অশ্লেষা চৌধুরী: চোরা পথে পাচার হচ্ছে বহুমূল্য লাল চন্দন কাঠ, খবর পেয়েই ফাঁদ পাতেন বনকর্মীরা। ব্যস সাফল্য এল হাতেনাতে। এক পাচারকারীকে আটক করা সমেত ৬০ লক্ষ টাকা মূল্যের লাল চন্দন কাঠ উদ্ধার করলেন তারা। ঘটনাটি আলিপুরদুয়ার জেলার বীরপাড়া চা বাগানের। শনিবার মরাঘাট রেঞ্জের বনকর্মী ও এসএসবি ১৭ ব্যাটেলিয়ানের যৌথ অভিযানে আলিপুরদুয়ার জেলার বীরপাড়া চা বাগানের ৫ নং লাইনের এক বাসিন্দার বাড়ী থেকে উদ্ধার হল প্রায় সাড়ে তিন ক্যুইন্টাল লাল চন্দন কাঠ। মরাঘাট রেঞ্জ সূত্রের খবর, পাচারকারীর নাম অমিত বাড়া।
জানা যায়, কিছুদিন ধরেই বনকর্মীদের কাছে গোপন সূত্রে খবর আসছিল, চোরা পথে পাচার হচ্ছে বহুমূল্যবান লাল চন্দন কাঠ। সেই খবরেই নড়েচড়ে বসেন তারা, সেইসাথেই পাচারকারীর জন্য ফাঁদও পাতেন তাঁরা। আর তাতেই কুপোকাৎ পাচারকারী।
জানা গিয়েছে, কয়েকদিন আগে লাল চন্দন কাঠের টুকরো দেখাতে আসেন এক পাচারকারী। খদ্দের সেজে সেখানে হাজির ছিলেন বন দফতরের এক কর্মী। কেনার বাহানায় কাঠের টুকরো পরীক্ষা করে দেখে নেন তিনি। তাঁদের আশঙ্কাই সত্যি হয়। দেখা যায় দামী লাল চন্দন কাঠ পাচার হচ্ছে এভাবেই। এরপর শনিবার সন্ধ্যায় ফের খদ্দের সেজে সেই বনকর্মী হাজির হন বীরপাড়ার ৫ নং লাইনের এক বাড়ীর সামনে। এদিকে পাচারকারীদের হাতেনাতে ধরতে তৈরি ছিল মরাঘাট রেঞ্জের বনকর্মী ও ফালাকাটা এসএসবি জওয়ানরা। তারপর হাতনাতে চন্দন কাঠ সহ ধরা পড়ে পাচারকারী। ঘটনাস্থল থেকে উদ্ধার হয় প্রায় সাড়ে তিন ক্যুইন্টাল লাল চন্দন কাঠ।
মরাঘাট রেঞ্জের রেঞ্জার রাজকুমার পাল জানান, “খদ্দের সেজে আমরা প্রথমে কাঠের নমুনা সংগ্রহ করি। এরপর এদিন সন্ধ্যায় ফালাকাটা ১৭ এসএসবি জওয়ানদের সাথে যৌথভাবে অভিযান চালিয়ে কয়েক লক্ষ টাকার লাল চন্দন কাঠ উদ্ধার করা হয়। একজনকে ঘটনাস্থল থেকে গ্ৰেপ্তার করা হয়েছে। রবিবার তাকে আদালতে তোলা হবে।” এই পাচার-চক্রের সঙ্গে বড় কোনও হাত থাকতে পারে সন্দেহ করছেন তাঁরা।
উল্লেখ্য, নদীপথকে হাতিয়ার করে এর আগেও বহুবার কাঠ পাচারের ঘটনা ঘটেছে। মূলত নদী পথ গুলোকেই পাচারের সুরক্ষিত করিডর হিসেবে ব্যবহার করে পাচারকারীরা। তবে বন দপ্তরও বেশ সজাগ হয়েই কাজ নিজেদের কাজ করে থাকেন। ধরাও পরে বহু মূল্যবান সেগুন, টিক ইত্যাদি কাঠ। আর এবারেও বন দপ্তরের সক্রিয়তায় বহু মূল্যবান লাল চন্দন কাঠ পাচারের আগেই উদ্ধার করা সম্ভব হল।