Homeএখন খবরকাজে যেতে চাইছেন না অপারেটররাও , তালাবন্ধ আরপিএফের ইস্টপোষ্ট, ঠেলা সামলাচ্ছে জি.আর.পি

কাজে যেতে চাইছেন না অপারেটররাও , তালাবন্ধ আরপিএফের ইস্টপোষ্ট, ঠেলা সামলাচ্ছে জি.আর.পি

নিজস্ব সংবাদদাতা: একেবারে তালাবন্ধ খড়গপুর স্টেশনের আরপিএফ ইস্ট পোষ্ট। দেশের অন্যতম সেরা রেল জংশনের ৮টি প্ল্যাটফর্ম সামলাতেন যে শ’খানেক জওয়ান তাঁদের অফিসই আজ তালা বন্ধ! কিছুদিন আগেও বিশ্বের দীর্ঘতম রেল প্ল্যাটফর্মের শিরোপা টিকিয়ে রাখা ১ আর ৩ নম্বর প্ল্যাটফর্মে শোনা যাচ্ছেনা উর্দি পরা এ্যাসল্ট রাইফেলধারিদের বুটের শব্দ। শুধু চারজন জওয়ানকে দেখা যাচ্ছে খড়গপুর স্টেশনের দ্বার পাহারা দিতে, তবুও তাদের গা ছাড়া ভাব যেন ।
আর.পি.এফের সমস্ত পোষ্ট গুলিই ফাঁকা, এমনকি ডি.আর.এম বাংলোর সামনেও দেখা মিলছেনা তাঁর নিরপত্তা রক্ষীদের। এক আধ জন মাঝে মধ্যে দেখা দিচ্ছেন। যেন আকাল নেমেছে আরপিএফ জওয়ানের। শুধুই খড়গপুর নয়, গিরিময়দান, গোকুলপুর, মেদিনীপুর সর্বত্রই স্টেশনে স্টেশনে আর.পি.এফ হীনতা। রেলের খড়গপুর ডিভিশনে ১৩০০ আরপিএফ জওয়ান যার মধ্যে ৭০০ জন পোষ্টিং। ৬ জওয়ানের কোভিড পজিটিভ হওয়ার পর ১২০ জওয়ান চলে গেছে কোয়ারেন্টাইন সেন্টারে। কিন্তু তারপরেও তো কিছু জওয়ান থাকে তাঁরা কোথায়? জবাব মেলেনি স্পষ্ট। খড়গপুর রেলের ডিভিশনাল রেলওয়ে ম্যানেজার মনোরঞ্জন প্রধান জানিয়েছেন, ”জলের সরবরাহ কম থাকলে জল কম খেতে হয় তাই কম কর্মী নিয়েই কাজ চালাতে হচ্ছে।” যদিও এটাই একমাত্র কারন এমন নয় বলেই মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। বাস্তবটা আরও কঠিন আর সেই বাস্তবটা হল কাজে যোগ দিতেই ভয় পাচ্ছেন আরপিএফ জওয়ানরা। তাঁরা বুঝতেই পারছেননা কোন এলাকা সংক্রমিত আর কোন এলাকা নয়। দিল্লি থেকে ফেরার পর কোথায় কোথায় ডিউটি করেছিলেন ওই ২৮ জনের ১৮জন যাঁরা খড়গপুরে পোষ্টিং ছিলেন।
রেল যদিও বলছে, ১৪তারিখ দিল্লি থেকে অস্ত্র নিয়ে ফেরার পরই খড়গপুর ডিভিসনের ২৮ জন জওয়ানের মধ্যে ১৮ জনকে খড়গপুরেই কোয়ারেন্টাইন করা হয়েছিল কিন্তু এই তত্ব মানতে রাজি নন খোদ আরপিএফের জওয়ানরাই । চাকরি বাঁচাতে কেউ মুখ খুলছেনা বটে কিন্তু তাঁরা জানেন কোয়ারেন্টাইন করা হয়েছে অনেক পরেই আর জানেন বলেই মরন ভয় পেয়ে বসেছে তাঁদেরও। কেউই ডিউটি করতে চাইছেননা।
শুধুই আরপিএফ জওয়ান নয় ভয় আর ক্ষোভে রয়েছেন রেল স্টেশনের অপারেটররা। কোন ট্রেনে কী পরিমান দ্রব্য সামগ্রী এসেছে, কী এসেছে তা নথিবদ্ধ করাটাই এঁদের কাজ। রেলের যাত্রী পারিবহন না হলেও পন্য পারিবহন অটুট। ফলে কাজ করতে হচ্ছে এঁদের। রবিবার ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন এঁরাও। যে পথ দিয়ে তাঁরা ঢুকবেন ও বেরুবেন, যেখানে দাঁড়াবেন সব জায়গাতেই তো জওয়ান রা থাকতেন। ভয় সেখানেও। তাঁরাও দাবী করেছেন স্টেশন চত্বর পুরোপুরি স্যানেটাইজ না করা অবধি কাজ করবেননা তাঁরাও। ভয়ে আতঙ্কে সিঁটিয়ে রেলের ক্লিয়ারিং এজেন্ট থেকে মাল নামানো ওঠানোর শ্রমিকরাও। সবাই ভাবছেন কোথা থেকে কী হয়ে যায় ?
আর এই পরিস্থিতিতে ঠেলা সামলানোর দায় পড়েছে রাজ্যের রেল পুলিশ বা জি.আর.পির ওপরই। রেলপুলিশের কর্মীরা বলছেন, ”স্টেশন থেকে চত্বর, প্ল্যাটফর্ম, মালগাড়ি সবই নজর রাখতে হচ্ছে। আমাদেরও তো স্টাফ কম কিন্তু কী করব? চেষ্টা করছি যতটা নিরাপদে থাকা যায়।” খড়গপুর জেলা রেলপুলিশের ডেপুটি পুলিশ সুপার শেখর রায় বলেন, ”কাজের চাপ তো বেড়েছেই কারন আরপিএফ জওয়ানরা নেই। এতবড় জায়গা আপাতত আমাদেরই সামাল দিতে হচ্ছে। স্টেশন চত্বর ফাঁকা করে তো সবাই চলে যেতে পারিনা।”
রেলের ডিভিশনাল সিকিউরিটি কমিশনার বিবেকানন্দ নারায়নন জানান, ”সদ্য একটা ঘটনা ঘটেছে, একটা ট্রমা আছে। একটু সময় লাগবে, সব ঠিক হয়ে যাবে।”

RELATED ARTICLES

Most Popular