নিউজ ডেস্ক: রাজ্যে মৃত্যু ও আক্রান্তের নিরিখে নতুন রেকর্ড গড়ল করোনা। দু’দিন ১৬ হাজারের ঘর ছুঁয়ে থাকলেও মঙ্গলবার তা পেরিয়ে গেল সাড়ে ১৬ হাজারের কাছাকাছি। রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরের বুলেটিন অনুযায়ী গত ২৪ ঘণ্টায় রাজ্যে করোনা আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু ৭৩ জনের এবং গত ২৪ ঘণ্টায় রাজ্যে আক্রান্ত হয়েছেন ১৬ হাজার ৪০৩ জন। এক তিলোত্তমাতেই গত ২৪ ঘণ্টায় আক্রান্ত ৩ হাজার ৭০৮ জন ও মৃত্যু ২৪ জনের। এরপরেই রয়েছে উত্তর ২৪ পরগনা, সেখানে আক্রান্তের সংখ্যা গত ২৪ ঘণ্টায় ৩ হাজার ৪৫১ জন ও মৃত ১৩।
রাজ্যে মোট করোনা আক্রান্তর সংখ্যা পৌনে ৮ লক্ষ ছাড়াল। রাজ্যে এখনও পর্যন্ত মোট আক্রান্ত হয়েছেন ৭ লক্ষ ৭৬ হাজার ৩৪৫ জন। মোট মৃতের সংখ্যা দাঁড়াল ১১ হাজার ৮২-তে। রাজ্যে বর্তমানে সক্রিয় করোনা রোগীর সংখ্যা বেড়ে হল ১ লক্ষ ৬ শত ১৫ জন।
করোনার এই বাড়বাড়ন্ত দেখে আরও শয্যা বাড়ানোর সিদ্ধান্ত অ্যাপোলো হাসপাতালের। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, করোনা চিকিৎসার জন্য আরও ৩০০ শয্যা বাড়ানো হচ্ছে। পাশাপাশি সল্টলেকের নারায়ণা নেত্রালয়ে সংযোজন হচ্ছে ৩৫টি শয্যা। করোনার সংক্রমণ ক্রমশ বাড়ায় দিনকয়েক আগে রাজ্য স্বাস্থ্য দপ্তর নির্দেশিকা জারি করে জানায়, বেসরকারি হাসপাতালের ৬০ শতাংশ রাখতেই হবে করোনা রোগীদের জন্য।
পাশাপাশি, আর আহমেদ ডেন্টাল কলেজের নতুন ভবনে চালু হতে চলেছে ১১২ শয্যার কোভিড চিকিৎসা কেন্দ্র। গত বছর করোনা পরিস্থিতিতে এই করোনা চিকিত্সা কেন্দ্র চালু করার পরিকল্পনা করা হয়। এবার লাগামছাড়া সংক্রমণে তা বাস্তবায়িত হতে চলেছে বলে জানিয়েছে রাজ্য। এই ১১২ শয্যার মধ্যে ৮০টি জেনারেল শয্যা ও ৩২টি এইচডিইউ। আর আহমেদ ডেন্টাল কলেজে নতুন কোভিড চিকিৎসা কেন্দ্রের দায়িত্বে এনআরএস মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের চিকিৎসকেরা। সরকারি হাসপাতালের পাশাপাশি, মুকুন্দপুর আমরিতেও বাড়ানো হয়েছে কোভিড শয্যা। মোট ১১০টি কোভিড শয্যা তৈরির পরিকল্পনা রয়েছে। প্রথম ধাপে চালু হয়েছে ৩০টি কোভিড শয্যা।
এমন অবস্থায় এ রাজ্যেও অক্সিজেন সঙ্কটের অভিযোগ উঠছে। মঙ্গলবারেই অক্সিজেনের অভাবে রামপুরহাট সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে ৪ জনের মৃত্যু হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। তবে অভিযোগ উড়িয়ে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের দাবী এর সঙ্গে অক্সিজেন অভাবের কোনও সম্পর্ক নেই। এই পরিস্থিতিতে রাজ্যে অক্সিজেনের অভাব নেই বলে বিজ্ঞপ্তি দিয়ে জানায় রাজ্য সরকার। পাশাপাশি অক্সিজেনের অভাব যাতে না হয়, তাই জন্য রাজ্য সরকার কী কী ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে, সেটাও বিস্তারিতভাবে জানানো হয়েছে বিজ্ঞপ্তিতে।
রাজ্যের তরফে জানানো হয়েছে, ‘রাজ্যের ১০৫টি হাসপাতালে পাইপলাইনের মাধ্যমে অক্সিজেনের ব্যবস্থা আছে। আরও ৪১টি হাসাপাতালে করা হচ্ছে পাইপলাইনের ব্যবস্থা হচ্ছে। রাজ্যে আরও ৫৫টি অক্সিজেন প্ল্যান্ট তৈরি হচ্ছে।’পাশাপাশি পরিস্থিতি সামাল দিতে হাসপাতালগুলিকে বাড়তি সুবিধা দিয়ে বিজ্ঞতিতে বলা হয়েছে,‘হাসপাতালগুলি প্রয়োজনে অক্সিজেনের পাইপলাইন সম্প্রসারণ করতে পারবে’। এছাড়া অক্সিজেন সরবরাহে এলাকাভিত্তিক নিষেধাজ্ঞা শিথিল করা হয়েছে বলেও রাজ্যের তরফে জানানো হয়েছে।