নিজস্ব সংবাদদাতা: করোনার বিরুদ্ধে লড়াই করতে গিয়ে এবার সবং গ্রামীন হাসপাতালের একজন নার্স আক্রান্ত হলেন। দীর্ঘ চার মাস ধরে করোনা সংক্রমন ছড়িয়ে পড়ছিল সবং জুড়ে ইদানিং যা দ্রুততার সঙ্গেই ছড়াচ্ছে কিন্তু এত দিন অবধি কোনও নার্স বা চিকিৎসকের আক্রান্ত হওয়ার ঘটনা ঘটেনি যা ঘটল মঙ্গলবার। ওই দিন রাতে জেলা স্বাস্থ্য দপ্তরের সূত্রে পাওয়া খবরে জানা গেছে হাসপাতালের একজন নার্সের পজিটিভ নিশ্চিত হয়েছে। খবরটি নিশ্চিত করা হয়েছে সবং হাসপাতাল সূত্রেও।
জানা গেছে মাস দুয়েক আগেও ওই নার্সের করোনা পরীক্ষা করা হয়েছিল। পারিবারিক কারনে পাঞ্জাবে গেছিলেন তিনি। ফিরে আসার পর কোয়ারেন্টাইনে ছিলেন তিনি। তারপর আরটি/পিসি আর পরীক্ষা করা হয় তাঁর। সেই পরীক্ষায় নেগেটিভ আসার পরই কাজে যোগ দিয়েছিলেন তিনি। দু-একদিন সামান্য অসুস্থতা বোধ করার পর ২২ তারিখ ফের নমুনা দিয়েছিলেন যা ২৫ আগষ্ট পজিটিভ আসে। আপাতত হোম আইসোলেশনে রয়েছেন তিনি। হাসপাতাল সূত্রে জানানো হয়েছে হাসপাতালে কাজ করতে গিয়েই কোনও উপসর্গহীন রোগির সংস্পর্ষে এসে করোনা আক্রান্ত হয়েছেন তিনি।
২৫তারিখ দিনটা সবংয়ের করোনা যুদ্ধের ইতিহাসে খানিকটা খারাপ দিনই বলা চলে কারন এই দিন ওই নার্স ছাড়াও ৮ জনের আক্রান্ত হওয়ার সংবাদ মিলেছে যার মধ্যে বলপাই গ্রামপঞ্চায়েতের তিলন্ত পাড়ার এক ৩০বছরের গৃহবধূ ও ৯বছরের কন্যা এবং ২বছরের পুত্র সন্তান রয়েছে। আশ্চর্য জনক ভাবে পরিবারের ৩৫ বছরের কর্তা নেগেটিভ। তবে জানা যাচ্ছে ওই পরিবারের কর্তা পেশায় ভ্যান চালক যিনি পাশের গোটগেড়িয়া গ্রামের বাসিন্দা এক চাল ব্যবসায়ীর চাল বিভিন্ন জায়গায় সরবরাহ করতেন। কিছুদিন আগে তাঁর জ্বর আসে এবং ভাল হয়ে যায় কিন্তু তাঁর স্ত্রী ও সন্তানদের উপসর্গ দেখা দেয়। একই ভাবে উপসর্গ দেখা যায় গোটগেড়িয়ার চাল ব্যবসায়ীর। সবাই-ই করোনা পরীক্ষার নমুনা জমা দিলে ভ্যানচালক বাদে সবাই মানে তাঁর স্ত্রী পুত্র কন্যা ও ব্যবসায়ী ও স্ত্রীর পজিটিভ আসে।
ওই দিনই বিষ্ণুপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের দাসপুর গ্রামের এক দম্পত্তিরও পজেটিভ ধরা পড়ে। জানা গেছে এই পরিবারের ২২বছরের গৃহবধূ প্রসবের জন্য পূর্ব মেদিনীপুরের মংলামাড়ো সংলগ্ন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন। প্রসবের পর বাড়ি ফিরে জ্বর আসে। নমুনা প্রদানের পর দুজনেরই পজিটিভ আসে। বিষ্ণুপুর অঞ্চলেই ওই দিন এক পিতা ও কন্যার পজেটিভ এসেছে।
ঠিক আগের দিনই সবংয়ের লুটুনিয়া এলাকায় এক মিষ্টান্ন ব্যবসায়ী পরিবারের ৫জনই করোনা আক্রান্ত হয়েছিলেন। তেমাথানি বাজারেই পরিচিত মিষ্টি দোকান রয়েছে তাঁদের। পরিবারের সবাই বাড়িতেই হোম আইসোলেশনে থাকলেও পরিবারের কর্তার শ্বাসকষ্ট জনিত সমস্যা থাকার জন্য শালবনী পাঠানো হয়েছে। সবং হাসপাতাল সূত্র জানাচ্ছে আরটি/পিসিআর এবং আ্যন্টিজেন পরীক্ষায় সবং এলাকায় আক্রান্তের সংখ্যা ৭৫ছাড়িয়েছে যদিও সংখ্যাটা আরও একটু বেশিই হতে পারে বলেই একটি সূত্র জানাচ্ছে।