Homeএখন খবরদেশ জুড়ে অক্সিজেনের ভয়াবহ সঙ্কট! শ্বাস নিতে না পেরে মৃত্যু ২৫ জন...

দেশ জুড়ে অক্সিজেনের ভয়াবহ সঙ্কট! শ্বাস নিতে না পেরে মৃত্যু ২৫ জন করোনা রোগীর

নিউজ ডেস্ক: নিঃশ্বাস নিতে কষ্ট হচ্ছে, অক্সিজেন নেই, বাঁচার জন্য দীর্ঘ নিঃশ্বাস নিয়েও ব্যর্থ হয়ে প্রাণ হারালেন ২৫ জন রোগী। গত ২৪ ঘন্টায় ২৫ জন এইভাবেই মৃত্যুর মুখে ঢলে পড়েছেন। এমনই ঘটনা ঘটেছে দিল্লীর গঙ্গারাম হাসপাতালে। সেখান থেকে জানানো হয়েছে, যতটুকু অক্সিজেন মজুত রয়েছে, তা দিয়ে শুধুমাত্র ২ ঘণ্টা চালানও যাবে। তারপর ? উত্তর জানা নেই কারও। এদিকে হাসাপাতালে এখনও ভর্তি রয়েছে ৬০ জন মুমূর্ষ রোগী রয়েছেন, ৫০০-র বেশি কোভিড রোগী চিকিৎসাধীন। গত তিন দিন ধরে অক্সিজেনের জন্য কাতর আর্জি জানাচ্ছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।

‘গত ২৪ ঘণ্টায় ইতিমধ্যে প্রাণ হারিয়েছেন ২৫ জন গুরুতর অসুস্থ। হাসপাতালে আর মাত্র ২ঘণ্টা চালানোর মতো অক্সিজেন বাকি রয়েছে। সঠিকভাবে কাজ করছে না ভেন্টিলেটর-বাইপ্যাপগুলো। জরুরী ভিত্তিতে অক্সিজেনের ব্যবস্থা না করা হলে বাঁচানো যাবে না আরও ৬০জন মুমূর্ষুকে।’ কাতর আর্জি দিল্লীর গঙ্গারাম হাসপাতালের ডিরেক্টর জেনারেলের। এই নিয়ে গত ২৪ ঘণ্টায় দ্বিতীয়বার আপদকালীন পরিস্থিতিতে অক্সিজেন চেয়ে বার্তা দিল দিল্লি গঙ্গারাম হাসপাতাল। আর হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের এমন আর্তনাদের সুর্ব অক্সিজেনের আবেদন সেখানকার চিকিৎসা ব্যবস্থার ভয়াবহ সঙ্কটজঙ্ক পরিস্থিতির কথাই মনে করিয়ে দিচ্ছে, যা দেখে আঁতকে উঠছে আমজনতাও।

একই চিত্র দেখা গিয়েছে হরিয়ানার ফর্টিস হাসপাতালেও। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ প্রধানমন্ত্রী ও কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহকে ট্যুইট করে কাতর আর্জি জানিয়ে বলে, আর মাত্র ৪৫ মিনিটের অক্সিজেন পড়ে আছে। রোগীদের প্রাণ বাঁচানোর অবিলম্বে সাহায্য করুন। অন্যদিকে, অক্সিজেনের ঘাটতি নিয়ে বলতে বলতে ভেঙে পড়েন দিল্লীতে অবস্থিত শান্তি মুকুন্দ হাসপাতালের সিইও সুনীল সাগর। তিনি জানান, দুই ঘণ্টার মতো অক্সিজেন রয়েছে আমাদের এখানে।

দেশে ক্রমশ ভয়াবহ হয়ে উঠেছে করোনা সংক্রমণ। লাফিয়ে লাফিয়ে দৈনিক সংক্রমণ রোজই আগের সব রেকর্ড ভেঙে দিচ্ছে। এই অবস্থায় গোটা দেশজুড়েই হাসপাতালের শয্যা সমস্যা ও হাসপাতালে ভর্তি রোগীদের জন্য প্রয়োজনীয় অক্সিজেনের অভাব চিন্তা বাড়াচ্ছে। গত কয়েকদিন ধরেই দিল্লী তথা দেশের একাধিক হাসপাতাল অক্সিজেনের অভাব নিয়ে ক্রমাগত তাদের আর্তি জানিয়েছে, যে পরিস্থিতি গড়িয়েছে কোর্ট পর্যন্তও। গত বুধবারেই ম্যাক্স হেল্থকেয়ারের একটি মামলার পরিপ্রেক্ষিতে দিল্লী আদালত প্রশ্ন তুলেছিল, পেট্রোলিয়াম এবং ইস্পাত শিল্প থেকে কেন মেডিকেল অক্সিজেনের ব্যবস্থা করছে না কেন্দ্র ? অক্সিজেন সরবরাহের ব্যবস্থা করতে বলে বিচারপতিরা কেন্দ্রকে জানিয়ে দেয়, এক্ষেত্রে আপনারা ভিক্ষা করবেন না ধার করবেন, না চুরি করবেন, না প্ল্যান্ট তৈরি করবেন তা আমরা জানি না।

বিষয়টি গড়িয়েছে সুপ্রিম কোর্ট পর্যন্তও। করোনা মোকাবেলায় জাতীয় পরিকল্পনা তৈরির জন্য কেন্দ্রকে কড়া নির্দেশ বৃহস্পতিবার দিয়েছে দেশের শীর্ষ আদালত। অক্সিজেন ও প্রয়োজনীয় ওষুধের জোগান সহ চারটি বিষয় ওই পরিকল্পনায় উল্লেখ করতে বলা হয়েছে। শুক্রবার এই বিষয়ে আবারও শুনানি হবে। এদিন সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি বলেন, “আমরা চারটি বিষয় জানতে চাই। সেগুলি হল, অক্সিজেনের জোগান, প্রয়োজনীয় ওষুধের সরবরাহ, কী পদ্ধতিতে টিকাকরণ হচ্ছে এবং আমরা লকডাউন ঘোষণা করার ক্ষমতা রাজ্যগুলিকে দিতে চাই।“ করোনা মোকাবিলা নিয়ে ইতিমধ্যেই দেশের ৬ টি হাইকোর্টে শুনানি চলছে। এ প্রসঙ্গে প্রধান বিচারপতি বলেন, “দিল্লী, বোম্বে, সিকিম, মধ্যপ্রদেশ, কলকাতা ও এলাহাবাদ হাইকোর্ট তাদের নিজেদের মতো বিচার চালিয়ে যাচ্ছে। এটার আমরা প্রশংসা করি। কিন্তু, এর ফলে বিভ্রান্তি এবং সংস্থানের গতিপথ বদলে যাচ্ছে।“

RELATED ARTICLES

Most Popular