নিজস্ব সংবাদদাতা: ধর্ষনের মামলায় সাজা হয়েছিল ১০বছরের মাত্র ৬মাস বাকি ছিল সাজার মেয়াদ শেষ হওয়ার তার আগেই গলায় দড়ি দিয়ে আত্মহত্যা করলেন এক সাজাপ্রাপ্ত বন্দী। ঘটনার খবর পেয়েই অন্য বন্দীরা এদিন তীব্র বিক্ষোভে ফেটে পড়েন বলে জানা গিয়েছে। ঘটনা মঙ্গলবার সকালে মেদিনীপুর কেন্দ্রীয় সংশোধনাগারের।
সূত্র মারফৎ জানা গিয়েছে মৃত ওই ব্যক্তির নাম মোক্তার গায়েন। ৫৪বছর বয়সী ওই ব্যক্তির বাড়ি গড়বেতা থানা এলাকার উপর জবা গ্রামে।
জানা গেছে ১২ বছর আগে মহিলাকে ধর্ষনের অভিযোগে পুলিশ গ্রেপ্তার করেছিল মোক্তারকে। পরে প্রায় ২বছর বিচার প্রক্রিয়া চলার পর ১০বছর সশ্রম কারাদন্ড হয় মোক্তারের। তারপর থেকেই সে মেদিনীপুর সংশোধনাগারে ছিল। গত কয়েকমাস যাবৎ তার মানসিক সমস্যা শুরু হয় বলে জেল সূত্রে জানা গেছে, চিকিৎসাও চলছিল। মঙ্গলবার ভোরে জেলেরই একটি গারদের উঁচু জানলার শিক থেকে গলায় দড়ি দেওয়া অবস্থায় ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার হয় তার। সাথে সাথেই তাকে উদ্ধার করে জেল হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকরা মৃত বলে ঘোষনা করেন তাকে।
মৃতের স্ত্রী রেহেনা বিবির দাবি, জানুয়ারি মাসে প্যারোলে মুক্তি পেয়ে বাড়ি গিয়েছিল মোক্তার। তখনই সে বলেছিল যে তাকে জেলের মধ্যে কেউ বা কারা মেলার চক্রান্ত করছে। মোক্তার সেই চক্রান্তেরই স্বীকার। অন্যদিকে মোক্তারের ভাই মোহর আলি বায়েন বলেন, জেলে যদি এতই নিরাপত্তা থাকে তাহলে একটা আসামী কি করে ফাঁসি দিয়ে দিল? দুজনেরই দাবি খুনই করা হয়েছে মোক্তারকে। বিষয়টি নিয়ে পুলিশি তদন্তেরও দাবি করেন তারা।
মোক্তার মানসিক ভাবে অসুস্থ ছিলেন এবং তার চিকিৎসা চলছিল এটা জেলে কর্তৃপক্ষ থেকে জানা গেছে তেমনি তার পরিবারের লোকেরাও জানত কিন্তু মানসিক অসুস্থতার কারনেই সে আত্মহত্যা করেছে এটা মানতে নারাজ জেলের বন্দীরা। সকালে মোক্তারের মৃত্যুর খবর পাওয়ার পরই জেলের অন্দরেই বিক্ষোভে ফেটে পড়েন বন্দিরা। কিছু চেয়ার টেবিল ভাঙচুর করা হয় বলে জানা গেছে। জেলের বাইরে থেকেই শোনা গেছে মাইকে জেল কর্তৃপক্ষ ঘোষনা করছেন, “যাঁরা বিক্ষোভ দেখাচ্ছেন তাঁরা নিজের নিজের জায়গায় ফিরে যান আপনাদের খাবার দেওয়া হচ্ছে।”
বিক্ষোভকারীরা দাবি করেছেন মোক্তারের আত্মহত্যার পেছনে রয়েছে জেল কর্মীদেরই দুর্ব্যবহার। তারা দাবি করেন সম্প্রতি ফের প্যারোলের জন্য আবেদন করেছিল মোক্তার। সোমবার রাতে সেই আবেদনের কি হয়েছে তা জানার জন্য মোক্তার জেলের অফিসে গেলে জনৈক জেল কর্তা মন্তব্য করেন যে, ধর্ষনের বন্দির আবার প্যারোল কিসের? সঙ্গে দুর্ব্যবহার করা হয় তার সঙ্গে। এরফলেই মোক্তার আত্মহত্যায় প্ররোচিত হয়। যদিও কারামন্ত্রী উজ্জ্বল বিশ্বাস জানিয়েছেন, “মানসিক অবসাদে ভুগছিলেন ওই বন্দী। সম্ভবত সেই জায়গা থেকেই এই ঘটনা। বাকিটা তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।”