নিজস্ব সংবাদদাতা: বাসের মধ্যেই শুরু হয়েছিল শ্বাস কষ্ট কিন্তু চিকিৎসার কোনও সুযোগ মেলেনি। নির্দেশ ছিল দাঁড় করানো যাবেনা বাসকে। বাসের মধ্যেই কষ্ট পেয়ে ধুঁকতে ধুঁকতেই মরতে দেখতে হল সহকর্মী বন্ধুকে। বাড়ি ফেরার আশায় বাস ধরে ছিলেন বটে কিন্তু বাড়ি ফেরা হলনা ৪০ বছরের সেই যুবকের। বদলে ফিরলেন লাশ হয়ে আর সেই লাশের সঙ্গেই বাড়ি ফিরলেন সঙ্গী ৩৪ জন শ্রমিক।
জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে সমস্ত নিয়মকানুন মেনেই ৪ দিন আগে মহারাষ্ট্র থেকে একটি বাস ভাড়া করে ৩৫ জন পরিযায়ী শ্রমিক পশ্চিম মেদিনীপুরের পিংলার উদ্দেশ্যে রওনা দেন। মঙ্গলবার ওই বাসের মধ্যেই শ্বাস কষ্ট নিয়ে মৃত্যু হয় পিংলার সাহড়দার বাসিন্দা ওই যুবকের। বুধবার দেহ সহ শ্রমিকরা বাসে এসে বুধবার মেদিনীপুর শহর সংলগ্ন এলাকায় দেহটি প্রশাসনকে সঁপে দিয়ে পিংলার উদ্দেশ্যে রওনা দেন তাঁরা।
পুলিশ জানিয়েছে, মৃত ওই যুবকের নাম সুদর্শন মন্ডল। মহারাষ্ট্রের একটি অভিজাত হোটেলে হাউসকিপিং এর কাজ করতেন। লকডাউন পর্বে ২ মাস আটকে থাকার পরে পশ্চিম মেদিনীপুরের অনেক শ্রমিক মিলে একটি বাস ভাড়া করে বাড়ির উদ্দেশ্যে রওনা দিয়েছিলেন। মঙ্গলবার বাসটি যখন ওড়িশাতে প্রবেশ করার মুখে তখন ওই যুবকের শ্বাসকষ্ট শুরু হয়। পথে চিকিৎসার কোনো সুযোগ হয়নি। মঙ্গলবার সকাল ৯টা নাগাদ পরিযায়ী শ্রমিক ভর্তি বাসের মধ্যেই মৃত্যু হয় তার। বাসের অন্যান্য যাত্রীরা উড়িষ্যাতে রাস্তায় পুলিশকে বিষয়টি জানালে তারা দেহ পরীক্ষা করতে অস্বীকার করে। সোজা মেদিনীপুরে নিয়ে চলে যেতে বলে। ফলে মৃতদেহ কে নিয়েই বাসের অন্যান্য শ্রমিকরা বুধবার মেদিনীপুরে পৌঁছায়।
ওড়িশা বাংলার সীমান্তে সোনাকনিয়াতে শ্রমিকরা বিষয়টি বাংলার পুলিশকে জানালে পুলিশ দেহটি মেদিনীপুর শহর সংলগ্ন মোহনপুর এলাকাতে দেহ নামানোর ব্যবস্থা করে।
বুধবার দুপুরে বাসটি মোহনপুর এলাকায় পৌঁছালে স্বাস্থ্য দপ্তরের নির্দেশে দেহটি বাস থেকে নামিয়ে খড়্গপুর মহকুমা হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয় নমুনা সংগ্রহের জন্য। প্রায় দেড় দিন ওই মৃতের সঙ্গে থাকতে হওয়ায় কিছুটা আতঙ্কে সহযাত্রীরা শ্রমিকরা। স্বাস্থ্য দপ্তর সূত্রে জানা গিয়েছে কি কারনে ওই পরিযায়ীর মৃত্যু হয়েছে বা তার করোনা উপসর্গ ছিল কিনা জানার পরই দেহ তুলে দেওয়া হবে পরিবারকে।