নিজস্ব সংবাদদাতা: ত্রান দেওয়া হচ্ছে একজনকে তো ত্রান দিচ্ছেন ১৫জন। কোথাও আবার ত্রান দেওয়ার পর দুঃস্থ মানুষটির সাথে দাঁড়িয়ে লম্বা একটা সেলফি। করোনা আক্রমনে ছিন্নভিন্ন জীবন। রাস্তায় নামতে হয়েছে পরিস্থিতির শিকার হয়ে আজ সে দান গ্রহীতা। আর তার সুযোগ নিয়ে কেউ কেউ দু-পয়সা বা দু’কিলো চাল দিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় হিরো সাজতে চাইছেন। নেতারা আবার ট্যাঁকে মিডিয়াকে গুঁজে নিয়ে ত্রান করতে দৌড়াচ্ছেন । এক অবর্ননীয় অমানবিক ছবির সামনে দুনিয়া। দুঃসময়ে সাধারণ মানুষ থেকে সেলিব্রিটি অনেকেই দরিদ্র ক্ষুধার্ত মানুষদের অন্ন-বস্ত্র দিয়ে সাহায্য করে থাকেন। আবার সেই ছবি বা ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্টও করেন অনেকে। এই ছবি পোস্ট করা নিয়ে বহু মহল থেকে প্রশ্ন উঠেছে। প্রশ্ন হল এটাই যে, তবে কী প্রচারের জন্যই দানকার্য?
এবার এই বিষয়ে কড়া পদক্ষেপ নিল রাজস্থানের রাজ্য সরকার। গরীব মানুষদের সাহায্য করে তার ছবি তুলে সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করা নিষিদ্ধ করা হল। এদিন মুখ্যমন্ত্রী অশোক গেহলট জানিয়েছেন, “এই দুঃসময়ে দরিদ্র মানুষদের পাশে থাকা আমাদের কর্তব্য। কিন্তু সেটার ছবি তুলে নিজেদের প্রচার প্রতিযোগিতার বিষয় নয়।”
এই প্রথম কোনও রাজ্যে এই বিষয়ে প্রশাসনিক পদক্ষেপ নেওয়া হল। ইতিমধ্যেই রাজ্য সরকারের তরফ থেকে বিজ্ঞপ্তি জারি করে বলা হয়েছে যে, খাদ্যদ্রব্য দেওয়া বা যে কোনও প্রয়োজনে আর্ত মানুষকে সাহায্য করলে তার কোনও ছবি তোলা বা শেয়ার করা যাবে না। করোনার এই পরিস্থিতিতে দুঃস্থদের পাশে অনেকেই দাঁড়াচ্ছেন। কিন্তু ছবি তুলে প্রচার আর করা যাবে না রাজস্থানে। আর যদি এমন ছবি দেখা যায় তবে আইনি শাস্তির মুখে পড়তে হবে দাতাকে।
রাজস্থান সরকারের এই সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছেন বুদ্ধিজীবী থেকে মনোবিদরা। জানিয়েছেন, বিপর্যয়গ্রস্থ মানুষকে ত্রান দেওয়ার এই ছবি গোটা সমাজের সামনে বিপদগ্রস্ত মানুষটিকে ছোট করে দেয়। আর ত্রান দেওয়ার থেকে ত্রান দেওয়ার মহিমাকে বড় করে দেখায়। ত্রান কোনও সমাধান নয়, আপৎকালীন একটা ব্যবস্থা মাত্র। একসময় মানুষ বিপদ কাটিয়ে স্বনির্ভর হয়ে ওঠেন তখন ত্রানের ছবিটা তাকে হীনমন্যতায় ভোগায়, তাঁর যন্ত্রনা হয়ে বেঁচে থাকে। তাই ত্রান দেওয়া বা নেওয়ার ছবি তোলাই উচিৎ নয় । শুধু আপলোড নয়, ত্রান দেওয়ার সময় ছবি তোলাই নিষিদ্ধ করা উচিৎ ।