নিউজ ডেস্ক: কিছুদিন আগে নির্বাচন কমিশন ভোটের দিন ঘোষণা করেছে। আর এই ভোটের মুখেও দলবদলের হিড়িক চলছে, বিশেষ করে শাসকশিবিরে ধস নামছে একের পর এক। যা গত শুক্রবার প্রার্থী তালিকা প্রকাশের পর আরও বৃদ্ধি পেয়েছে।
অনেকেই ভোটের টিকিট পায়নি। ভোটের টিকিট না পেয়ে শাসকদল তৃণমূল কংগ্রেসের একাধিক নেতা মন্ত্রী এখন পা বাড়িয়ে যাচ্ছেন বিজেপি শিবিরের দিকে। তবে এবার অন্যদলে পা বাড়ানো নয়, নিজের মন্ত্রিপদ থেকে ইস্তফা দিলেন রত্না ঘোষ কর। সূত্রের খবর, রবিবার রাতে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে ইস্তফা পাঠিয়ে দিয়েছেন তিনি। তবে তিনি মন্ত্রিত্বে ইস্তফা দিলেও বিধায়ক পদে ইস্তফা দিচ্ছেন না।
তবে চাকদার এই বিধায়ক দল ছাড়ার বিষয়েও কোনও সিদ্ধান্ত নেননি। গত বিধানসভাতেই চাকদায় জয়লাভ করে সদ্য পদত্যাগী এই প্রতিমন্ত্রী। প্রথমে মন্ত্রিসভায় ঠাঁই না পেলেও পরে ক্ষুদ্র -মাঝারি শিল্প দফতরের প্রতিমন্ত্রী করা হয় তাঁকে। কিন্তু মন্ত্রী হিসেবে তাঁর কাজকর্মে খুশি ছিলেন না মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এমনকী স্থানীয় বাসিন্দারা ক্ষুব্ধ ছিলেন।
গত ৫ বছরে বিধায়ক উপরন্তু মন্ত্রী থেকেও এলাকার জন্য কোনও উন্নয়নমূলক কাজকর্ম করেননি বলে তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছিল। স্থানীয় বাসিন্দাদের পাশাপাশি দলের নিচুতলার নেতা-কর্মীরাও রত্না ঘোষের কাজকর্ম নিয়ে ক্ষোভ উগরে দিয়েছিলেন।
প্রসঙ্গত,বর্তমান সরকারের যে পাঁচ মন্ত্রী টিকিট পাননি তাদের মধ্যে অন্যতম রত্না। তিনি ছিলেন রাজ্যের ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প দফতরের প্রতিমন্ত্রী। তাঁর জায়গায় এবারে শাসকদলের প্রার্থী হয়েছেন রানাঘাট উত্তর-পশ্চিমের বিধায়ক শঙ্কর সিংহের ছেলে শুভঙ্কর সিংহ ওরফে যীশু।
একইসঙ্গে তৃণমূল থেকে আজ ইস্তফা দিলেন জেলা পরিষদ সদস্য সুভাষ রায়ও। প্রার্থী নিয়ে অসন্তোষের জেরে দল ছেড়েছেন শিলিগুড়ির তৃণমূল নেতা নান্টু পালও। ওম প্রকাশ বাবুকে প্রার্থী করার পরই বেসুরো গাইতে শুরু করেন নান্টু পাল। তিনি জানান, এটা তিনি কিছুতেই মানতে পারছেন না। তাঁর বক্তব্য, ‘শিলিগুড়ির বাসিন্দা এমন কাউকেই এবার প্রার্থী করার দাবী ছিল। কিন্তু দল সেটা মানেনি। তাই নির্দল প্রার্থী হিসেবে ভোটে দাঁড়াব।’ রবিবার দুপুরে অরূপ বিশ্বাস, গৌতম দেব নান্টু বাবুকে মৈনাকে ডাকেন। সেখানে তাঁদের মধ্যে কথা হয়। তাঁরা নান্টু বাবুকে বলেন, ‘তুমি এই মুহূর্তে অন্য দলে যেওনা।’ তখন নান্টুবাবু তাঁদের বলেন, ‘আমি অন্য দলে যাব কি না, সেটা পরে ঠিক করব। তবে নির্দল প্রার্থী হিসেবে ভোটে দাঁড়াচ্ছি।’
উল্লেখ্য, তৃণমূলের প্রার্থী তালিকা ঘোষণা হতেই বিভিন্ন জায়গায় অসন্তোষ দেখা গিয়েছে। ভাঙরে আরাবুল ইসলাম, জটু লাহিড়ী, সিঙ্গুরের মাস্টারমশাই, সোনালী গুহর মতো নেতারা টিকিট না পেয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। কেউ দল ছাড়ছেন, কেউ হুমকি দিচ্ছেন। উত্তরবঙ্গ থেকে দক্ষিণবঙ্গ একই ছবি দেখা যাচ্ছে। আর সেই তালিকায় জূড়ল আরও এক জনের নাম।