করোনা সংক্রমণ। লক্ষ লক্ষ ছাত্র ছাত্রীদের ভবিষ্যৎ গত বছর থেকে মহামারীর জন্য রীতিমতো অনিশ্চিত হয়ে গেছে। গত বছর থেকে অনলাইনে পরীক্ষা দিচ্ছে লক্ষ লক্ষ ছাত্র এবং ছাত্রী। মাধ্যমিক পরীক্ষা নিয়ে এখনও পর্যন্ত চূড়ান্ত কিছু সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি অথবা নেওয়া যায়নি। এ বিষয়টি নিয়ে সোমবারই কথা বলেছেন রাজ্যের নতুন শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসুও।
শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু জানিয়েছেন ,এই বিষয় নিয়ে খুব তাড়াতাড়ি আলোচনা করা হবে। আগামী মাস থেকে পুরনো কর্মসূচি মেনে মাধ্যমিক পরীক্ষা হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু বর্তমান অবস্থা এতটাই জটিল যে তা সম্ভবত অসম্ভব। মধ্যশিক্ষা পর্ষদের তরফ থেকে স্পষ্ট ভাবে কোন কিছু জানা যায়নি। আর এরপরেই মঙ্গলবার মধ্য শিক্ষা পর্ষদ জানায়, আগামী ১ জুন থেকে মাধ্যমিক পরীক্ষা নেওয়া কোনও ভাবেই সম্ভব নয়। তবে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে সরকারের সঙ্গে আলোচনা করেই, বলেও জানানো হয়। পর্ষদ থেকে জানানো হয়, করোনা আবহে রাজ্যে আংশিক লকডাউন চলছে। বন্ধ রয়েছে একাধিক বাস, ট্রেন। তার মধ্যে লাফিয়ে বাড়ছে করোনা আক্রান্তের সংখ্যাও। তবে চূড়ান্ত সিদ্ধন্ত নেওয়া হবে সকারের সঙ্গে আলোচনা করেই।
এবারে বিধানসভা নির্বাচনের কারণে আগামী ১ জুন থেকে মাধ্যমিক শুরু হওয়ার কথা। অর্থাৎ সেই সূচি মেনে পরীক্ষা নিতে হলে হাতে রয়েছে আর মাত্র ২০ টি দিন। কিন্তু করোনা যেন জাঁকিয়ে বসেছে রাজ্য জুড়ে। তাই সকলের সুরক্ষার কথা চিন্তা করেই এই পরিস্থিতিতে কোনও ভাবেই মাধ্যমিক পরীক্ষা আগামী ১ জুন থেকে নেওয়া সম্ভব নয় বলে মঙ্গলবার জানিয়ে দিল পর্ষদ। তবে সরকারি তরফে কি সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়, এখন সেদিকেই তাকিয়ে সকলে।
প্রসঙ্গত, দেশে বর্তমানে করোনাভাইরাস সংক্রমণের দ্বিতীয় ঢেউ চলছে। রাজ্যেও করোনা পরিস্থিতি বেশ উদ্বেগজনক। এর আগে রাজ্যে গ্রীষ্মের ছুটি এগিয়ে এনে স্কুলগুলিতে পঠন পাঠন বন্ধ রাখা হয়েছে। শিক্ষক-শিক্ষিকাদেরও স্কুলে আসতে হবে না বলে জানানো হয়েছিল। প্রায় ১১ মাস পর নবম থেকে দশমের ক্লাস শুরু হয়েছিল। কিন্তু করোনা সংক্রমণ ফের বাড়ায় আপাতত সব স্কুল ফের বন্ধ থাকবে বলে গত ১৯ এপ্রিল রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে জানানো হয়। তবে অনলাইন ক্লাস যেমন চলছে, তেমন চলবে বলেও জানানো হয়।
রাজ্যের তৎকালীন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় জানিয়েছিলেন, শিক্ষা দফতর ব্যাচ অনুসারে স্কুলগুলিতে পঠনপাঠন চালাচ্ছিল। নির্বাচনে ভোট কেন্দ্র হওয়ায় এমনিতেই অনেক স্কুলই বন্ধ রয়েছে। এরমধ্যে কোভিডজনিত পরিস্থিতিতে গরমের ছুটি এগিয়ে এনে স্কুলগুলি বন্ধ থাকবে। পরে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানান যে, জুন পর্যন্ত বন্ধ থাকবে স্কুল।
উল্লেখ্য, করোনার জেরে ইতিমধ্যে সিবিএসই এবং আইসিএসই দশম শ্রেণির বোর্ড পরীক্ষা বাতিল হয়ে গিয়েছে। এই পরিস্থিতিতে পড়ুয়াদের বক্তব্য, পরীক্ষা নিয়ে উৎকণ্ঠা ক্রমশ বাড়তে থাকায় পড়াশোনায় কার্যত মন বসছে না তাদের। একই কথা জানাচ্ছেন অভিভাবকেরাও। তাই পরীক্ষা আদৌও হবে কিনা, তা স্পষ্টভাবে জানিয়ে দেওয়া হোক বলেই দাবী তাদের।