নিজস্ব সংবাদদাতা: করোনা মোকাবিলায় লকডাউনে বিপদে পড়েছেন গরীব, খেটে খাওয়া মানুষ। তাঁদের ত্রান দিতে পথে নেমেছেন বহু ব্যক্তি, সংগঠন। এঁদের মধ্যে শাসকদলের নেতারাও আছেন। কেউ কেউ বস্তা বস্তা চাল ডাল আলু বিলি করছেন। কিন্তু এত টাকা পাচ্ছেন কোথায়? কোনও কোনও নেতার নয় নিজের ব্যবসা আছে, আয় আছে । কিন্তু বাকিরা ? আভিযোগ উঠেছে ‘কাটমানি’র কিছুটা দান করছেন কেউ কেউ। আবার কেউ কেউ নাকি রেশন দোকান , আলুর গোডাউন বা ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে বন্দোবস্ত করেই দান করছেন। সামনেই ভোটের বাজার তাই আবার ভাবি বিধায়ক বা কাউন্সিলর পদে প্রার্থী হওয়ার জন্যই ত্রানে মেতেছেন এমন টিপ্পনীও আসছে কিন্তু তা বলে রেশন দোকান থেকেই লুট ?
হ্যাঁ এমনই এক ঘটনায় বস্তা বস্তা ত্রাণ লুটের অভিযোগ তৃণমূল কাউন্সিলরের বিরুদ্ধে। অভিযুক্ত ওই তৃণমূল কাউন্সিলর উত্তর দমদম পুরসভার ২১ নম্বর ওয়ার্ডের। নাম অঞ্জু মিশ্র। রেশন দোকান মালিকদের সংগঠনের মাধ্যমে খবরটি কানে যায় খাদ্যমন্ত্রীর। এরপরেই পুলিশ হানা দেন ওই নেত্রী ও তাঁর সঙ্গীদের বাড়িতে।ঘটনাস্থল উত্তর দমদম পুরসভায় ২১ নম্বর ওয়ার্ডের শ্রীনগর। এখানকারই রেশন দোকান থেকে স্থানীয় তৃণমূল কাউন্সিলর ও তাঁর সঙ্গীরা কোনও দাম না দিয়ে একরকম ১০ বস্তা চাল তুলে আনেন বলে অভিযোগ। রেশন দোকানের মালিক ক্যান্সারের রোগী হওয়ায় সেরকম কোনও প্রতিবাদ করতে পারেননি।
সূত্রের খবর অনুযায়ী, এই চাল লুটের খবর রেশন ডিলারদের সংগঠন অল ইন্ডিয়া ফেয়ার প্রাইস শপ ডিলার্স অ্যাসোসিয়েশনের মাধ্যমে খাদ্যমন্ত্রীর কাছে যায়। সঙ্গে সঙ্গে তিনি ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দেন। পুলিশও হানা দেয় অভিযুক্ত কাউন্সিলর ও তাঁর সঙ্গীদের বাড়িতে।বিষয়টি নিয়ে সাফাই দিতে নেমে পড়ে স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্ব। স্থানীয় তৃণমূল সভাপতির দাবি কাউন্সিলর এই কাজে জড়িত নন। পাশাপাশি তাঁর আরও দাবি, কাউন্সিলরের বদনাম করতেই এই অভিযোগ তোলা হয়েছে।
রেশন ডিলারদের সংগঠনের অভিযোগ, তৃণমূল নেতারা জেলায় জেলায় রেশন ডিলারদের থেকে জোর করে ত্রাণ সামগ্রী নিয়ে নিচ্ছেন। সেই তালিকায় মূলত থাকছে চাল, ডাল। এরপর সেই সামগ্রী ত্রাণের নামে তারা বিলি করে বেড়াচ্ছেন বলে অভিযোগ। এই পরিস্থিতি চলতে থাকলে পরিস্থিতি গুরুতর হয়ে উঠতে পারে বলেও হুঁশিয়ারি দিয়েছে রেশন ডিলারদের সংগঠন।
মঙ্গলবারই প্রেস কনফারেন্সে মমতা ব্যানার্জী সতর্ক করেছিলেন রেশন দোকানগুলিকে। তিনি এও বলেছিলেন কোনও কোনও নেতা রেশন ডিলারদের কাছ থেকে খাদ্যশষ্য নিয়ে যাচ্ছেন বিলি করবেন বলে। এটা করা যাবেনা। রেশনের দ্রব্য রেশন দোকান থেকেই দিতে হবে। এদিনই বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ বলেছেন, রেশনের দ্রব্য লুট হচ্ছে এবং লুট করছে তৃণমূলের নেতারাই।