নিউজ ডেস্ক: নন্দীগ্রামের বিরুলিয়ায় ভোট প্রচার চলাকালীন পায়ে আঘাত লাগে মুখ্যমন্ত্রী মমতার৷ চোট লাগে মাথায় এবং কাঁধেও৷ বুকেও ব্যথা রয়েছে মুখ্যমন্ত্রীর৷ তাঁর পায়ের পাতায় হাল্কা চিড়ও ধরা পড়েছে৷ নন্দীগ্রাম থেকেই সরাসরি এসএসকেএম হাসপাতালে নিয়ে এসে ভর্তি করা হয় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে৷
বৃহস্পতিবার মুখ্যমন্ত্রীর একাধিক শারীরিক পরীক্ষা করা হয়৷ নতুন করে তাঁর সিটি স্ক্যানও করা হয়েছে৷ সিটি স্ক্যানে কিছু সমস্যা পাওয়া গিয়েছে৷ মুখ্যমন্ত্রীর গোড়ালি, ঘাড়, কাঁধে চোট রয়েছে৷ এ সবের মধ্যেই এ দিন হাসপাতাল থেকে ভিডিও বার্তা দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী৷ সবাইকে শান্ত থাকার আবেদন করেছিলেন তিনি। শুক্রবার হাসপাতাল থেকে ছুটি পেতে পারেন মুখ্যমন্ত্রী। চিকিৎসকরা চেয়েছিলেন অন্তত ১০ থেকে ১২ দিনের বিশ্রামে থাকুন তিনি। কিন্তু মুখ্যমন্ত্রী চান না শুয়ে থাকতে। হাসপাতালের বিছানায় শুয়েই দলের নির্বাচনী প্রচারের চিন্তায় ছটফট করছিলেন বৃহস্পতিবার দুপুর থেকে। অরূপ বিশ্বাস, ফিরহাদ হাকিম, ডেরেক ও ব্রায়েনের মত যারা তাঁর আশেপাশে ছিলেন দিনভর, বারবার তাদের থেকে খোঁজ নিয়েছেন রাজ্যের কোথাও কোনও অশান্তি হচ্ছে না তো? দলের কর্মীরা শান্ত আছেন তো? আর যখনই ৬ চিকিৎসকের কেউ না কেউ সামনে এসেছেন, তাঁকে ছেড়ে দেওয়া হোক হাসপাতাল থেকে, এই আর্জি জানিয়েছেন বারবার।
এসএসকেএম সূত্রে খবর, এখনও বাঁ পায়ের গোড়ালিতে ব্যথা রয়েছে তৃণমূল নেত্রীর। শরীরে সোডিয়ামের পরিমাণ কম থাকাটাও ভাবাচ্ছে চিকিৎসকদের। এই অবস্থায় সকাল ১১.৩০ নাগাদ আবারও বৈঠকে বসতে চলেছে মেডিক্যাল বোর্ড। সম্ভবত মমতার আর্জি মেনে কিছু নির্দেশ ও কড়া নিয়মে থাকতে হবে এই শর্তের বিনিময়ে বিকেলের দিকে হাসপাতাল থেকে ছুটি মিলতে পারে মমতার।
সূত্র মারফত জানা গিয়েছে, ইতিমধ্যেই ‘দিদি’র প্রচারের জন্য হুইল চেয়ারের ব্যবস্থা করা হচ্ছে। পদযাত্রার পরিবর্তে আপাতত কিছুদিন ‘রোড শো’ করার প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে। তৃণমূল সূত্রে খবর, এই সপ্তাহের শেষেই জেলা সফরে বেরোনোর কথা রয়েছে তৃণমূল নেত্রীর। পূর্ব নির্ধারিত সেই সূচি অনুযায়ী ১৩ মার্চ মুখ্যমন্ত্রী যাবেন পুরুলিয়া, ১৪ মার্চ বাঁকুড়া, ১৫ মার্চ ঝাড়গ্রাম, ১৬ মার্চ পশ্চিম মেদিনীপুর ও ১৭ মার্চ পূর্ব মেদিনীপুরে দলীয় প্রার্থীদের হয়ে প্রচারের কর্মসূচি রয়েছে তাঁর।
যদিও মুখ্যমন্ত্রীর উপর আক্রমণের তত্ত্ব উড়িয়ে দিয়েছে সব বিরোধী দলই। ভোটের আগে জনগণের সহানুভূতি আদায় করার জন্য এই কাণ্ড করা হচ্ছে বলেও জানিয়েছেন কেউ কেউ। তবে তা মানতে নারাজ ঘাসফুল শিবির। কর্মী সমর্থক থেকে শুরু করে শীর্ষ নেতৃত্ব, সকলেই আক্রমণের তত্ত্বকেই জোর দিয়েছেন এবং এর উত্তর বাংলার মানুষ ভোটবাক্সেই দেবে বলেও তারা দাবী করেন।