Homeউত্তরবঙ্গআলিপুরদুয়ারদুয়ারে ভ্যাকসিন প্রকল্প নিয়ে বক্সার আদমাতে আলিপুরদুয়ারের জেলাশাসক,খুশি ডুকপা এলাকার মানুষেরা

দুয়ারে ভ্যাকসিন প্রকল্প নিয়ে বক্সার আদমাতে আলিপুরদুয়ারের জেলাশাসক,খুশি ডুকপা এলাকার মানুষেরা

নিউজ ডেস্ক: পাঁচটি পাহাড় ডিঙিয়ে আলিপুরদুয়ার জেলার প্রত্যন্ত গ্রাম বক্সার আদমাতে শনিবার সাত সকালে ‘দুয়ারে ভ্যাকসিন’ পরিষেবা নিয়ে হাজির হয়েছিলেন আলিপুরদুয়ারের জেলা শাসক সুরেন্দ্র কুমার মিনা।সমতল থেকে প্রায় ১৭৫৯ ফুট উচ্চতার ভুটান সীমান্তের শেষ ভারতীয় জনপদ আদমায় যেতে হলে রায়মাটাং থেকে পারি দিতে হয় এগারো কিলোমিটার দুর্গম পাহাড়ি পাকদণ্ডী।কখনও লাঠি ভর করে আবার কখনও হামাগুড়ি দিয়ে পৌঁছোনো যায় ওই ডুকপা গ্রামে।কোভিডের করাল থাবা থেকে ওই প্রত্যন্ত গ্রামের গুটিকয়েক পরিবারের জন্য খোদ জেলা শাসকের ওই উদ্যোগে রীতিমতো আপ্লুত পৃথিবীর সব চেয়ে ছোট ডুকপা মহল্লার বাসিন্দারা।শনিবার ভোর তিনটের সময় জেলার প্রশাসনিক ভবন ডুয়ার্সকন্যা থেকে ছুটেছিল জেলা শাসকের কনভয়।তার এক ঘন্টা পর রায়মাটাং থেকে বক্সা ব্যাঘ্র প্রকল্পের কোর এলাকার মধ্য দিয়ে রীতিমতো জীবন বাজি রেখে লোকলস্কর নিয়ে যখন চড়াই-উতরাই ভরা পাহাড়ি পথ ধরেছেন সুরেন্দ্র কুমার মিনা তখন অন্ধকার ফিকে হয়ে সময়ের দখল নিতে শুরু করেছিল আলো।তবে নামা অথবা ওঠার সময়ে ওই প্রশাসনিক দলটির সঙ্গী ছিল বৃষ্টি।তাতে ওই পাহাড়ি ডারা হয়ে উঠেছিল আরও ভয়ঙ্কর।জেলা প্রশাসনের হিসেব অনুসারে শনিবার আদমার একশো জন পঁয়তাল্লিশ উর্ধো বাসিন্দাদের কোভিডের টিকা দেওয়া হয়েছে পরবর্তীতে ধাপে ধাপে প্রত্যেককেই টিকাকরণের আওতায় আনা হবে।

এদিন জেলা শাসকের উপস্থিতিতে আদমার এক মাত্র প্রাথমিক স্কুলটির একটি নতুন ক্লাস রুম ও কমিউনিটি শৌচাগারের উদ্বোধন করা হয়।করনা কালে মানুষের বিপদে জেলার এপ্রান্ত থেকে ওপ্রান্ত ছুটে বেড়ানোটা প্রায় রেওয়াজ করে ফলেছেন সুরেন্দ্র কুমার মিনা।কখনও সরাসরি কোভিড আক্রান্তের বাড়ি পৌঁছে প্রয়োজনীয় খাবার থেকে শুরু করে ওষুধপত্রের যোগান দেওয়া আবার কখনও কখনও কোভিড হাসপাতালে চক্কর কাটা, এসবই নিয়মিত ভাবে চলছে হাজারো প্রশাসনিক ব্যস্ততা কাটিয়ে।কোভিড মহামারীর সময় তিনি যে আচমকাই আদমায় হাজির হবেন তা ভাবতেই পারেননি ওই ডুকপা গ্রামের বাসিন্দারা।স্থানীয় বাসিন্দা ঠেলে ডুকপা জানালেন “এটা আমাদের কাছে অনেকটা স্বপ্নের মতো ঘটনা।

শত ব্যস্ততা ফেলে রেখে স্বয়ং ডিএম সাহেব আমাদের মহল্লায় এসে সুবিধে অসুবিধের খোঁজ নিচ্ছেন।ইতিপূর্বে এমন ঘটনা প্রায় ঘটেনি।” ইয়াংকি ডুকপার কথায় “আমাদের জনপদটি ভারতে হলেও এতটাই প্রত্যন্ত যে আমরা প্রায় জন বিচ্ছিন্ন হয়ে থাকি।তবে আজ জেলা শাসকের এই উপস্থিত আমাদের এটা অনুভব করতে শেখালো যে, আমরাও দেশ ও রাজ্যের অঙ্গ।” জেলা শাসক সুরেন্দ্র কুমার মিনা জানিয়েছেন “আদমার মতো প্রত্যন্ত গ্রামে আমরা ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ পৌঁছে দিতে পেরেছি।দ্রুত একটি কমিউনিটি হল তৈরির জন্য পঞ্চাশ লক্ষ টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে।আর মনে রাখতে হবে আদমার মানুষেরাও দেশ ও রাজ্যের অঙ্গ।তাই কোভিডের টিকা পাওয়া ওঁদের অধিকারের মধ্যে পড়ে।তাই প্রশাসনিক উদ্যোগে ‘দুয়ারে টিকা’ পরিষেবা নিয়ে হাজির হয়েছিলাম।এর বেশি কিছু নয়।”

RELATED ARTICLES

Most Popular