নিজস্ব সংবাদদাতা: লাল সতর্কতা জারি করা হল দিঘায়। জানা গেছে ঝড়ের অভিমুখ দিঘা থেকে পশ্চিমে ওড়িশা উপকূলে হলেও দিঘায় ঘূর্ণিঝড় ‘যশ’য়ের অভিঘাত ভালই পড়বে। সমুদ্র উত্তাল হয়ে উঠবে এবং ঢেউয়ের উচ্চতা ২০ ফুট অবধি উঁচু হতে পারে। দিঘা উপকূলের পরিস্থিতি নজরদারি করার জন্য ইতিমধ্যেই সেখানে পৌঁছে গেছেন রাজ্যের সেচমন্ত্রী সৌমেন মহাপাত্র। আগামী কয়েকটা দিন দিঘার কন্ট্রোল রুমে থাকছেন তিনি। সোমবার দিঘায় পৌঁছেই তিনি জানিয়েছেন, আগামী তিন দিন ঘূর্ণিঝড় তান্ডব চালাতে পারে মাথায় রেখে প্রাণহানি ও সম্পত্তি হানি রুখতে তৎপর রাজ্য সরকার। মুখ্যমন্ত্রী নিজে উপান্নতে থেকে সমস্তটা তদারকি করছেন।”
বিপর্যয় মোকাবিলায় পূর্ব মেদিনীপুর জেলাতে মোতায়েন করা হয়েছে জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীর ৫ টি, রাজ্য বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীর ৩ টি এবং ভারতীয় নৌবাহিনীর বিশেষ দলও। এছাড়াও থাকছে পুলিশের কুইক রেসপন্স টিম এবং ঝড়ে গাছ পড়ে গেলে সেগুলি কেটে রাস্তা পরিষ্কার করার জন্য বিশেষ দল। প্রস্তুত আছে বিদ্যুৎ বিপর্যয় মোকাবিলা টিমও। সোমবারও দিঘার গ্রামে গ্রামে সতর্কতামূলক প্রচার করছে জাতীয় মোকাবিলা বাহিনী। ১৩ জওয়ানের নৌ বাহিনীর বিশেষ দলকেও নামানো হয়েছে দিঘায়। সুরক্ষিত থাকার জন্য নিচু এলাকা ও মাটির ঘরের আশ্রয়ে থাকা মানুষকে নিরাপদ স্থানে সরে যাওয়ার কথা জানানো হয়েছে প্রশাসনের তরফে। ১লক্ষ মানুষকে ১ হাজার শিবিরে সারাতে উদ্যোগী প্রশাসন।
এদিকে ঝড়ের অভিমুখ বদলালেও রাজ্যের দুশ্চিন্তার মধ্যে পূর্ব মেদিনীপুর ছাড়াও থেকে যাচ্ছে পশ্চিম মেদিনীপুর এবং ঝাড়গ্রাম। ভারতীয় আবহাওয়া অধিদপ্তর বা ইন্ডিয়ান মেট্রোলজিক্যাল ডিপার্টমেন্ট (IMD) ইতিমধ্যেই জানিয়েছে ঝড়ের অভিমুখ আরও পশ্চিম এবং পশ্চিম উত্তরে সরে যাচ্ছে। আর সেই থেকে তাঁদের বক্তব্য দিঘা নয় দিঘা থেকে আরও ২০০কিলোমিটার দুরে ওড়িশা উপকূলে
‘যশ’য়ের ল্যান্ডফল বা ভূমিস্পর্শ হতে চলেছে । এরফলে উত্তর ওড়িশার ময়ূরভঞ্জ, ভদ্রক এবং বালেশ্বর মারাত্মক ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হতে চলেছে। স্বভাবিক ভাবেই ঝড়ের প্রভাব পড়তে চলেছে পশ্চিম মেদিনীপুরের মোহনপুর, দাঁতন, বেলদা, কেশিয়াড়ি এবং ঝাড়গ্রাম জেলার নয়াগ্রাম, গোপীবল্লভপুর, সাঁকরাইল, বেলিয়াবাড়া থানা এলাকা।
অন্যদিকে পূর্ব মেদিনীপুর ও পশ্চিম মেদিনীপুরের খড়গপুর মহকুমার প্রতিটি থানা এলাকা জুড়ে ভারী বৃষ্টিপাত হবে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া দপ্তর। ২৫মে থেকে ২৭শে মে এই তিনদিন ধরে মাঝারি ও ভারী বৃষ্টিপাতের পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে দুই মেদিনীপুরেই। সোমবার দুপুর থেকেই পূর্ব ও পশ্চিম মেদিনীপুরের বিভিন্ন এলাকায় বৃষ্টি শুরু হয়েছে যা রাতের দিকে বাড়তে থাকবে। এদিন দুপুরে পিংলা থানার জামানায় প্রবল বৃষ্টি ও ঝড়ে বেশকিছু গাছ ভেঙে পড়েছে।