নিজস্ব সংবাদদাতা: টাকা দিতে হবে বিডিও অফিসের এক আধিকারিক কে আর তাই বিডিও অফিসেই নিয়ে যাওয়া হয়েছিল প্রতারিতকে। করোনা স্বেচ্ছাসেবকের চাকরি! মাস গেলে বেতন ৯ হাজার ৫০০টাকা। স্থায়ী চাকরি দেবে পুলিশ আর লোক সিলেকশন করবে হিউম্যান রাইটস কমিশন। বাজারে চাকরি নেই তাই ওই চাকরির জন্য ঘটি বাটি বিক্রি করে কেউ কেউ টাকাও দিয়েছে অনেকে। এরকমই একজনের নাম শান্তনু সেনি। ক্ষীরাইয়ের বাসিন্দা শান্তনু বউয়ের গহনা সমেত সর্বস্ব খুইয়ে প্রায় ১লক্ষ টাকা দিয়ে ফেলেছেন। শেষ কিস্তির টাকা যোগাড় করে দিতে যাওয়ার সময় পুলিশ তাঁকেই টোপ হিসাবে ব্যবহার করে। প্রতারক যথারীতি আসতে বলেছিল পিংলা বিডিও অফিস চত্ত্বরে। শুক্রবার সেই চত্ত্বর থেকেই পুলিশ গ্রেপ্তার করে প্রতারককে।
পুলিশ জানিয়েছে পিংলার মালিগ্রাম এলাকার বাসিন্দা অমল প্রামাণিক নামের ওই ব্যক্তি “হিউম্যান রাইটস কাউন্সিলস অব ইণ্ডিয়া” নামে একটি সংস্থার অফিসও খুলে বসেছিল। মোটা টাকার বিনিময়ে “VOLUNTEER FOR COVID-19” পদে নিয়োগের নামে বেশ কয়েকদিন ধরেই প্রতারনা করছিলো ওই ব্যাক্তি। বেশ কিছু যুবকের কাছ থেকে টাকাও নিয়ে ফেলে ছিল ওই ব্যক্তি। যার কাছে যেমন পাওয়া যায়, ১লাখ থেকে ২লাখ। খবর ছিল পুলিশের কাছেও কিন্তু প্রমান মিলছিলনা আর সুযোগ মিলেছিলনা হাতে নাতে ধরার। এমনিতেই হিউম্যান রাইটস শুনলেই পুলিশের সমস্যা হয় কিছুটা। এদিক ওদিক হয়ে গেলে বিপদে পড়তে পারে পুলিশই। তাই সাবধানে এগুচ্ছিল পুলিশ।
এরই মধ্যে খোঁজ মেলে শান্তনুর আর তারপরেই ফাঁদ পাতে পুলিশ। শুক্রবার পুলিশের পাঠানো এক চাকরি প্রার্থীর হাতে জবের অফার লেটার তুলে দেওয়ার সময় হাতে নাতে গ্রেপ্তার করে পিংলা থানার পুলিশ। ঘটনার সাথে জড়িত সন্দেহে আরো এক ব্যাক্তিকে আটক করেছে পুলিশ। গোটা বিষয়টি নিয়ে তদন্ত চলছে বলে জানিয়েছে পুলিশ। ধৃতের বিরুদ্ধে ভারতীয় দণ্ডবিধির ৪২০, ৪০৬ ধারায় মামলা রুজু করা হয়েছে।
করোনা শুরুর সময় বিভিন্ন জেলার পুলিশের পক্ষ থেকে করোনা স্বেচ্ছা সেবক নিয়োগের জন্য আবেদনে ইচ্ছুক ব্যক্তিদের নাম রেজিষ্টার করার জন্য পুলিশ আহবান জানিয়েছিল। সেই সুযোগকেই ব্যবহার করছে প্রতারকের দল।
এর আগেও এই একই অভিযোগে দুজন কে গ্রেপ্তার করেছিল পুরুলিয়ার রঘুনাথপুর থানার পুলিশ। ধৃত ওই দুই ব্যক্তির বিরুদ্ধেও “হিউম্যান রাইটস কাউন্সিল অফ ইন্ডিয়া” নামে এই ভুয়া সংস্থায় জড়িত থাকার অভিযোগ উঠেছিল। পুলিশের পক্ষ থেকে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে এই ধরনের স্বেচ্ছা সেবক প্রয়োজনে পুলিশ নিজে নিয়োগ করবে আর এটা কোনোও অর্থেই চাকরি নয়, স্থায়ী তো নয়ই। তবে এখনও সেরকম কোনো প্রক্রিয়া চালুই হয়নি।