Homeএখন খবরআলো নেভালে বিপদ হতে পারে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী এবং বিদ্যুৎমন্ত্রীকে চিঠি দিলেন আই...

আলো নেভালে বিপদ হতে পারে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী এবং বিদ্যুৎমন্ত্রীকে চিঠি দিলেন আই আই ই এস টি, শিবপুরের ৫৩ জন গবেষক, পড়ুয়া

নিজস্ব সংবাদদাতা: ভারতের প্রধানমন্ত্রী, নরেন্দ্র মোদী, ঘোষণা করেছেন, আগামী ৫ই এপ্রিল ২০২০, রাত ৯টা , ৯ মিনিটের জন্য,গৃহ অন্ধকারকরণ’ কর্মসূচী পালন করতে হবে। এই বিষয়ে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী এবং বিদ্যুৎমন্ত্রীকে চিঠি দিলেন আই আই ই এস টি, শিবপুরের ৫৩ জন গবেষক, পড়ুয়া। তাঁরা দাবি করেছেন প্রধানমন্ত্রীর এই আহ্বান অবৈজ্ঞানিক ও বিদ্যুৎ ব্যবস্থাকে বিপর্যয়ের মুখে ঠেলে দিতে পারে।
মূখ্যমন্ত্রী ও বিদ্যুৎমন্ত্রীকে তাঁরা বলেছেন, যদি দেশ তথা রাজ্যের প্রচুর সংখ্যক মানুষ উক্ত সময়ে ঘরের সমস্ত বৈদ্যুতিন যন্ত্র এবং আলো বন্ধ করেন, বিপুল পরিমাণ বিদ্যুৎ ব্যবহার হঠাৎ করে বন্ধ হয়ে যাবে।

অথচ বিদ্যুৎ উৎপাদন এইরূপ আচমকা বন্ধ করা যায় না। তাই সব মানুষ যদি নিজেদের বাড়ির আলো নিভিয়ে ফেলেন তাহলে পাওয়ার গ্রিডগুলোর উপর মাত্রাতিরিক্ত চাপ পড়বে, যার অভিঘাতে পাওয়ার গ্রিড ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এহেন ক্ষতি হলে রাজ্য তথা দেশে বিদ্যুৎ সংকট দেখা দিতে পারে। যখন রাজ্য সরকার কোভিড-১৯-এর বিরুদ্ধে লড়াইয়ে মনোনিবেশ করছে তখন প্রধানমন্ত্রী ঘোষিত কর্মসূচী বিদ্যুৎ বিভ্রাট ঘটিয়ে আরো বিপদ ডেকে আনতে পারে। রাজ্য সরকারের সীমিত শক্তিকে অনর্থক ডেকে আনা বিদ্যুৎ সংকটের মোকাবিলায় ব্যয় করতে হবে, যা বর্তমান পরিস্থিতিতে কাম্য নয়।

গবেষক পড়ুয়াদের দাবি, প্রধানমন্ত্রী ঘোষিত আলো নেভাও এবং মোমবাদি জ্বালাও কর্মসূচীর কোনো বৈজ্ঞানিক ভিত্তি নেই। বরং বলা যেতে পারে যে ভারত সরকার এহেন কর্মসূচী ঘোষণার মাধ্যমে দেশের মানুষের বৈজ্ঞানিক চেতনার ক্ষতি করছেন এবং কোভিড-১৯-এর বিরুদ্ধে লড়াইয়ে বিজ্ঞান নয়, কুসংস্কারের আশ্রয় নিচ্ছেন। ঠিক রাত নটায়, নয় মিনিটের জন্য দিয়া বা মোমবাতি জ্বালিয়ে রাখলে কী হবে? করোনা ভাইরাস মোকাবিলা, ভারতের ভঙ্গুর স্বাস্থ্যব্যবস্থা, পরিযায়ী শ্রমিকদের দুর্দশা, ইত্যাদি সংকট নিরশনে মোমবাতি জ্বালানো কীভাবে সাহায্য করবে? কেন নয় মিনিটের জন্য রাত নটায় এই কর্মসূচী পালন করতে হবে, এই সমস্ত প্রশ্নের কোনো উত্তর ভারত সরকারের তরফে দেওয়ার চেষ্টাও করা হয়নি। সার্বিকভাবে তাই বলা যেতে পারে যে প্রধানমন্ত্রী ঘোষিত এই কর্মসূচী একদিকে দেশে তথা রাজ্যে বিদ্যুৎ সংকট তৈরি করতে পারে। অন্যদিকে, এই কর্মসূচীর সঙ্গে বিজ্ঞানমনস্কতার কোনো সম্পর্ক নেই, বরং কুসংস্কার এবং বিজ্ঞান বিরোধী মানসিকতাই প্রকাশ পেয়েছে প্রধানমন্ত্রীর আহ্বানে।

তাঁরা মূখ্যমন্ত্রীকে লিখেছেন , পশ্চিমবঙ্গকে এই অনাহূত বিদ্যুৎ সংকট থেকে বাঁচাতে হলে আপনাকে উদ্যোগী হতে হবে। দেশের যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামো সংবিধানের মৌলিক বৈশিষ্ট্যের অন্তর্গত। তাই যুক্তরাষ্ট্রীয় নীতি মেনে আপনি মানুষকে এই ক্ষতিকর কর্মসূচী সম্পর্কে সচেতন করুন। বিদ্যুতের সংকট যাতে না হয় তার জন্য যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করুন।
ভারতের সংবিধান মানুষের মধ্যে বৈজ্ঞানিক চেতনাকে জাগানোর কথা বলে। প্রধানমন্ত্রী ঘোষিত কর্মসূচী সেই বৈজ্ঞানিক চেতনার মূলে আঘাত করছে। আপনার কাছে তাই অনুরোধ সংবিধানে বর্ণিত বৈজ্ঞানিক চেতনার পক্ষ নিন, প্রধানমন্ত্রীর মোমবাতি জ্বালাও কর্মসূচীর সারবত্তাহীনতা মানুষের সামনে তুলে ধরুন।

RELATED ARTICLES

Most Popular