নিজস্ব সংবাদদাতা: ১মে শুরু হয়েছে সরকারের দ্বিতীয় দফার রেশন বিতরন। লকডাউনের বাজারে আপামরের জন্য বিনামূল্যে রেশন বিতরনের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন রাজ্য ও কেন্দ্র। দু’তরফেই এবার অধিক মাত্রায় রেশন দেওয়ার কথা ঘোষণা করা হয়েছে। সেই মত খড়গপুর শহরের মালঞ্চর ১৪নম্বর ওয়ার্ডে রেশন নিতে গিয়ে হতবাক বাসিন্দারা। দেওয়ালে ঝুলছে পশ্চিমবঙ্গ সরকারের খাদ্য দপ্তরের ফেস্টুন যেখানে বলা হচ্ছে, ” সরকার ও সরকার অনুমোদিত প্রতিষ্ঠানের কর্মচারী, সরকারি পেনশন ভোগী, মাসিক আয় ১০ হাজার টাকার ওপর, সরকার বা সরকার অনুমোদিত প্রাইমারি, আপার প্রাইমারি,উচ্চ মাধ্যমিক স্কুলের শিক্ষক শিক্ষিকা, করদাতা ব্যবসায়ী, ৫ একরের উর্ধে কৃষিজমির মালিক, চারচাকা গাড়ির মালিক, এছাড়াও আর্থিক ভাবে স্বচ্ছল ব্যক্তিরা ও মৃত ব্যক্তির পরিবার তাঁদের ২ টাকা কেজির রেশন কার্ড সমর্পণ করুন অন্যথায় সরকার তা বাজেয়াপ্ত করবে।” ফেস্টুনের নিচে লেখা খাদ্য ও সরবরাহ বিভাগ দ্বারা প্রচারিত। সাত সকালে রেশন নিতে আসা বহু ব্যক্তি এই ফেস্টুন দেখে বিভ্রান্ত হয়ে ফিরে গেছেন এমনটাই অভিযোগ স্থানীয় কাউন্সিলারের।
ঘটনা হল বর্তমান পরিস্থিতিতে এরকম কোনও নির্দেশ সরকারের নেই বরং রাজ্য সরকার এবং মূখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি স্বয়ং ঘোষনা করেছেন সবাই রেশন পাবেন। তাহলে এই ফেস্টুন লাগাল কে? খড়গপুর শহরের ভার প্রাপ্ত খাদ্য পরিদর্শক সৌম্য চ্যাটার্জি বলছেন, ‘আমরা কোনও এরকম ফেস্টুন টাঙাইনি আর সরকারের এমন কোনো নির্দেশ নেই। শুনেছি কোনো এক রাজনৈতিক দলের কেউ এটা করেছেন।’
একই সঙ্গে লাগোয়া চারটি রেশন দোকান এখানে, পাঁচ হাজারেরও বেশি কার্ড। এঁদের একজন ডিলার স্বপ্না ধর যার দোকান পরিচালনা করেন তাঁরই কন্যা পাঞ্চালি সামন্ত জানালেন, শৈবালদারা এসে টাঙিয়ে গেছে। কে শৈবাল? জানা গেল, শৈবাল চ্যাটার্জি। স্থানীয় তৃণমূল নেতা এবং খড়গপুর শহর বিধায়ক তথা পুরপ্রধানের একেবারে কাছের লোক যাকে ডান হাত বলা হয়।
শৈবাল স্বীকার করে নিয়েছেন যে এই ফেস্টুন তিনিই দিয়েছেন কারন তিনি চেয়েছিলেন যাতে প্রকৃত উপভোক্তারা সঠিক পরিমানে রেশন পাক। কিন্তু প্রশ্ন হল কে সঠিক উপভোক্তা আর কে নয় এটা ঠিক করার তিনি কে? তাছাড়া খাদ্য দপ্তর বলছে সরকারের এমন কোনো নির্দেশ নেই বরং বর্তমান অবস্থায় সরকার বলছেন সবাই রেশন পাওয়ার যোগ্য।
এলাকার কাউন্সিলর কংগ্রেসের রীতা শর্মা দাবি করেছেন, ‘এলাকার রেশন ডিলারদের সঙ্গে পরিকল্পনা করেই ওই ফেস্টুন টাঙিয়ে ছিল তৃণমূল নেতারা উদ্দেশ্য ছিল চাল গম আটা নিতে আসা মানুষরা ফিরে যাবে আর সেই সব নিজেদের মধ্যে ভাগাভাগি করে নেবে দুপক্ষ।’ ঘটনার খবর পেয়ে এলাকায় পুলিশ যায়। বেআইনি এই কাজের অপরাধে পুলিশ তুলে আনে শৈবাল চ্যাটার্জি ও আরও একজনকে। জানা যায় এ নিয়ে বিস্তর জল ঘোলা হয় থানায় এবং পরে ছেড়ে দেওয়া হয় তাদের।