নিজস্ব সংবাদদাতা: শালবনী করোনা হাসপাতালে মৃত্যুর সংখ্যা বাড়ছে। জেলায় যখন করোনা আক্রান্ত হয়ে ১০০মৃত্যু পেরিয়ে গেছে তখন সেপ্টেম্বরের ১২তারিখ অবধি শুধু শালবনী করোনা হাসপাতালই গুনছে ৬০ছুঁই ছুঁই লাশ। সত্তরোর্ধ থেকে নিম্ন তিরিশের যুবকের বয়স লেগে আছে সে লাশের ঠিকানায়। জেলা স্বাস্থ্য দপ্তর অধিকাংশ মৃত্যুর পেছনে কো-মর্বিডিটিই কারন বললেও চূড়ান্ত অব্যবস্থাও অনেক মৃত্যুর জন্য দায়ী বলে দাবি করেছেন মৃতের পরিজন, বন্ধু বান্ধব। বিশেষ করে কয়েকটি মৃত্যু রীতিমত প্রশ্ন উঠেছে যেমন মেদিনীপুর কলিজিয়েট শিক্ষক আশিস কর কিংবা খড়গপুরের স্বাস্থ্য কর্মী সুমন দে। শালবনী হাসপাতালের অব্যবস্থা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে শাসকদলের অন্দরেই। শাসকদলের নেতারাই গুচ্ছ গুচ্ছ অভিযোগ পাঠিয়েছেন স্বাস্থ্য ভবনে।
ঠিক এই পরিস্থিতিতেই শালবনী করোনা হাসপাতালের ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে সিসিটিভি ক্যামেরা লাগিয়েছেন জেলা প্রশাসন এবং স্বাস্থ্যদপ্তর। জানা গেছে হাসপাতালের ২০২শয্যা সহ চারতলা হাসপাতালের বিভিন্ন অংশে লাগানো হয়েছে। এই ক্যামেরার সাহায্যেই হাসপাতালে নজর রাখবেন জেলাশাসক, জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক সহ অন্যান্য স্বাস্থ্য আধিকারিকরা। ওয়্যারলেস পদ্ধতিতেই নিজস্ব মোবাইলেই তাঁরা দেখতে পাবেন হাসপাতালের চালু হালহকিকৎ। কেন এই ব্যবস্থা? মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক নিমাই চন্দ্র মন্ডল জানিয়েছেন, “কিছু অভিযোগ আসছিল যদিও তার বেশিরভাগই ভিত্তিহীন তবুও আমরা আরও সুব্যবস্থার জন্য এই নজরদারি ব্যবস্থা চালু করেছি।”
অভিযোগ গুলি কী ছিল? মারাত্মক অভিযোগ ছিল চিকিৎসক ও নার্সরা নিয়ম করে ওয়ার্ডে যান না। গেলেও রোগিকে দুর থেকেই দেখে দ্রুত ওয়ার্ড ছাড়েন। দুর থেকেই রোগিদের ওষুধ ছুঁড়ে দেওয়া হয়। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই মৃত্যু হয়েছে সময়মত অক্সিজেন সরবরাহ না করায়। যে রোগি ওঠার ক্ষমতা নেই, দুর্বল, কথা বলতে পারার মত অবস্থায় নেই তাঁর অবস্থা দুর্বিসহ কারন শয্যার কাছে গিয়ে কেউ দেখেননি না যে রোগি কেমন আছে।
এরই মধ্যে একটি ভিডিও ছড়িয়ে পড়ে মোবাইলে মোবাইলে। ভাইরাল হওয়া ওই ভিডিওতে দেখা যায় ভয়াবহ ছবি। দাবি করা হয় ভিডিওটি শালবনী হাসপাতালের। যদিও স্বাস্থ্যকর্তারা উড়িয়ে দিয়েছেন ওই দাবি আর পুলিশের পক্ষ থেকে সাইবার সেল তদন্ত শুরু করেছে ভিডিওটি। এরই প্রেক্ষিতে শালবনী হাসপাতালের নজরদারি ব্যবস্থার এই নতুন পদ্ধতি। এই পদ্ধতি চালু হওয়ার ফলে হাসপাতালের চিকিৎসা পরিকাঠামো আরও ত্রুটি মুক্ত করা সম্ভব হবে বলেই মনে করছেন কর্তৃপক্ষ। অভিযোগের পরিমানও অনেক কমে যাবে।