গৌরনাথ চক্রবর্ত্তী : হালের মিড ডে মিল চালু হওয়ার অনেক আগেই পড়ুয়াদের ক্ষুধা মেটানোর কাজ শুরু করেছিল বাংলার প্রান্তিক অঞ্চলের একটি স্কুল। পেটে খিদে নিয়ে পড়াশুনা হয়না এটা অনুধাবন করেই ক্ষুধার্ত পড়ুয়াদের জন্য ব্যবস্থা করা হয়েছিল প্রাত্যহিক নাড়ু ও কলা বিতরনের বন্দোবস্ত। পুর্ব বর্ধমানের কাটোয়া ২নংব্লকের শ্রীবাটী গোকুলকৃষ্ণ চন্দ্র উচ্চ বিদ্যালয়ের ১৫৪তম প্রতিষ্ঠা দিবস উদযাপন উপলক্ষ্যে এমনই ইতিহাস উঠে আসল বক্তাদের আলোচনায়।
(adsbygoogle = window.adsbygoogle || []).push({});
জানা গেছে খড়ের ছাউনিতে মাটির পাঠশালায় ঘর থাকলেও গ্রামের ছেলে মেয়েদের লেখাপড়ায় তেমন আগ্রহ না থাকায় প্রতিষ্ঠাতা গোকুলকৃষ্ণ চন্দ্র সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন পাঠশালায় এলেই ছাত্র-ছাত্রীদের নাড়ু কলা দেওয়া হবে।বাড়তে থাকে ছাত্রসংখ্যা। অধুনা মিড-ডে মিলের ধাঁচে বিদ্যালয়মুখী করতে এই প্রথা চালু হয়।কাটোয়ার শ্রীবাটী গোকুলকৃষ্ণ উচ্চ বিদ্যালয়ে ১৫৪তম প্রতিষ্ঠাতা দিবস পালনের অনুষ্ঠানে চলল সেই নাড়ু কলা দেওয়ার প্রথা।
(adsbygoogle = window.adsbygoogle || []).push({});
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়,প্রত্যন্ত গ্রামে শিক্ষার আলো পৌঁছে দেবার জন্য ১৮৬৭ সালে স্থানীয় জমিদার গোকুলকৃষ্ণ চন্দ্র জন দশেক ছাত্র নিয়ে শুরু করে পাঠশালা। পড়াশোনার পরিকাঠামো থাকলেও পড়ার প্রতি ছাত্রদের আগ্রহ না থাকায় মুড়ির নাড়ু ও চাপা কলা দেবার প্রথা চালু করেন।ওই প্রথা চালু হবার পর শ্রীবাটী গ্রাম ছাড়াও আশেপাশের বাকসা,পোষ্টগ্রাম,নন্দীগ্রাম ও নতুনগ্রামের ছাত্ররা ভিড় জমাতে শুরু করেন।
এখন যদিও প্রতিদিন বিদ্যায়তনে নাড়ু ও কলা দেওয়া না হলেও বিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠা দিবসের দিন সমস্ত ছাত্র-ছাত্রীদের নাড়ু ও কলা বিতরণের প্রথা আজও চালু রেখেছে বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। শ্রীবাটী গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান সাগর প্রধান , কাটোয়া ২ পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি নিষাদ সামন্ত, ছাত্র-ছাত্রীদের হাতে নাড়ু-কলা তুলে দেন প্রতিষ্ঠা দিবসের দিনে।বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক রঙ্গদেব গড়াই বলেন,মিড-ডে মিল তো এদিনের প্রথা।
(adsbygoogle = window.adsbygoogle || []).push({});
আমাদের স্কুলে দেড়শো বছর আগেই এই প্রথার কথা ভেবেছিলেন প্রতিষ্ঠাতা, এটা আমাদের গর্ব।প্রতিষ্ঠা দিবসের দিন ছাত্র-ছাত্রীরা নৃত্য, সংগীত,আবৃত্তি,নাটক পরিবেশন করেন।কাটোয়া ২ পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি নিষাদ সামন্ত,কাটোয়া ২ পঞ্চায়েত সমিতির পূর্ত কর্মাধ্যক্ষ সুব্রত মজুমদার, শ্রীবাটী গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান সাগর প্রধান,উপ প্রধান জগন্নাথ রুদ্র,বিদ্যালয়ের পরিচালন কমিটির সভাপতি করবীবরণ মণ্ডল,বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক রঙ্গদেব গড়াই সহ সমস্ত শিক্ষক-শিক্ষিকা,ছাত্র-ছাত্রী ও অভিভাবক-অভিভাবিকা উপস্থিত ছিলেন।