ওয়েব ডেস্ক : বিশ্বকর্মা পুজোয় পাড়ায় তারস্বরে মাইক চালানোর প্রতিবাদ করেছিলেন এক নার্সিং স্টাফ। কিন্তু তাতেই বেজায় চটেছেন এলাকার তৃণমূল কাউন্সিলর রঞ্জিত মণ্ডল। এরপর ওই নার্স ও তার পরিবারকে রীতিমতো বাড়ি ছাড়া করার অভিযোগ উঠল স্থানীয় কাউন্সিলর রঞ্জিত মণ্ডল ও তাঁর অনুগামীদের বিরুদ্ধে। ঘটনাটি ঘটেছে রাজপুর-সোনারপুর কর্পোরেশনের ৭ নম্বর ওয়ার্ড নরেন্দ্রপুরের কাদারআট এলাকায়। করোনা পরিস্থিতিতে দিনরাত এক করে সাধারণ মানুষকে পরিষেবা দিচ্ছেন চিকিৎসক- নার্সরা। কিন্তু তারপরও বিভিন্ন কারণে একাধিকবার সাধারণ মানুষের হেনস্তার মুখে পড়তে হচ্ছে স্বাস্থ্যকর্মী সহ তাদের পরিবার পরিজনদের। এদিকে ওই করোনাযোদ্ধার সাথে এই ব্যবহার করায় স্বাভাবিকভাবেই ক্ষুব্ধ সাধারণ মানুষ।
ঘটনায় এনআরএস এর নার্সিং স্টাফ মিঠু দাসের অভিযোগ, বিশ্বকর্মা পুজোর দিনে সারাদিন তাঁর বাড়ির সামনে তারস্বরে বক্স বাজাচ্ছিল স্থানীয় কাউন্সিলরের অনুগামী একদল যুবক। কিন্তু প্রথমে কিছু না বললেও ক্রমশ সেই আওয়াজ জোরে হচ্ছিল। এদিকে তাঁর ছেলেমেয়ের সেসময় অনলাইন ক্লাস চলছিল। সেকারণে স্বাভাবিকভাবেই বাইরের আওয়াজে তাদের অসুবিধা হওয়ায় অবশেষে বাধ্য হয়ে বাইরে বেরিয়ে প্রতিবাদ জানিয়েছিলেন মিঠু দেবী। অভিযোগ, তিনি বক্সের শব্দ কমাতে বলায় ওই যুবকেরা রীতিমতো ওই মহিলার উপর তেড়ে আসেন। শুধু এখানেই থেমে থাকেননি তারা৷ রীতিমতো তাঁকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজও করা হয়। এরপর তড়িঘড়ি নরেন্দ্রপুর থানায় গিয়ে পুরো ঘটনাটি জানায় মিঠু দাস নামে এনআরএস এর ওই নার্সিং স্টাফ। এদিকে মিঠু দাসের অভিযোগ শুনে শনিবার পুলিশ এসে যুবকদের সাবধান করে যায়।
এরপর ফের রবিবার সন্ধ্যা ৬ টা নাগাদ স্থানীয় কাউন্সিলর রঞ্জিত মন্ডল তাঁর দলবল নিয়ে মিঠু দাসের বাড়িতে এসে ফের তাকে ও তাঁর স্বামীকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ শুরু করে। অভিযোগ, সেসময় কাউন্সিলর রঞ্জিত মণ্ডল ওই নার্স ও তাঁর পরিবারকে প্রাণে মারার হুমকি দেন। ঘটনার পরই রীতিমতো আতঙ্কিত হয়ে ওঠেন মিঠু ও তাঁর পরিবার। জরুরী পরিষেবার কারণে বেশিরভাগ সময় হাসপাতালেই কাটাতে হচ্ছে মিঠুকে। ফলে যদি তার বাচ্চাদের কোনোভাবে ক্ষতি করে দেয়, একথা ভেবে রবিবার রাতেই বিষয়টি নরেন্দ্রপুর থানার পুলিশকে জানালে পুলিশ গিয়ে তাঁদের বাড়ি থেকে বের করে আনেন। এদিকে বাড়ি থেকে বেরিয়ে এই মূহুর্তে মিঠু তাঁর স্বামী ও সন্তানদের নিয়ে রাস্তায়-রাস্তায় ঘুরছেন তাঁরা।
শেষমেশ এনআরএস কর্তৃপক্ষের সহায়তায় আপাতত হাসপাতালে মাথা গোজার ঠাই পেয়েছে মিঠু ও তার পরিবার। তবে ঘটনায় পুলিশের ভূমিকা নিয়ে উঠছে প্রশ্ন। একজন মহিলাকে অকথ্য গালিগালাজ এমনকি খুনের হুমকি দেওয়ার পরও পুলিশ কেন ওই তৃণমূল কাউন্সিলর ও তাঁর অনুগামীদের গ্রেফতার না করে বরং ওই নার্সের পরিবারকে বাড়ি থেকে বের করে নিয়ে গেল, তা নিয়েই একমুহূর্তে উঠছে একাধিক প্রশ্ন।