নিজস্ব সংবাদদাতা: সারা রাজ্যে বিপুল জয়ের মধ্যেই জোর ধাক্কা খেল খড়গপুর শহর তৃনমূল।পরাজিত হলেন বিদায়ী বিধায়ক তথা বিদায়ী পুরসভার চেয়রাম্যান প্রদীপ সরকার। প্রায় শুরু থেকেই পিছিয়ে ছিলেন প্রদীপ। মাঝখানে কিছুটা এগিয়ে গেলেও শেষরক্ষা হলনা। নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী বিজেপির হিরন্ময় চট্টোপাধ্যায় বা হিরনের কাছে ৩১১৯ ভোটে পরাজিত হলেন প্রদীপ সরকার। দু’বছরের মাথায় ফের খড়গপুর শহরের দখল নিল বিজেপি।জানা গেছে হিরন্ময় ভোট পেয়েছেন 78, 580 এবং প্রদীপ ভোট পেয়েছেন 75,461। অন্যদিকে কংগ্রেসের রীতা শর্মা ভোট পেয়েছেন 10, 710.
উল্লেখ্য ২০১৬ সালে চাচা জ্ঞানসিং সোহন পালকে হারিয়ে এই আসনের দখল নেন বিজেপি সভাপতি দিলীপ ঘোষ। মাত্র ৫ হাজার ভোটে এসেছিল সেই জয়। পরে ২০১৯ সালে সাংসদ দিলীপ ঘোষ পদে জয়ী হলে উপনির্বাচন হয়। সেই উপনির্বাচনে বিজেপি প্রার্থীকে ২৫হাজার ভোটে পরাজিত করে প্রদীপ সরকার। মাত্র ২ বছরের মেয়াদে সেই আসন আবার জিতে নিল বিজেপি।
অন্যদিকে শেষ খবর পাওয়া অবধি পশ্চিম মেদিনীপুরের আসনের মধ্যে তৃনমূল প্রার্থীরা গড়বেতা, শালবনী, মেদিনীপুর, খড়গপুর গ্রামীন, পিংলা, সবং, চন্দ্রকোনা, এমনকি শেষ অবধি ডেবরা আসনেও এগিয়ে রয়েছে তৃনমূল প্রার্থীরা। অন্যদিকে বিজেপি প্রার্থীরা এগিয়ে রয়েছেন কেশপুরের মত জায়গা ছাড়াও ঘাটাল, নারায়নগড়, দাঁতনের মত কেন্দ্রে এগিয়ে রয়েছে বিজেপি প্রার্থীরা। এখনও অবধি জেলার ১৫টি আসনের ১১টিতে এগিয়ে তৃনমূল।
পশ্চিম মেদিনীপুরে ডেবরা ও কেশপুরে এখনও অবধি চমক হল যে ডেবরায় প্রথমে বিজেপি প্রার্থী ভারতী ঘোষ এগিয়ে থাকলেও পরে এগিয়ে গেছেন তৃনমূল প্রার্থী হুমায়ুন কবীর। অন্যদিকে অবাক কান্ড এই যে প্রথম কয়েক দফা গণনায় এগিয়ে রয়েছেন কেশপুরে বিজেপি প্রার্থী। বিষয়টা অবাক করার এই কারনে যে কেশপুরে বরাবর একতরফা প্রথম থেকেই শাসক দল এগিয়ে থাকে।
দেখে নেওয়া যাক কয়েকটি কেন্দ্রের অবস্থা। সবং কেন্দ্রে এগিয়ে তৃণমূল কংগ্রেসের প্রার্থী মানস ভুঁইয়া । এখন পর্যন্ত এখানে তিনি পেয়েছেন ১৬,২০৩টি ভোট । বিজেপি প্রার্থী অমূল্য মাইতি পেয়েছেন ১৪, ২১৭টি। আর কংগ্রেসের চিরঞ্জীব ভৌমিক পেয়েছেন ৩৩৪৫টি ভোট ।
[
পিংলা কেন্দ্রে প্রথমে কম হলেও তৃণমূল কংগ্রেসের প্রার্থী অজিত মাইতি ১৬ রাউন্ডের শেষে বিজেপি প্রার্থী অন্তরা ভট্টাচার্যর থেকে ৯০০০ ভোটে এগিয়ে। খড়গপুর শহরে ৯ রাউন্ড গননার শেষে পাঁচ হাজারের বেশিতে এগিয়ে প্রদীপ সরকার
নারায়ণগড় কেন্দ্র লড়াই হচ্ছে হাড্ডাহাড্ডি বিজেপির প্রার্থী রমাপ্রসাদ গিরি
সামান্য কিছু ভোটের ব্যবধানে এগিয়ে
। তিনি এখন পর্যন্ত পেয়ে ১৬,৬২৫ভোট। তৃণমূল কংগ্রেসের সূর্যকান্ত অট্ট পেয়েছেন ১৬,৩৮৮ সেখানে সিপিএম প্রার্থী তাপস সিনহা পেয়েছেন মাত্র ১৯৯৭টি ।
গড়বেতা কেন্দ্রে প্রায় ৪ হাজার ভোটে এগিয়ে তৃণমূল কংগ্রেসের প্রার্থী উত্তরা সিং হাজরা। তিনি এখন পর্যন্ত পেয়েছেন ২৯৬০২ টি ভোট ।বিজেপি র প্রার্থী মদন রুইদাস পেয়েছেন ২৫,৮২৮ টি ভোট । আর সিপিএমের তপন ঘোষ পেয়েছেন মাত্র ৩১৯৩ টি ভোট ।
১১ রাউন্ড শেষে চন্দ্রকোনা বিধানসভার তৃণমূল কংগ্রেসের প্রার্থী অরুপ ধাড়ার প্রাপ্ত ভোট ৪৬৮৮৭ এবং প্রতিদ্বন্দ্বী বিজেপি প্রার্থী শিবরাম দাসের প্রাপ্ত ভোট ৩৮,২৪৯।চন্দ্রকোনা বিধানসভায় তৃণমুল প্রার্থী অরুপ ধাড়া ৮৬৩৮ ভোটে এগিয়ে। এখানে ইতিমধ্যেই সবুজ আবীর মাখতে শুরু করেছেন তৃনমূল সমর্থকরা।
১৩ রাউন্ড গণনা শেষে কেশপুর বিধানসভা কেন্দ্রে ৭৫৮২ ভোটে এগিয়ে তৃণমূল প্রার্থী শিউলি শাহা
শালবনীতে তৃণমূল কংগ্রেসের প্রার্থী শ্রীকান্ত মাহাতো এবারও জয়ী হওয়ার পথে । এই কেন্দ্রে তিনি এগিয়ে আছেন প্রায় ৬ হাজার ভোটে । এখন পর্যন্ত পেয়ে ছেন ২২, ৩৫৯টি ভোট । এই কেন্দ্রে তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী বিজেপির প্রার্থী রাজীব কুন্ডু পেয়েছেন ১৬,৬৫৮টি ভোট । এই কেন্দ্রে সিপিএম প্রার্থী, রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী সুশান্ত ঘোষ পেয়েছেন মাত্র ২৬০৮ টি ভোট ।
ডেবরা বিধানসভা কেন্দ্রে বিজেপির প্রার্থী ভারতী ঘোষ প্রায় ৪ হাজার ভোটে পিছিয়ে আছেন। তিনি এখন পর্যন্ত পেয়েছেন ৯৪৩৯ টি ভোট । আর তৃণমূল কংগ্রেসের প্রার্থী হুমায়ুন কবীর পেয়েছেন ১৩০৪৪ টি ভোট । সিপিএম প্রার্থী প্রাণকৃষ্ণ মন্ডল পেয়েছেন ১৮৩১ টি ভোট ।
অন্যদিকে ঝাড়গ্রাম জেলার চারটি আসন বিনপুর, ঝাড়গ্রাম, গোপীবল্লভপুর ও নয়াগ্রাম আসনে এগিয়ে তৃনমূল প্রার্থীরা।