নিজস্ব সংবাদদাতা: ফের করোনার কোপে সবং আর এবার সবং থানার নতুন তিনটি গ্রাম পঞ্চায়েতে বিস্তৃত হল করোনা মানচিত্র। এতদিন অবধি সবং, দেভোগ, মোহাড়, চাউলকুড়ি এই চারটি গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায় করোনা আক্রান্তের সন্ধান পাওয়া গেছিল এবার তার সঙ্গে যুক্ত হল নারায়নবাড়,বিষ্ণুপুর এবং নওগাঁ গ্রাম পঞ্চায়েত।
শনিবার নতুন করে ফের যে চারজন আক্রান্ত হওয়ার খবর জেলা স্বাস্থ্যদপ্তর সূত্রে পাওয়া গেছে তাতে দেখা যাচ্ছে নারায়নবাড় এলাকার এক ৫৮ বছর বয়সী হোমিওপ্যাথি চিকিৎসক রয়েছেন। গত কয়েকদিন ধরেই ওই চিকিৎসক জ্বর ও অন্যান্য উপসর্গ নিয়ে কাবু হয়ে রয়েছেন। তিনি বর্তমানে বাড়িতেই রয়েছেন বলে জানা গেছে। গত কয়েকদিন ধরে জ্বর না কমায় ২৩ তারিখ তিনি সবং হাসপাতালে নমুনা দিয়েছিলেন। শনিবার তাঁর পজিটিভ এসেছে।
এদিন বিষ্ণুপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের মির্জাপুর এলাকায় ২৮ বছর বয়সী এক যুবকের পজিটিভ রেজাল্ট এসেছে। জানা গেছে ওই যুবক তিন দিন আগে ম্যাঙ্গালোর থেকে এসেছেন। যেহেতু বাইরে থেকে এসেছিলেন তাই নমুনা পরীক্ষা করতে দিয়েছিলেন। এর কোনো উপসর্গ না থাকলেও পজিটিভ এসেছে।
একই ভাবে মির্জাপুরের যুবকের সাথেই বাড়ি ফিরছিলেন নওগাঁ গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার বড়সাহারা গ্রামের নিজের ফিরেছিলেন ৫২ বছরের ব্যক্তি। জানা গেছে ম্যাঙ্গালোর থেকে ব্যাঙ্গালুরু থেকে ট্রেন ধরেছিলেন সবংয়েরই মোট চারজন যার মধ্যে ২জন টেস্ট করান এবং দুজনেই পজিটিভ এসেছে। বাকি ২জন টেস্ট করাননি। অবিলম্বে ওই দুজনকে টেস্ট করাতে উদ্যোগ নিচ্ছে প্রশাসন।
শনিবারের চতুর্থ যে আক্রান্ত ব্যক্তির খোঁজ মিলেছে তিনি দেভোগ গ্রাম পঞ্চায়েতের জুলকাপুর গ্রামের ৪৫ বছরের এক ফেরিওয়ালা। ইনি গ্রামে গ্রামে থালা বাসন ইত্যাদি ফেরি করতেন। কয়েকদিন ধরেই শরীর অসুস্থ ছিল তার। প্রথম দফায় এর ফলাফল অমীমাংসিত আসলেও শনিবার পজিটিভ এসেছে। শনিবারের এই চারজনের হিসাব ধরলে এখনও অবধি মোট ১৫ জন আক্রান্তের সন্ধান মিলল সবং এলাকা থেকে আর তার মধ্যে সবং ও দেভোগ গ্রাম পঞ্চায়েতে ৪ জন করে আক্রান্তের সন্ধান মিলেছে। চাউলকুড়ি গ্রাম পঞ্চায়েতে ৩ জন আক্রান্তের সন্ধান মিলেছে। বাকি চারটি নারায়নবাড়, বিষ্ণুপুর, নওগাঁ এবং মোহাড় গ্রামপঞ্চায়েতে এখনও অবধি একজন করে আক্রান্তের সন্ধান মিলেছে। সব মিলিয়ে সবং থানা এলাকায় মোট আক্রান্তের সংখ্যা ১৫ ছুঁয়ে গেল এদিন।
সবংয়ে কি গোষ্ঠি সংক্রমন শুরু হয়েছে? এই প্রশ্নের উত্তর দেওয়ার মত নিখুঁত পর্যবেক্ষন করা হয়নি কিন্তু বিপদের যে কারনটি স্পষ্ট করে ধরা পড়েছে তা হল প্রচুর মানুষ উপসর্গহীন করোনা বাহক হয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছেন। যেমন যে ফেরিওয়ালা দেভোগের জুলকাপুরে আক্রান্ত হলেন তিনি কোথায় কোথায় ফেরি করেছেন কাকে কাকে জিনিস বিক্রি করেছেন এবং তাঁর ফলে কেউ আক্রান্ত কিনা কেউ জানেনা। নারায়নবাড়ের চিকিৎসক কোথাও বেরুতেন না অথচ আক্রান্ত হলেন। নিশ্চিতভাবেই তার কাছে চিকিৎসা করাতে এসেছিলেন এমন কারুর দ্বারা তিনি আক্রান্ত। তিনি আবার চিকিৎসা করতে গিয়ে কাকে আক্রান্ত করেছেন কেউ জানেনা।
সব চেয়ে বড় উদাহরন হল চাউলকুড়ির নেধুয়া গ্রামে আক্রান্ত ১বছরের শিশু! বাবা মা কেউ আক্রান্ত হননি অথচ শিশুটি কি করে আক্রান্ত হল? স্বাস্থ্য দপ্তর এখনো উত্তর পাননি। তার বাবা মার নমুনা নেওয়া হয়েছে। যদি তাঁদের কারও পজিটিভ আসে বুঝতে হবে তিনি উপসর্গ হীন করোনা বাহক এবং অন্য কোথাও থেকে আক্রান্ত। যদি তাই হয় তবে তৃতীয় ব্যক্তি কে? যদি না হয় তবে আরও মারাত্মক বুঝতে হবে তৃতীয় কোনো শিশুকে স্পর্শ করেছে। এভাবেই এই তৃতীয় ব্যক্তি ঘুরে বেড়াচ্ছেন নিজের অজান্তে উপসর্গ বিহীন করোনা বাহক হয়ে। করোনা বিধি না মানলে, মাস্ক, হাত ধোয়া, সামাজিক দূরত্ব না মানলে বিপদ আরও বাড়বে।
সবং সম্পর্কিত যাবতীয় তথ্য এবং সত্য জানতে লাইক করুন দ্য খড়গপুর পোস্টের ফেসবুক পেজ।