নিজস্ব সংবাদদাতা: এবার রাজ্য পুলিশ মামলা দায়ের করল আইআইটি খড়গপুর (IIT-Kharagpur) অধ্যাপিকা সীমা সিংয়ের বিরুদ্ধে। তপশিলি জাতি উপজাতিদের উদ্দেশে অবমাননাকর মন্তব্য করার জন্য তাঁর বিরুদ্ধে এই মামলা দায়ের করা হয়েছে গত শুক্রবার, ২১শে মে খড়গপুর টাউন থানায়। মামলাটি দায়ের করেছেন খড়গপুর টাউন থানার ইন্সপেক্টর ইনচার্জ রাজা মুখার্জী। জানা গেছে রাজ্য সরকারের হয়েই এই মামলা দায়ের করেছেন তিনি। ১৯৮৯ সালের তপশিলি জাতি উপজাতি আইনে আইনে এই মামলা দায়ের করা হয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে জানা গিয়েছে। উল্লেখ্য এই কারনে ইতিমধ্যেই অধ্যাপিকা সীমা সিংকে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করেছেন আইআইটি খড়গপুর (IIT-Kharagpur) কর্তৃপক্ষ।
উল্লেখ্য তপশিলি জাতি উপজাতি বিষয়ক জাতীয় কমিশন ( National Commission for Scheduled Cast) (NCSC)বিষয়টি জানার পরই আইআইটি এবং রাজ্য সরকারকে ওই অধ্যাপিকার বিরুদ্ধে উপযুক্ত আইনি পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য জানিয়েছিল। এরপরই রাজ্য পুলিশ বিষয়টি নিয়ে খোঁজ খবর নেয়। আর তারপরেই এই মামলা দায়ের করা হয়েছে। আইআইটি খড়গপুরের একটি সূত্র জানা গেছে কয়েকদিন আগেই বিষয়টি নিয়ে কিছু তথ্য জানতে চেয়েছিল পুলিশ। সেই তথ্য জানায় আইআইটি কর্তৃপক্ষ যদিও আইআইটির এক আধিকারিক জানিয়েছেন, পুলিশ এই মামলার বিষয়ে এখনো অবধি আইআইটিকে কিছু জানায়নি।
NSCS এক চিঠিতে বলেছিল, “কমিশন স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে এই অপরাধের অনুসন্ধান করবে যেখানে তপশিলি জাতি উপজাতি পড়ুয়াদের অনলাইন ক্লাশ নেওয়ার সময় আইআইটি খড়গপুর অধ্যাপিকা সীমা সিং পড়ুয়াদের উদ্দেশে অসংসদীয় ভাসা ব্যবহার করেছেন এবং জাত তুলে মন্তব্য করেছেন। এই মন্তব্য দেশের একটি বিশেষ অংশের ভাবাবেগে আঘাত করেছে বিশেষ করে তপশিলি জাতির ভাবাবেগে। কমিশন সিদ্ধান্ত নিয়েছে ভারতীয় সংবিধানের ৩৩৮ নম্বর ধারায় কমিশনের ওপর ন্যস্ত ক্ষমতা বলেই কমিশন এর তদন্ত করবে।” এরই পাশাপাশি কমিশন ১৫দিনের মধ্যে আইআইটি এবং রাজ্য সরকারকে বিষয়টি নিয়ে ব্যবস্থা গ্রহণ করতে বলেছিল। সেই মত আইআইটি ইতিমধ্যেই একটি কমিটি তৈরি করে বিভাগীয় তদন্ত শুরু করে দিয়েছে এবং প্রাথমিক সত্যতার ভিত্তিতে সীমা সিংকে সাময়িক বহিস্কার করেছে। এবার রাজ্য সরকারও ব্যবস্থা গ্রহনের দিকে এগিয়ে গেল।
এই আইন মোতাবেক মামলা শুরু হলে তার শুনানি বিশেষ আদালতে দ্রুততার সঙ্গে (ফার্স্টট্র্যাক) করার বিধান রয়েছে। এরজন্য বিশেষ বিচারপতি বা প্রথম সারির ম্যাজিস্ট্রেট নিযুক্ত হতে পারেন এই মামলার জন্য। এই মামলায় দোষি প্রমাণিত হলে সর্বোচ্চ ৫বছরের জন্য কারাদন্ড ও জরিমানার বিধানও রয়েছে। অন্যদিকে আইআইটি যে তদন্ত শুরু করেছে তাতে শেষ অবধি অভিযোগ সত্যি প্রমাণিত হলে অধ্যাপিকাকে চিরতরে বরখাস্ত করা হবে।
উল্লেখ্য একটি প্রস্তুতি অনলাইন ক্লাশ চলার সময় সমাজবিজ্ঞানের ওই অধ্যাপিকাকে পড়ুয়াদের উদ্দেশ্যে ব্লাডি বা….. নামক কদর্য ভাষা প্রয়োগের পাশাপাশি হুমকি দিতে শোনা গিয়েছিল। ওই হুমকিতে তিনি দাবি করেছিলেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রক, মন্ত্রী বা আইআইটি কর্তৃপক্ষ তাঁর কিছুই করতে পারবেনা। অনলাইন ভিডিওর সেই ফুটেজ সামনে আসতেই দেশ ব্যাপী সমালোচনার ঝড় ওঠে। বিভিন্ন আইআইটির ৮০০ জন প্রাক্তনী আইআইটি খড়গপুরের ডিরেক্টরকে চিঠি লিখে অধ্যাপিকার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহনের আর্জি জানান, তাঁর বহিস্কারের দাবি করেন।