নিজস্ব সংবাদদাতা: ঘটনার প্রায় ৩২ ঘন্টার মধ্যে ঝাড়গ্রাম জেলার উড়িষ্যা সীমান্ত এলাকা থেকে গ্রেপ্তার হল ঝাড়গ্রাম শহরের ক্রিকেট মাঠে খুনে অভিযুক্ত NVF কর্মী বিশ্বজিৎ প্রধান ওরফে ন্যাড়া। জানা গেছে বুধবার রাতে জেলার উড়িষ্যা সীমান্ত লাগোয়া গোপীবল্লভপুর থানার হাতিবাড়ি চেকপোষ্টের কাছ থেকে গ্রেপ্তার হয় বিশ্বজিৎ। ঝাড়গ্রাম শহর থেকে প্রায় ৬৫কিলোমিটার দূরত্বে এই পথ ধরেই বিশ্বজিৎ উড়িষ্যা পালানোর চেষ্টা করেছিল বলেই পুলিশের অনুমান। ঘটনাস্থলে নাকা চেকিং চলছিল। সেই সময় একটি গাড়ি নিয়ে উড়িষ্যা প্রবেশের চেষ্টা করছিল সে।
এরই সংগে গ্রেপ্তার করা হয়েছে বিশ্বজিতের গাড়ির চালক শুভঙ্কর সাউ ওরফে লিপিকে। মঙ্গলবার ঝাড়গ্রাম শহরের বাছুরডোবায় যখন বিশ্বজিৎ রাধানগরের যুবক তকবীরকে গুলি চালায় তখনও তার চারচাকাটি চালিয়ে এসেছিল এই শুভঙ্করই।
বৃহস্পতিবার ২জনকেই ঝাড়গ্রাম আদালতে তোলা হয় । অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে খুন এবং অস্ত্র আইনে ৩০২, ৩৪, ২৫ ,২৭ ধারায় মামলা রুজু করে ঝাড়গ্রাম থানার পুলিশ । আদালতে তোলা হলে পুলিশের পক্ষ থেকে ১০ দিনের পুলিশ হেফাজত চাওয়া হলে বিচারক ৮ দিনের পুলিশ হেফাজত মঞ্জুর করে। এই খুনের ঘটনায় মোট তিন জনের বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করেছে পুলিশ। বিশ্বজিৎ ও শুভঙ্কর ছাড়াও ঘটনায় অভিযুক্ত বিশ্বজিতের বাবা মনি প্রধান। তাঁকে অবশ্য এখনও গ্রেপ্তার করতে পারেনি পুলিশ।
উল্লেখ্য মঙ্গলবার দুপুর প্রায় সাড়ে বারোটা নাগাদ ঝাড়গ্রামের ২ নম্বর ওয়ার্ডের বাছুরডোবা এলাকায় একটি ক্রিকেট প্রিমিয়াম লীগ চলাকালীন এই খুনের ঘটনাটি ঘটেছিল। রাধানগর গ্রাম পঞ্চায়েতের রাধানগর গ্রামের বাসিন্দা ২৮ বছরের যুবক তকবির আলি খেলা দেখতে এসেছিলেন। অভিযোগ বাছুরডোবা এলাকার বাসিন্দা মেদিনীপুর পুলিশ লাইনে কর্তব্যরত ওই এনভিএফ কর্মী বিশ্বজিৎ তকবীরকে দুটো হাতে দুটো বন্দুক নিয়ে গুলি চালায়। তকবীরের মাথায় গুলি লাগে। তাকে ঝাড়গ্রাম সুপার স্পেশালিটি হাসপাতাল হয়ে মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজ এবং পরে কলকাতা নিয়ে যাওয়ার পথে মৃত্যু হয় তাঁর । তকবীরের মৃত্যুর খবর রটতেই বিশ্বজিৎ এর বাড়ী ভাঙচুর করে আগুন ধরিয়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠে । ঘটনাস্থলে পৌঁছায় বিশাল পুলিশবাহিনী ও দমকল বাহিনী । পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে পুলিশ ।
এরপর ফের বুধবার উত্তপ্ত হয়ে ঝাড়গ্রাম। ঘটনার ২৪ ঘন্টা পেরিয়েও কেন গ্রেপ্তার হয়নি বিশ্বজিৎ এই প্রশ্ন তুলে বুধবার সকাল থেকেই ঝাড়গ্রাম শহর লাগোয়া রাধানগর মোড়ে ঝাড়গ্রাম মেদিনীপুর রাস্তায় অবরোধ হয়। প্রায় ৬ঘন্টা সেই অবরোধ চলে। পরে ঝাড়গ্রাম পুলিশ সুপার অমিত কুমার ভরত রাঠোর অবরোধস্থলে গিয়ে অভিযুক্তদের ৭২ ঘটনার মধ্যে গ্রেপ্তারের আশ্বাস দিলেঅবরোধ প্রত্যাহার করা হয়। তার প্রায় ৮ ঘন্টার মধ্যেই গ্রেপ্তার হল বিশ্বজিৎ। পুলিশ বিশ্বজিৎকে জেরা করে খুনের অস্ত্র কোথায় , খুনের উদ্দেশ্য, খুনের পর বিশ্বজিৎ কোথায় গেছিল, রাতে কোথায় আত্মগোপন করেছিল এসবই জানতে চাইছে।