নিজস্ব সংবাদদাতা: হু হু করে সংক্রমন ছড়াচ্ছে সবংয়ে। গত ২৪ ঘন্টায় শুধু মাত্র সবং থানা এলাকাতেই আক্রান্ত হয়েছেন ৩ মহিলা সমেত ৭ জন। আর সঙ্কট আরও ঘণীভূত এই কারনে যে সোমবার জেলা স্বাস্থ্য দপ্তরের হিসাব অনুযায়ী আক্রান্ত ৭জনই সবং সদরেই অর্থাৎ সবং গ্রামপঞ্চায়েতের সেই অংশে যেখানে থানা, হাসপাতাল, বিডিও অফিস এবং মুলবাজার অবস্থিত। আর এতেই সংক্রমনের আরও আশঙ্কা থেকে যাচ্ছে।
জানা গেছে এই সাত জনের মধ্যে এমন আক্রান্তরা রয়েছেন যাঁদের দ্বারা ইতিমধ্যেই কেউ সংক্রমিত হয়ে পড়েছে কিনা সেটাই এখন ভাবার। যেমন পরশুরামপুরের একজন ৫২ বছরের মহিলা যিনি এক গণ্যমান্য পুরোহিতের স্ত্রী যাঁর যজমান বাড়ির সংখ্যা প্রায় শ’খানেক এবং তিনি রীতিমত পূজা করে বেড়িয়েছেন। রাখি পূর্ণিমা উপলক্ষ্যে রবিবার ও সোমবারও একাধিক যজমানের বাড়ি গিয়ে পূজা করেছেন। এই পুরোহিতের স্ত্রী শ্বাসকষ্ট নিয়ে সবং গ্রামীন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।গত কয়েকদিন ধরেই তাঁর শ্বাসকষ্টের উপশম না হওয়ায় তাঁর নমুনা পাঠানো হয়েছিল। সোমবার পজিটিভ রিপোর্ট আসে তাঁর।
অন্য দিকে সাঁওতার বাসিন্দা ৩০ বছরের সিভিক ভলান্টিয়ারের আক্রান্ত হওয়ার ফলে সবং থানার পুলিশ কর্মীদের কেউ সংক্রমিত হয়ে পড়তে পারেন এমন আশঙ্কাও থেকে যাচ্ছে। অন্যদিকে তিনি যেমন থানায় অবারিত ভাবে যাওয়া আসা করেছেন তেমনই পেশা সূত্রে বিভিন্ন গ্রাম ও ব্যক্তির সঙ্গে মিশতে হয়েছে তাঁকে। ফলে থানা এবং থানার বাইরে দু’জায়গাতেই সমস্যা এই সিভিকের আক্রান্ত হওয়ার ঘটনায়। যদিও এই সিভিকের কোনও উপসর্গ নেই।
অন্যদিকে ডাঙাবাড়ি এলাকায় এক ৩৫ বছরের যুবক যিনি পেশায় মোবাইল টাওয়ারের কর্মী কয়েকদিন ধরেই জ্বরে ভুগছিলেন। সবং হাসপাতালে নমুনা দিয়েছিলেন। তাঁরও পজিটিভ ফলাফল এসেছে। বাদ বাকি ৪ জন আক্রান্তের বাড়ি সবং গ্রামীন হাসপাতাল লাগোয়া বলরামপুরে। এদের মধ্যে ৩জন দুই যুবতী ও একজন যুবক আক্রান্ত হয়েছেন অন্যদের সংস্পর্ষে এসে। উল্লেখ্য এই পাড়ারই ২জন আগে আক্রান্ত হয়েছিলেন। এঁদের মধ্যে অনেকেই হাসপাতালের স্থায়ী ও অস্থায়ী কর্মী। সেরকমই দুই অস্থায়ী কর্মীর একজন নিজে এবং অন্যজনের মেয়ে আক্রান্ত হয়েছিলেন। মনে করা হচ্ছে সেই সূত্র ধরেই ওই পাড়ার আরও ৩ জন আক্রান্ত হয়ে পড়লেন।
আক্রান্তদের মধ্যে সপ্তম ব্যক্তি এই বলরামপুরেরই বাসিন্দা। ২৪বছরের এই যুবক পূর্বে আক্রান্ত হাসপাতালের এক অস্থায়ী কর্মীর সঙ্গে এক সাথে ওঠা বসা করতেন, আড্ডা দিতেন বলে জানা গিয়েছে।
সোমবারের এই নতুন ৭ আক্রান্তকে ধরে সবং থানা এলাকার মোট আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়াল ৩২ জনে আর এর মধ্যে ১৫ই জনই সবং গ্রামপঞ্চায়েত এলাকার। আর সবং থানা এলাকায় যে একমাত্র মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে সেটিও এই এলাকার কুন্ডল পালেই ঘটেছে। সব মিলিয়ে সবংয়ের অবস্থা যে ক্রমশ উদ্বেগ জনক হয়ে উঠছে তা বলার অপেক্ষা রাখেনা।