Homeএখন খবরনা পসন্দ নির্বাচিত পঞ্চায়েতদের তালিকা! সবংয়ে গ্রাম পঞ্চায়েত অফিসে তালা ঝোলালেন তৃনমূল...

না পসন্দ নির্বাচিত পঞ্চায়েতদের তালিকা! সবংয়ে গ্রাম পঞ্চায়েত অফিসে তালা ঝোলালেন তৃনমূল সভাপতি

নিজস্ব সংবাদদাতা: জোর যার সবং তার! রাজনৈতিক নেতা নির্বাচিত জন প্রতিনিধিদেরও উর্দ্ধে। নেতাদের কথা না শুনলে নির্বাচিত পঞ্চায়েত, প্রধান এবং কী পঞ্চায়েত অফিসের সরকারি আধিকারিককে যেখানে মারধর, অফিস থেকে ঘাড় ধরে তুলে নিয়ে যাওয়ার নজির আছে সেই জায়গার নাম পশ্চিম মেদিনীপুরের সবং। সেই সবংয়েই এবার পঞ্চায়েত অফিসে তালা লাগিয়ে দিয়ে পঞ্চায়েত কর্মীদের সাথে প্ৰয়োজনে আসা নাগরিকদেরও হেনস্থার অভিযোগ উঠল শাসকদলের এক নেতার বিরুদ্ধে। অভিযোগ ওই নেতার পছন্দ সই তালিকা মোতাবেক সরকারি রেশন বণ্টনে নির্বাচিত পঞ্চায়েতরা অস্বীকার করায় কর্মী ও উপভোক্তাদের অফিস থেকে বের করে দিয়েছেন তৃনমূলের অঞ্চল সভাপতি।

ঘটনাটি ঘটেছে সবংয়ের বলপাই গ্রাম পঞ্চায়েতের দপ্তরে। বুধবার এই বলপাই অঞ্চলের তৃনমূল সভাপতি মানিক মাইতি এবং তাঁর কয়েকজন অনুগামী বলপাই গ্রামপঞ্চায়েত অফিসে ঢুকে কর্মীদের বের করে দিয়ে তালা লাগিয়ে দেন। এরপরই মাইতি এবং তাঁর অনুগামীদের দেখা যায় পঞ্চায়েত অফিসের সামনে , কথা না শুনলে ধোলাই হবে, পেটাই হবে শ্লোগান দিতে। আর পাশাপাশি তৃনমূলের আধুনিক শ্লোগান ‘খেলা হবে’ বলেও গলা বাজি করতে দেখা যায় তাঁদের।

অভিযোগ সম্প্রতি জেনারেল রিলিফ বা জি.আর য়ে কিছু নতুন বরাদ্দ এসেছে দারিদ্রসীমার নীচে বসবাসকারী ব্যক্তিদের জন্য যাতে তাঁদের গম পাওয়ার কথা।
গ্রাম পঞ্চায়েতের পানপাড়া সংসদ সদস্য গৌরহরি বেরা জানিয়েছেন, ‘সরকারের এই সুবিধা প্রতিটি সংসদে বন্টন করার জন্য প্রতিটি সংসদের নির্বাচিত পঞ্চায়েত সদস্যদের একটি সভা ডাকা হয় মঙ্গলবার। নির্বাচিত ওই সদস্যরা তাঁদের নিজ নিজ এলাকার কারা কারা এই সুবিধা পেতে পারেন তার তালিকা দেন। নির্বাচিত সংসদ সদস্য না হওয়া স্বত্ত্বেও মানিক মাইতি ওই সভায় হাজির ছিলেন যেহেতু তাঁর স্ত্রী গীতারানী মাইতি নির্বাচিত পঞ্চায়েত সদস্য। তিনি নিজের পছন্দ মত একটি তালিকা দেন। পঞ্চায়েত সদস্যরা আলোচনার পর সেই তালিকা বাতিল করেন।”

বেরা বলেন, “কেন তাঁর তালিকা বাতিল করা হল এই নিয়ে বুধবার তিনি তাঁর দলবল নিয়ে এসে পঞ্চায়েত অফিসে তালা লাগিয়ে দেন। এরফলে পরিষেবা নিতে আসা গ্রামবাসীরা যথেষ্ট অসুবিধায় পড়েছেন। নির্বাচনের সামনে মানুষ পরিষেবা না পেলে দলেরই তো বিপদ। তাছাড়া মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, আমাদের মাননীয় মুখ্যমন্ত্রী বারংবার বলেছেন যে প্রকৃত ব্যক্তিকেই এই সুযোগ দিতে হবে। কারুর ব্যক্তিগত ইচ্ছা অনিচ্ছা এখানে কাজ করেনা। পঞ্চায়েত সদস্যরা সবাই মিলে যে সিদ্ধান্ত নেবেন সেটাই গ্রাহ্য করা হবে। ” বেরা দাবি করেছেন অবিলম্বে পঞ্চায়েত অফিস খোলার ব্যবস্থা করুক প্রশাসন।

মানিক মাইতি অবশ্য ঘটনাটিকে অস্বীকার করে গোটা দায় চাপিয়েছেন ‘বিক্ষুব্ধ’ জনতার কাজ বলেই। মানিক মাইতি বলেন, ‘এখানকার পঞ্চায়েত প্রধান প্রতিমা প্রামানিক সম্প্রতি বিজেপিতে যোগ দিয়েছেন আর তার পরেই সমস্ত সুযোগ সুবিধা দেওয়া হচ্ছে বিজেপি সমর্থক ও কর্মীদের। সাধারণ মানুষ ১০০দিনের কাজ থেকে শুরু করে, জিআর, সার্টিফিকেট পাননা। প্রধান অর্ধেকদিন অফিসেই আসেননা। পরিষেবা না পেয়েই বঞ্চিত মানুষরা তালা লাগিয়ে দিয়েছেন।

উল্লেখ্য এই গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান সবংয়ের সদ্য বিজেপিতে যোগ দেওয়া পুরানো তৃনমূল নেতা অমূল্য মাইতির বোন। অমূল্য মাইতি এখনও তৃনমূলের টিকিটে জেতা জেলা পরিষদের খাদ্য কর্মাধ্যক্ষ পদে রয়েছেন। অন্যদিকে মানিক মাইতি তৃণমূল থেকে রাজ্যসভায় নির্বাচিত মানস ভূঁইয়ার অনুগামী। বরাবরই মানস ভূঁইয়া বনাম অমূল্য মাইতি অনুগামীদের দ্বন্দ্বের শিকার হয় সবংয়ের মানুষ ঠিক যেমনটা এদিন বলপাইতে হয়ে গেল।

RELATED ARTICLES

Most Popular