ওয়েব ডেস্ক : এক ঘরে পরে রয়েছে বৃদ্ধা মায়ের নিথর পচাগলা দেহ। তার ঠিক পাশের ঘরেই গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মঘাতী হয়েছে ছেলে শুভময়। বৃহস্পতিবার সকাল থেকেই এলাকায় পচা গন্ধ পান স্থানীয় বাসিন্দারা। সন্দেহের বশে এলাকারই এক বাসিন্দা বছর ৮৮ -মঞ্জুশ্রী মিত্র ও তাঁর ছেলেকে ডাকাডাকি করে প্রতিবেশীরা। কিন্তু কিছুতেই সাড়া শব্দ না মেলায় তড়িঘড়ি পুলিশে খবর দেওয়া হয়। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পাটুলি থানার পুলিশ পৌঁছে দরজা ভেঙে উদ্ধার করে মা ও ছেলের পচাগলা দেহ। ঘটনায় রীতিমতো হতভম্ব পাটুলি থানা এলাকার কানুনগো পার্ক এলাকার বাসিন্দারা। দেহ দুটি উদ্ধার করার পর এদিন রাতেই ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে।
জানা গিয়েছে, দীর্ঘদিন ধরে ছেলে শুভময়কে নিয়ে কানুনগো পার্কের ওই বাড়িতে থাকতেন বছর মঞ্জুশ্রীদেবী। লেক মার্কেটে একটি দোকান ঘর ভাড়া নিয়ে সেখানেই দীর্ঘদিন যাবৎ বইয়ের দোকান চালাতেন মঞ্জুশ্রী দেবীর স্বামী। কিন্তু তিনি মারা যাবার পর ছেলে শুভময় ওই দোকান চালাতেন। ওই ছোট্ট দোকানি ছিল মিত্র পরিবারের একমাত্র আয়ের উৎস। কিন্তু কয়েক মাস আগে ভাড়ার সেই দোকানের দখল হারিয়ে চরম আর্থিক সঙ্কটে পড়েন শুভময়। এদিকে অসুস্থ। তাঁর খাবার ও ওষুধের নিয়মিত প্রয়োজন। ফলে পুরসভায় চুক্তিভিত্তিক শ্রমিকের কাজ নেন শুভময়। কিন্তু কিছুদিন সেখানে কাজ করার পর সেই কাজটিও হারান তিনি।
স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি, এই ঘটনার পর থেকেই রাস্তাঘাটে বেরোনো প্রায় বন্ধই করে দিয়েছিল শুভময়। এমনকি গত ৭ দিনের মধ্যে একবারও মা ও ছেলেকে বাইরে বের হতে দেখা যায়নি। এরপরই বৃহস্পতিবার রাতে মা ছেলের পচাগলা দেহ উদ্ধার করে পুলিশ। তবে ঘটনায় পুলিশের তরফে জানানো হয়েছে, যেহেতু দেহের পাশ থেকে কোনও সুইসাইড নোট পাওয়া যায়নি। সেহেতু পুলিশের প্রাথমিক তদন্তে অনুমান, তিন-চারদিন আগে অসুস্থতার কারণেই মঞ্জুশ্রী দেবীর মৃত্যু হয়েছে। পাশাপাশি পুলিশের অনুমান, একদিকে চরম অর্থ সংকট, অন্যদিকে মায়ের মৃত্যু মেনে নিতে না পেরে মায়ের মৃত্যুর পর পরই গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মঘাতী হয়েছে ছেলে শুভময়। ঘটনারতদন্তকারী পুলিশ আধিকারিকদের মতে, ময়নাতদন্তের রিপোর্ট হাতে পেলেই দু’জনের মৃত্যুর আসল কারণ জানা যাবে।