চলছে প্রতিযোগিতা |
ভবানী গিরি : বাংলায় একটি প্রবাদ আছে- ‘তাস পাশা সর্বনাশা।’ গৃহ অশান্তি, অলসতা আর জুয়ার বদনাম নিয়েই তাস খেলা। যদিও ২০১৫সালের এশিয়ান গেমসে ৬০বছরের প্রণব বর্ধন আর ৫৬বছরের শিবনাথ সরকার ভারতকে ১৫তম স্বর্ন পদক এনে দিয়েছিল এই তাস খেলার সুবাদেই আর সেখান থেকেই কিছুটা হলেও মর্যাদা পেয়েছে তাস খেলা।প্রণব আর শিবনাথরা তাসের যে খেলায় আন্তর্জাতিক বাজিমাত আর বাংলার নাম উজ্জ্বল করেছিলেন তার নাম অকশন ব্রীজ।
(adsbygoogle = window.adsbygoogle || []).push({});
ঝাড়গ্রাম জেলার গোপীবল্লভপুরে সেই অকশন ব্রীজ প্রতিযোগিতা হয়ে গেল শনিবার রাতভর। ফি বছরই গোপীবল্লভপুরের গোলাপ মণ্ডল,চিত্রেশ্বর সাউয়েরা আয়োজন করে থাকেন এই প্রতিযোগিতার। এঁরা তাস খেলাকে সর্বনাশের খেলা বলে মানতে চান না।এরা নিজেদের পেশায় সারাদিন নিয়োজিত থাকেন, কেউবা শিক্ষকতার কাজ করেন আবার কেউ চিকিৎসার পেশায় থাকেন। এঁদের বিনোদন বলতে তাস। যা এঁদের ভাষায় মস্তিষ্কের বিনোদন। সময় পেলে এঁরা তাস নিয়ে বসে পড়েন। আর তাঁদের মত আরও যাঁরা জেলার বিভিন্ন জায়গায় তাসের নেশায় মশগুল থাকেন তাঁদের জন্য ফি বছর উদ্যোগ নিয়ে প্রতিযোগিতার আয়োজন করেন।
অবসরে জমিয়ে চলছে খেলা |
প্রতি বছরই শীতের সময় গোপীবল্লভপুরের ভট্টগোপালপুর গ্রামে গোলাপ বাবুরা তাসের অক্সান ব্রীজ টুর্নামেন্ট করেন।আর এই বছরের ব্রীজ টুর্নামেন্ট হলো শনিবার সারা রাত ধরে।মোট ৬৪ টি টিমের এই খেলা।খেলার বিজয়ী টিমের জন্য রয়েছে ৩০০০ টাকার নগদ পুরষ্কার।আর রানার টিমের জন্য রয়েছে ২৫০০ টাকার নগদ অর্থ।
(adsbygoogle = window.adsbygoogle || []).push({});
ভট্টগোপালপুর এর এই ব্রীজ টুর্নামেন্টে অংশ নেন গোপীবল্লভপুর ১ এবং ২ নম্বর ব্লকের ব্রীজ খেলায় পারদর্শী ব্যক্তিরা।গোপীবল্লভপুর বাজারের খেলোয়াড়রা যেমন খেলায় অংশ নিয়েছেন তেমন বালিয়া,আসকলা,বাকড়ার মত দুরদুরান্তের মানুষেরা এসেছিলেন খেলা দেখতে । খেলোয়াড়দের রাতের খাবার এবং থাকার জন্য ভট্টগোপালপুর প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ব্যবস্থা করা হয়।
(adsbygoogle = window.adsbygoogle || []).push({});
তাস মুলত অলস ব্যক্তিদের খেলা এবং এটিকে জুয়া খেলা বলেই ধরে গ্রাম বাংলার মানুষ কিন্তু সেই তাস খেলার প্রতি এত আগ্রহ কেন জানতে চাইলে পেশায় শিক্ষক চিত্রেশ্বর সাউ জানান, আমরা বয়স্ক মানুষ সবধরনের খেলা আমরা খেলতে পারবো না।আর প্রতি বছর একবার টুর্নামেন্ট হলে দূরের খেলোয়াড় বন্ধুদের সঙ্গে আবার যোগাযোগ ও হয় এই ব্রীজ খেলার মধ্যে দিয়ে।
(adsbygoogle = window.adsbygoogle || []).push({});
আর গোলাপ বাবু জানান, চিকিৎসা আমার পেশা তবু সময় পেলে ব্রীজ খেলি। তিনি আরও বলেন-আগের বছর এশিয়ান গেমসে দুই বাঙালির ব্রীজে সোনা জয় এই খেলার উপর আরো উদ্বুদ্ধ করে।
শুধুই মস্তিস্ক নয়, এই খেলার নিজস্ব পার্টনার বা সঙ্গীকে নিয়ে বিপরীতে থাকা দুজনকে পরাজিত করতে চোখের ইশারা , হাতের মুদ্রা সহ বিভিন্ন কৌশল ব্যবহার করেন অনেকেই যা কিনা খেলার নিয়ম বিরুদ্ধ। তাই প্রতিযোগিতা চলাকালীন নিজস্ব সঙ্গীদের রাখা হয় পর্দার আড়ালে। পর্দার ওপারে থাকা সঙ্গীকে সাথে নিয়ে চলে প্রতিযোগিতা।