Homeসাহিত্যরবিয়াণীএকটি হলুদ রবিবারে

একটি হলুদ রবিবারে

✍️কলমে: আশিস মিশ্র

(পর্ব–১৫)

হঠাৎ কী মনে হলো, আমাদের রবিবারের হলুদ আড্ডাটি বুধবারে হয়ে গেল। আর সবকিছু যেন জোগাড় করতে বন্ধুদের কোনো সমস্যা হলো না। শিশির, বিপ্লব,সায়ন,বিশ্বজিৎ। আর সইফুলের মতো তরতাজা চালক। সোজা সমুদ্রের কাছে।
মাস ছয়েক পর এই এতটা পথ চক্কর মারতে মারতে মনে হলো, কোথাও কোনো অতিমারির গল্প নেই! বাসভর্তি মানুষ। বাজার- হাটে ভিড়। যেদিকে চোখ যায়, মানুষের চলাচল। বড়ো প্রাণময় মনে হয়। তবুও এই প্রকৃতিকে সেদিন কেমন অচেনা মনে হলো। জীবনকে মনে হলো একটি ‘কড়চার পাতা’। তাতে কতো টুকরো ঘটনা।
দেখতে দেখতে সন্ধে হয়ে এলো। শুরু হলো ওদের গানের মাতন। সেই গান ” ইয়ে রাতে ইয়ে মৌসম নদী কা কিনারা / ইয়ে চঞ্চল হাওয়া.. “। মনে হলো এই গানের ভাষা যেন আমাদের। যদি এমন করে লিখতে পারতাম। যে চিত্রকল্প জাভেদ আখতার লিখতে পারলেন তা আমরা তো পারতাম কেউ। কিন্তু না। সবাই সবটা পারে না যে। আর এই সহজ কথায় যে সুর দিলেন অানুমালিক তা কোথায় নিয়ে গেলো আমাদের, তা নিয়ে সারারাত আমরা ভেসে চললাম।
কোনো কোনো দিন সমুদ্রের ওপর রাতের ভেসে থাকা মেঘের আড়ালে চাঁদকে অন্যরকম মনে হয়। মনে হয় এ চাঁদ সেই আগের চাঁদ নয়। এ চাঁদের যেন আজই জন্ম হলো। আর জন্মের পরেই সে যুবক বা যুবতী হয়ে উঠেছে। এই অপরূপ রাতের নিসর্গ দেখলে কতোকিছু মনে পড়ে।
একদিন এমন চাঁদ মাখা সমুদ্র দেখে নিশ্চিত শক্তি চট্টোপাধ্যায়ও বীচে শুয়ে পড়েছিলেন। “কক্সবাজারে সন্ধ্যা “লেখা হয়েছিল তাঁরই হাত দিয়ে।
এমন দৃশ্য কেবল তাঁর কথাই মনে করায়। মনে পড়ছে, তিনিও যেন আমাদের সঙ্গে আজ রয়েছেন। ওই তো অন্ধকারে টলোমলো পায়ে জলের দিকে হেঁটে যাচ্ছেন,আর গাইছেন –”… ক্ষণে ক্ষণে আপনমনে মনে আমায় থাকতে দে না…”।
আমরা সবাই তখন গলা ছেড়ে বলে চলেছি–” তীরে কী প্রচন্ড কলরব / জলে ভেসে যায় কার শব/ কোথা ছিল বাড়ি/ রাতের কল্লোল শুধু বলে যায় / আমি স্বেচ্ছাচারী…”।
আজ আমরা সবাই স্বেচ্ছাচারী। একএকদিন এমন না হলে জীবন পানসে মনে হয়…

(চলবে)

RELATED ARTICLES

Most Popular