ওয়েব ডেস্ক : করোনা সংক্রমণের আশঙ্কায় গত মার্চ থেকে বন্ধ স্কুল-কলেজ সহ বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। ছাত্রছাত্রীদের সিলিবাস পিছিয়ে যাওয়ার আশঙ্কায় সরকারের সিদ্ধান্তে গত ২ মাস যাবত স্কুলগুলিতে শুরু হয়েছে অনলাইন ক্লাস। এর জেরে উপকৃত হচ্ছেন পড়ুয়ারা। কিন্তু আমাদের দেশে এমন অনেক পরিবারই রয়েছে যারা দুবেলা দুমুঠো ভাত জোগাড় করতে হিমশিম কেয়ে যান, কিন্তু ছেলেমেয়েদের পড়াশোনা শেখাতে আগ্রহী। সেসব মানুষের পক্ষে স্মার্টফোন কেনা কিংবা ব্যবহার করা অস্বাভাবিক। এর জেরে বহু ছাত্রছাত্রী অনলাইন ক্লাস করতে না পারায় পরীক্ষায় পাশ করতে না পারার আশঙ্কায় ভুগছে। ফলে আত্মঘাতী হচ্ছেন অনেকেই। লকডাউনে এমন বেশ কয়েকটি আত্মহত্যার ঘটনা সামনে এসেছে। মঙ্গলবার ফের একই ঘটনা ঘটলো অসমে। স্মার্টফোনের অভাবে অনলাইন ক্লাস করতে না পেরে হতাশায় আত্মঘাতী হল দশম শ্রেণির ছাত্র। মঙ্গলবার ঘটনাটি ঘটেছে অসমের চিরাং জেলায়।
গত কয়েকদিন আগে হাওড়ার এক ছাত্রীর স্মার্টফোন খারাপ হয়ে যাওয়ায় বেশ কিছুদিন যাবত স্মার্টফোনের অভাবে অনলাইন ক্লাসে যোগ দিতে না পেরে এ ভাবেই আত্মহত্যা করেছিল। চলতি মাসের শুরুতে কেরালার মালাপ্পুরমও একই ঘটনার সাক্ষী থেকেছে। দশম শ্রেণির এক ছাত্রীর বাড়িতে টিভি বা স্মার্টফোন না থাকায় অনলাইন ক্লাস করতে না পেরে আত্মহত্যার সিদ্ধান্ত নেয় সে। বুধবার ফের একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি হওয়ায় স্বাভাবিকভাবে হতবাক অসমের চিরাং জেলার বাসিন্দারা।
পুলিশ সূত্রে খবর, অত্যন্ত নিম্নবিত্ত পরিবারের ছেলে ওই ছাত্র৷ বাবা সামান্য একটি কাজ করতেন, কিন্তু লকডাউনের জেরে সেই কাজ চলে গিয়েছে। কাজের সন্ধানে মা ইতিমধ্যেই বেঙ্গালুরু গিয়েছেন। ফলে দশম শ্রেনীর ওই ছাত্র বাবাকে বললেও তার পক্ষে ছেলের আবদার মেটানো সম্ভব হয়নি। এরপরই চাপা অভিমান ও অনলাইন ক্লাসে পিছিয়ে পড়ার ভয় তার মধ্যে কাজ করতে থাকে। স্থানীয় বাসিন্দাদের সাথে কথা বলে পুলিশের মনে হয়েছে, এই পরিস্থিতিতে স্মার্টপোনের অভাবে স্কুলের পড় ও পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে না পেরে তীব্র হতাশাতেই আত্মহত্যার সিদ্ধান্ত নেয় ওই কিশোর।
প্রসঙ্গত, লকডাউন চালু হওয়ার পর পরই সরকারের তরফে বিভিন্ন স্কুল-কলেজে অনলাইন ক্লাসের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়৷ সে অনুযায়ী স্কুল-কলেজগুলিতে শুরু হয়ে গিয়েছে অনলাইন ক্লাস। কিন্তু সরকারের এই সিদ্ধান্তে অসুবিধায় পড়েছে গ্রামের ছাত্রছাত্রীরা৷ গ্রামের বেশীরভাগ মানুষই গরীব, স্মার্টফোন নেই। ফলে ছাত্রছাত্রীরা অনলাইন ক্লাসের সুবিধা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। ফলে মানসিক অবসাদের জেরেই একে একে পড়ুয়াদের আত্মহত্যার ঘটনা ঘটে চলেছে।