নিউজ ডেস্ক: গ্লোবাল টিচার অ্যাওয়ার্ডে ভূষিত হলেন প্রাথমিক শিক্ষক, পেলেন সাত কোটি টাকার পুরষ্কার। প্রথমবার কোনও ভারতীয় বিশ্বের সেরা শিক্ষক হওয়ার গৌরব অর্জন করেছেন। জানা গিয়েছে, মহারাষ্ট্রের সোলাপুর জেলা পরিষদ বিদ্যালয়ের এক প্রাথমিক শিক্ষক সাত কোটি টাকা পুরষ্কার পেয়েছেন। বিজয়ি শিক্ষকের নাম রঞ্জিত সিং ডিসালে, বয়স ৩২ বছর। গ্লোবাল টিচার অ্যাওয়ার্ডের জন্য নির্বাচিত হওয়ার পরে রঞ্জিত সিং ডিসালে এই বিশাল পুরষ্কারের অর্থ পেয়েছেন।
ইউনেস্কো এবং লন্ডন ভিত্তিক ওয়ার্কি ফাউন্ডেশন কর্তৃক প্রদত্ত গ্লোবাল টিচার পুরস্কার বৃহস্পতিবার ৩ ডিসেম্বর ঘোষণা করা হয়েছে। সোলাপুর জেলার পারিতেবাদী জেলা পরিষদ বিদ্যালয়ের শিক্ষক রঞ্জিত সিং ডিসালে এই পুরষ্কারটি জিতেছেন। লন্ডনের ন্যাচারাল হিস্ট্রি মিউজিয়ামে আয়োজিত একটি অনুষ্ঠানে বিখ্যাত চলচ্চিত্র অভিনেতা স্টিফেন ফ্রায় এই পুরষ্কার ঘোষণা করেন। এই প্রতিযোগিতায় বিশ্বের ১৪০ টি দেশের ১২ হাজারেরও বেশি শিক্ষক অংশ নিয়েছিলেন। রণজিৎ সিং মেয়েদের শিক্ষার প্রচার এবং দেশে দ্রুত-প্রতিক্রিয়া (কিউআর) কোডেড পাঠ্যপুস্তক বিপ্লবকে ত্বরান্বিত করার প্রচেষ্টার জন্য এই পুরষ্কার পেয়েছেন।
২০১৪ সালে, ওয়ার্কি ফাউন্ডেশন প্রতিষ্ঠিত বার্ষিক পুরষ্কারের জন্য বিশ্বজুড়ে ১০ জন চূড়ান্ত প্রার্থী নির্বাচিত হয়েছিল। এই সম্মানটি এমন একজন উজ্জ্বল শিক্ষককে দেওয়া হয় যিনি শিক্ষাক্ষেত্রে তাঁর অসামান্য অবদান রেখেছেন। এই কৃতিত্বের জন্য মহারাষ্ট্রের রাজ্যপাল ভগত সিং কোশিয়ারিও রঞ্জিত সিংকে অভিনন্দন জানিয়েছেন।
ডিসালে নারী শিক্ষা এবং শিক্ষায় কিউআর কোডের ব্যবহার নিয়ে অবিস্মরণীয় কাজ করেছেন। প্রত্যন্ত এলাকার ছাত্র-ছাত্রীদের জ্ঞানের আলো দেখিয়েছেন৷ তিনি মনে করেন, শিক্ষকই হল আসল পরিবর্তনের কান্ডারী, যে তার ছাত্র-ছাত্রীদের জীবনকে পরিবর্তন করে নতুন সমাজ গঠন করতে পারে। ১৪০ টি দেশ থেকে প্রায় ১২ হাজার শিক্ষক শিক্ষিকা অংশগ্রহণ করেছিলেন। ফাইনালে গিয়েছিল ১০ জন। তার মধ্যে রনজিত প্রথম স্থান অধিকার করেন। পুরষ্কারের অর্থ ৫০% তিনি ফাইনালিস্টের মধ্যে সমান ভাগে ভাগ করে দেবেন স্থির করেছেন, যাতে ওই সমস্ত শিক্ষক-শিক্ষিকারা তাদের প্রয়োজনে ব্যবহার করতে পারেন।
ডিসালে বলছেন, ‘‘শিক্ষকই হল আসল পরিবর্তনকারী… যে তাঁর ছাত্রছাত্রীর জীবনকে পরিবর্তন করে চক আর চ্যালেঞ্জের মিশ্রণের মধ্য দিয়ে । তাঁরা সবসময় দেওয়া আর ভাগ করে নেওয়ায় বিশ্বাস করে । আমা্র পুরষ্কারের অর্থ ফাইনালিস্টদের মধ্যে ভাগ করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিতে পেরে আমি খুব খুশি ও গর্বিত । আমি তাঁদের অক্লান্ত পরিশ্রম, তাঁদের বিশ্বাস, তাঁদের কাজকে সমর্থন করি । আমি জানি, আমরাই একসঙ্গে এই পৃথিবীতে পরিবর্তন আনতে পারব । কারণ ভাগ করে নিলে তবেই তো সমৃদ্ধ হব।’’ বিশ্বের এতজনের মাঝখানে একজন ভারতীয়র হাতে এই পুরষ্কার উঠে আসায় স্বাভাবিক ভাবেই খুশি সকলেই।