নিজস্ব সংবাদদাতা: একটা হোটেলের লবিতে বসে আর শুয়ে থাকা প্রচুর মানুষ, হোটেলের ঘরে বিভিন্ন রোগী ও তার পরিবার, একই রুমের খাটের ওপর একটি পরিবার তো ওই রুমেরই মেঝেতে অন্য আরেকটি পরিবার। হোটেলের মেঝেতে চুঁইয়ে আসছে জল। গাদাগাদি করে থাকা অসহায় পরিবার গুলির কেউ কাঁদছে, কেউ চিৎকার করে বলছেন, ‘দেখুন সরকার আমাদের কিভাবে রেখেছে! এরপরও উনি(মমতা ব্যানার্জি) বলবেন এটা ফেক ভিডিও?’ এরকমই এক ভিডিও নিজের ফেসবুকে পোষ্ট করেছিলেন মেদিনীপুরের সাংসদ তথা বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ। লিখেছিলেন এই হচ্ছে পশ্চিমবঙ্গ সরকারের ইনস্টিটিউশনাল কোয়ারেন্টাইন! মুহূর্তে সেই ভিডিওটি আগুনের মতই ভাইরাল হয়ে পড়ে। তীব্র সমালোচনার ঝড় বইতে শুরু করে।
দিলীপ ঘোষ দাবি করেন, দক্ষিনের রাজ্যগুলিতে চিকিৎসা করতে গিয়ে লকডাউনে আটকে পড়া কয়েকশ রোগী ও তাঁর আত্মীয়রা যখন বিশেষ অনুমতি নিয়ে রাজ্যে ফিরছিলেন তখন ওড়িশা সীমান্তে পশ্চিম মেদিনীপুরের দাঁতন এলাকার একটি কোয়ারান্টিন সেন্টারে রোগী সহ পরিজনদের এক রুমে গাদাগাদি করে রাখা হয়েছে এমনই করে।
শুক্রবার পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা পুলিশ তার ফেসবুক পেজে জানিয়েছেন এই ভিডিওটি বিভ্রান্তিকর। ওটি কোন সরকারি প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারান্টিন সেন্টার নয়। পাশাপাশি এও জানিয়ে দেওয়া হয় ওড়িশা সীমান্তে ওই মানুষদের নিয়ে আসা গাড়ি গুলি যাদের বেশিরভাগই আ্যম্বুলেন্স যখন তাঁদের অসহায় অবস্থায় ছেড়ে পালিয়ে গেছিল এবং তাঁদের পায়ে হেঁটে আসতে হচ্ছিল তখন পুলিশ তাঁদের উদ্ধার করে এবং সাময়িক ভাবে একটি স্থানীয় হোটেলে রেখে সরকারি গাড়িতেই বাড়ি ফেরানোর ব্যবস্থা করে। যে হোটেলকে সরকারের ইনস্টিটিউশনাল কোয়ারেন্টাইন সেন্টার বলে দেখানো হচ্ছে তা আদৌ তা নয়। একই সাথে পশ্চিম মেদিনীপুর পুলিশ নিজস্ব ফেসবুক পেজে জানিয়ে দেয় এই বিভ্রান্তিকর ভিডিও ছড়াচ্ছে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে। সুনির্দিষ্ট ধারায় মামলা করা হবে।
শনিবার সেই এফআইআরই দায়ের করল পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা পুলিশ। জেলার পুলিশ সুপার দীনেশ কুমার জানিয়েছেন, ‘একটি অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে।’ যদিও ঠিক কার বিরুদ্ধে অভিযোগ বা কোন থানায় অফিযোগ দায়ের তা পরিষ্কার করে জানাতে চাননি।
অন্যদিকে বিজেপির রাজ্য সভাপতি, মেদিনীপুরের সাংসদ দিলীপ ঘোষ বলেন, ‘আমি শুনেছি পুলিশ নাকি ভিডিও টি মিথ্যা, বিভ্রান্তিকর বলে জানিয়েছে। আমি চ্যালেঞ্জ করছি পুলিশ প্রমান করুক ওটা মিথ্যে। আমি ওখানে যে সমস্ত রোগীরা ছিলেন, আমি ভিডিওটি পোস্ট করার পর যাঁদের বাড়িতে পৌঁছে দেওয়া হয়েছে তাঁদের সাথেও কথা বলেছি। আমার বিরুদ্ধে পুলিশ এফআইআর করেছে কিনা জানিনা। পুলিশের ক্ষমতা থাকলে আমার বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করবেন। তারপর আদালতকে আমি যা বলার বলব।’