শশাঙ্ক প্রধান : লজ্জায় মুখ ঢাকল পশ্চিম মেদিনীপুরের সবং ব্লক তৃনমূল কংগ্রেসের। গভীর রাতে একটি ইলেকট্রনিক দোকান থেকে ল্যাপটপ মোবাইল ইত্যাদি চুরি করে পালানোর সময় হাতে নাতে ধরা পড়লেন এক তৃনমূল নেতা। শনিবার মধ্যরাতে চুরির জিনিস সহ হাতেনাতে এক শাকরেদ সহ পুলিশি টহলদারীর মুখে পড়ে যান তৃণমূলের ওই কার্যকরী সভাপতি। রবিবার দিন ভর জেরা করার পর ২জনকেই গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। ঘটনায় তোলপাড় সবং।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে ধৃত জয়ন্ত বেরা সবংয়ের চাঁদকুড়ি বুথের কার্যকরী সভাপতি। তাঁর সঙ্গে গ্রেপ্তার হওয়া প্রহ্লাদ দাসও এলাকার সক্রিয় তৃনমূল কর্মী। বাকি আরও কয়েকজন এই ঘটনায় যুক্ত ছিল যারা পালাতে সক্ষম হয়েছে। তাদের খোঁজ চালাচ্ছে পুলিশ। পুলিশ সূত্রে জানা গেছে সবংয়ের বড় বাজার সহ বিভিন্ন এলাকায় রাতে টহল দেয় পুলিশ। সেভাবেই তেমাথানি থেকে দেহাটি অবধি রাতে লম্বা টহলে ছিল পুলিশ। পুলিশ যেমন লম্বা পেট্রলিংয়ে থাকে তেমনই স্থানীয় ভাবে বাজার গুলির ওপর নজরদারি করে সিভিক ভলান্টিয়াররা। শনিবার মধ্যরাতে এই টহলদারির সময়েই পাকড়াও হয় জয়ন্ত ও প্রহ্লাদ। চাঁদকুড়ি বাজারে একটি সদ্য চালু হওয়া ল্যাপটপ, মোবাইল ইত্যাদি বৈদ্যুতিন সামগ্রীর দোকান ভেঙে মূল্যবান সামগ্রী নিয়ে পালাচ্ছিলেন ধৃতরা।
এদিকে জয়ন্ত এবং প্রহ্লাদ সবংয়ের গোষ্ঠী রাজনীতিতে মানস ভূঁইয়া গোষ্ঠীর দিকেই অবস্থান করে বলে জানা গেছে। রবিবার দিনভর জয়ন্তকে থানা থেকেই জামিন করানোর চেষ্টা করা হয় বলেই জানা গিয়েছে কিন্তু পুলিশের পক্ষ থেকে পরিষ্কার জানিয়ে দেওয়া হয় এই অপরাধ থানা থেকে জামিন দেওয়ার মত কোনও ছোটখাটো অপরাধ নয়। অপরাধের গুরুত্ব বিচারে অপরাধীদের আদালতই বিচার করবেন তাঁরা জামিন যোগ্য কিনা। ফলে হাল ছাড়তে বাধ্য হয় উদ্যোগী তৃনমূল নেতারা। এরমধ্যেই সবং পুলিশের তদন্তকারী আধিকারিক ২জনকে জিজ্ঞাসাবাদ করে মামলার প্রয়োজনীয় কাগজপত্র তৈরি করেন যা সমেত ২জনকে আদালতে হাজির করা হবে।
ঘটনার তীব্র নিন্দা করেছে সবং বিজেপি। সবং পশ্চিম মন্ডলের সভাপতি দীপক খাটুয়া জানান, “চাঁদকুড়ি বাজারে এর আগেও কখনও সখনও চুরি হয়েছে বলে শুনেছি কিন্তু ধারনাই করতে পারিনি যে তৃণমূলের নেতা কর্মীরাই এমন করবে তা ধারনাই করতে পারিনি। যাঁরা শাসকদলে থাকেন তাঁদের কাছ থেকে মানুষ নিরাপত্তা আশা করে। এ যেন যে রক্ষক সেই ভক্ষক।”
জানা গেছে জয়ন্ত বেরার পরিবার আগে কংগ্রেসই করত। জয়ন্তর বাবা কানাই লাল বেরা কংগ্রেসের নেতা ছিলেন। মানস ভূঁইয়া তৃণমূলে যোগ দেওয়ার পর কানাই লালও তৃনমূলে যোগ দেন। যদিও তিনি কোনও নেতৃত্ব পদে আসেননি পরিবর্তে তাঁর ছেলে জয়ন্ত এলাকার কার্যকরী সভাপতি পদে আসীন হন।
পেশাগত ভাবে জয়ন্ত নিজের একটি চারচাকায় ভাড়ায় যাত্রী বহন করেন। ঘটনা সম্পর্কে কিছু জানা নেই বলে জানিয়েছেন মানস ভূঁইয়ার ভাই বিকাশ ভূঁইয়া। এলাকার তৃণমূল নেতা তথা জেলা পরিষদ সদস্য বিকাশ ভূঁইয়া জানিয়েছেন, “দিনভর কর্মসূচি থাকায় বিষয়টা জানা হয়নি। খোঁজ খবর নিচ্ছি আমরা।”